দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ মানুষজন দেহের বাড়তি মেদ নিয়ে চিন্তায় থাকেন যে, ওজন বাড়িয়ে তোলার কথা জনসমক্ষে বলতেও কুণ্ঠা বোধ করেন না। তবে ওজন বাড়াতে না পারাও গুরুতর একটি সমস্যা।
পুষ্টিবিদেরা বলেছেন, ওজন বাড়াতে চাইলে শুধু খাবার খেলেই চলবে না। নিয়ম মেনে খেতে হবে। সঙ্গে কী কী মেনে চলতে হবে?
অল্প পরিমাণে তবে বার বার খেতে হবে
অনেকেই মনে করেন যে, সারা দিনে ৩ বার পরিমাণে অনেকটা করে খেয়ে নিলে বোধ হয় চড়চড় করে ওজন বেড়ে যাবে। এমন ধারণাটি ভিত্তিহীন। পুষ্টিবিদরা বলেছেন, উল্টে সারা দিনে অল্প অল্প করে ৫ থেকে ৬ বার খাবার খেলে তা বিপাকহারের গতি কিছুটা হলেও শ্লথ করতে পারে।
খিদে বাড়িয়ে তোলে এমন খাবার খেতে হবে
বেশ কিছু মশলা রয়েছে, যেগুলো খাবারের তালিকায় যোগ করা হলে খিদে বাড়ে। আদা, রসুন, দারচিনি এবং গোলমরিচের মতো মশলাগুলো পিত্তরস-সহ বেশ কিছু উৎসেচকের ক্ষরণ বাড়িয়ে তুলতেও সাহায্য করে।
পুষ্টিকর খাবার খেতে হবে
ওজন বাড়াতে হলে শুধুমাত্র ক্যালোরিযুক্ত খাবার খেলে হবে না। সঙ্গে পর্যাপ্ত পরিমাণ প্রোটিন, ভিটামিন, খনিজ ও বিভিন্ন মাইক্রোনিউট্রিয়েন্ট রয়েছে এমন খাবারও ডায়েটে রাখতে হবে। সঙ্গে স্বাস্থ্যকর ফ্যাট, ওমেগা-৩ রয়েছে এমন খাবার যেমন- বাদাম, বীজ রাখাটাও জরুরি।
নিয়মিত শরীরচর্চা করা
দেহের অতিরিক্ত মেদ ঝরাতে গিয়ে যেমন শরীরচর্চা করতে হয়, ঠিক তেমনি ওজন বাড়িয়ে তোলার জন্যও রয়েছে নির্দিষ্ট কিছু ব্যায়াম। হজমে সহায়ক, রক্ত সঞ্চালন বাড়িয়ে তোলে এমন কিছু শরীরচর্চা নিয়মিত অভ্যাস করাটা জরুরি।
মানসিক চাপ নিয়ন্ত্রণ করা
ওজন বাড়িয়ে তুলতে হলে পুরোপুরি মানসিক চাপ মুক্ত থাকতে হবে। চিকিৎসকরা বলেন, মানসিক চাপ, উদ্বেগ, আতঙ্কের সঙ্গে অস্বাস্থ্যকর খাদ্যাভাসের যোগও রয়েছে। যা ওজন বাড়িয়ে তোলার পথে বাধাও হয়ে দাঁড়াতে পারে। তাই নিয়মিত ধ্যান, ডিপ ব্রিদিংয়ের মাধ্যমে মানসিক চাপ নিয়ন্ত্রণে রাখার কৌশলও আয়ত্ত করতে জানতে হবে। তবেই ওজন বাড়ে সহায়ক হবে। তথ্যসূত্র: আনন্দবাজার পত্রিকা।
>>>>>>>>>>>>>>
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org