দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ অনেকের দেখা যায় রাতে খাবারের পরও মাঝরাতে খিদে পায়। এই মাঝরাতে খিদে পাওয়ার প্রবণতাকে ‘নাইট ইটিং সিনড্রোম’ (এনইএস) বলা হয়ে থাকে। ১০০ জনের মধ্যে ১ জন এই সমস্যাটিতে ভুগে থাকেন। তাহলে এই রোগের উপসর্গ কী? তাছাড়া এটি কোন রোগের ঝুঁকি বাড়তে পারে?
রাতে পেট ভরে খাওয়ার পরেও অনেকের মাঝরাতে আবারও খিদে পেয়ে যায়। অনেক সময় অনিদ্রার সমস্যায় ভুগলেও রাতে বেশি খিদে পেতে পারে। মাঝরাতে খিদে পাওয়ার এই প্রবণতাকে আপনি হালকাভাবে নিচ্ছেন? তবে চিকিৎসকরা বলছেন, এটি আসলে এক ধরনের শারীরিক সমস্যা। চিকিৎসার পরিভাষায় যার নাম ‘নাইট ইটিং সিনড্রোম’(এনইএস)। প্রায় ১০০ জনের মধ্যে ১ জন এই সমস্যাটিতে ভুগে থাকেন। এক সময় এই রোগের হাত ধরে স্থূলতা, ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ ও বিভিন্ন দীর্ঘস্থায়ী অসুখ বাসা বাঁধতে পারে শরীরে। ‘এনইএস’ থাকার কারণে ওজন কমানোও বেশ কঠিন হয়ে পড়ে। বেশি ওজন, দিনে কম ক্যালোরি যুক্ত খাবার খাওয়া কিংবা পরিবারে কারও এই সমস্যা থাকলে ‘এনইএস’ তে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কাও থেকে যায়।
‘এনইএস’-এর লক্ষণগুলো আসলে কী কী?
# প্রতি মাঝরাতেই খিদে পাবে এমন নয়। তবে সপ্তাহে দু’-তিন দিন এমন হতেই পারে।
# রাতের খাবার খাওয়া ও ঘুমোনো পর্যন্ত বারেবারেও খিদে পেতে পারে।
# দীর্ঘদিন ধরেই অনিদ্রার সমস্যা।
# সকালে উঠেই খিদে কমে যাওয়া।
এই সমস্যা কীভাবে নিয়ন্ত্রণে রাখবেন?
রাত জেগে থাকার কারণে খিদে পাওয়ার প্রবণতা বেশি সৃষ্টি হয়। কোনও বিষয় নিয়ে অত্যধিক চিন্তা, মানসিক উদ্বেগ ঘুম না আসার অন্যতম কারণ হতে পারে। রাতে ঘুমোনোর পূর্বে মন শান্ত করতে কিছুক্ষণ ধ্যানে বসুন। এতে মন এবং মস্তিষ্ক দুই-ই শান্ত থাকবে। রাতে দীর্ঘক্ষণ মোবাইলে সিনেমা বা ওয়েব সিরিজ় দেখলেও ঘুমে ব্যাঘাত ঘটতে পারে। চেষ্টা করুন ঘুমোনোর ঘণ্টাখানেক আগে থেকেই মোবাইল থেকে অনেকটা দূরে থাকার। ঘুম না আসার সমস্যাও তাহলে নিয়ন্ত্রণে থাকবে। এতে মাঝরাতে ঘুম ভেঙে হঠাৎ খিদে পাওয়া থেকেও মুক্তি পেতে পারেন। তবে মনে রাখবেন এক দিনেই এই অনিদ্রার সমস্যা কাটবে না। মাঝরাতে খিদে পেলেও স্বাস্থ্যকর কিছু বিকল্প হাতের কাছে রাখতে হবে। গ্রিক ইয়োগার্ট, বাদাম, মাখানা, আখরোট, ভুট্টা এইসব খাবার খেতে পারেন রাতে খিদে পেলে। ভুলেও মিষ্টিজাতীয় কোনো খাবার, চিপ্স, কোল্ড ড্রিঙ্ক, প্রক্রিয়াজাত খাবার একেবারেই খাবেন না কখনও। তথ্যসূত্র: আনন্দবাজার পত্রিকা।
>>>>>>>>>>>>>>
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org