দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ বেগুন, আলু ও টোম্যাটো- এই তিন সব্জি বাঙালিদের খুব জনপ্রিয়। তবে পেটের সমস্যা হলেই এগুলো আর পাতে রাখতে চান না অনেকেই। এই ধারণা কী আদৌ সত্যি?
ভোজনরসিক বাঙালির পেটের গোলমাল লেগেই থাকে। বর্ষায় যেনো এই সমস্যা আরও বেশি দেখা যায়। তবে অনেকেই সারা বছরই পেটের সমস্যায় নাজেহাল হয়ে পড়েন। পেটের সমস্যায় যারা বছরভর ভোগেন, তারা কিছু সব্জি রয়েছে যেগুলো এড়িয়ে চলেন। বেগুন, আলু ও টোম্যাটো- এই তিনটি সব্জি বাঙালির কাছে সব সময়ই জনপ্রিয়। তবে পেটের সমস্যা হলেই এগুলো আর পাতে রাখতে চান না অনেকেই। এই তিন সব্জিতে এমন কিছু উপাদান রয়েছে- যেগুলো পেটের সংক্রমণের জন্য দায়ী- সেটি হয়তো ঠিক। তবে তার মানে এই নয় যে, খেলেই বিপদ ঘটবে। অবশ্য অনেকেই তেমনটিই মনে করেন। এই তিনটি সব্জি কী সত্যিই পেটের স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর? আজ জেনে নিন সেই বিষয়টি।
আলু
আলুতে থাকে সোলানাইন। এই রাসায়নিক উপাদান শরীরে প্রবেশ করলে সংক্রমণের ঝুঁকিও থেকে যায়। এই কথা কিন্তু ভুল নয়। সোলানিন বিশেষ করে পেটের সংক্রমণের জন্যই দায়ী। যে কারণে ডায়েরিয়া, বমির মতো সমস্যাও শুরু হয়ে যেতে পারে। অনেকের বিশ্বাস যে, আলু মাত্রই তাতে সোলানিন থাকে। এই ধারণাটি একেবারেই ভুল। সাদা শিস ওঠা ও কয়েক জায়গায় সবুজের আভা রয়েছে, সাধারণত এমন আলুতে সোলানাইন নামক রাসায়নিক উপাদান থাকে। যেগুলো ক্যান্সারের মতো মারণরোগের জন্মও দিতে পারে। সেই ঝুঁকি এড়াতে এমন বৈশিষ্ট্যযুক্ত আলু না খাওয়াই উত্তম। আলু কেনার পূর্বে দেখে নিন, তাতে সবুজের আভা ও শিস রয়েছে কি না। থাকলে সেই আলু কিনবেন না।
বেগুন
সাধারণত পাকা বেগুনে সোলানাইন থাকে। তবে তার পরিমাণ অনেকটা কম। রান্না করার পর এই সোলানাইনের মাত্রা আরও কমে যায়। সাধারণ যে পরিমাণ সোলানাইন বেগুনে থাকে, সেদ্ধ বা ভাজার পর তার অধিকাংশই নষ্ট হয়ে যায়। যে কারণে, রান্নার পর বেগুন খেলেও অসুস্থতার কোনো ঝুঁকি থাকে না।
টোম্যাটো
টোম্যাটোতে থাকা টোম্যাটাইন হজমের গোলমাল ঘটাতে পারে। তাই অনেকেই পেটের গোলমালের ঝুঁকি এড়াতে টোম্যাটোই খান না। তবে অনেকেই হয়তো জানেন না যে, টোম্যাটোতে টোম্যাটাইন নামক রাসায়নিক উপাদানের পরিমাণ অনেক কম। শরীরে এই পরিমাণ টোম্যাটাইন গেলে তা কোনও সমস্যার সৃষ্টি করবেই না। বরং টোম্যাটোতে থাকা ভিটামিন সি ও পটাশিয়াম শরীরের আরও যত্ন নেয়। তথ্যসূত্র: আনন্দবাজার পত্রিকা।
>>>>>>>>>>>>>>
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org