দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ প্যারালাইজড বা পক্ষাঘাতগ্রস্ত হলে অনেকেই কথা বলার ক্ষমতা হারিয়ে ফেলেন। তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করার কোনো উপায়ও থাকে না। তবে এবার কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার সহায়তায় পক্ষাঘাতগ্রস্তরা কথা বলবেন।
পক্ষাঘাতগ্রস্তদের সঙ্গে যোগাযোগ করার ডিভাইস নিয়ে বহুদিন ধরে চালু রয়েছে পরীক্ষা-নিরীক্ষা। সম্প্রতি কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা আমাদের একটি সমাধানও দেখিয়েছে। মানুষের মস্তিষ্কে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার চিপ ইমপ্ল্যান্ট করার মাধ্যমে খুব সহজেই তাদের কথা বলার সুযোগও করে দেওয়া যাবে।
সম্প্রতি পক্ষাঘাতগ্রস্ত দুই নারীর ওপর এমন একটি চিপ দিয়ে পরীক্ষা করা হলে তা সফল হয়েছে। এদের মধ্যে একজন এমিওট্রোফিক লেটারাল স্কেলেরোসিস বা এএলএসে আক্রান্ত ছিলেন। অপরজনের মস্তিষ্কের শেকড়ে ছিল আঘাত। তাদের উচ্চারণে সমস্যা থাকলেও তারা কিভাবে শব্দ উচ্চারণ করতে হয় তা ভালোভাবেই মনে রেখেছিলেন। মুখভঙ্গির সঙ্গে নিউরনের কার্যক্রিয়ার সমন্বয় যাচাই করার মাধ্যমে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা সংবলিত চিপটি মিনিটে ৬০-৭৮টি শব্দ শনাক্ত করতে সক্ষম। অতীতের যে কোনো যন্ত্রের তুলনায় এবারের সফলতার হার দ্রুত এবং আরও নিখুঁত।
সম্প্রতি ন্যাচার জার্নালে দুটো পৃথক পেপারে এই দুটো পরীক্ষার সংবাদ পাওয়া যায়। স্ট্যানফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের নিউরাল প্রস্থেটিক ট্রান্সন্যাশনাল ল্যাবরেটরির অধ্যাপক ফ্র্যাংক উইলেট জানিয়েছেন, ‘ভবিষ্যতে এমনিভাবে কেও পক্ষাঘাতগ্রস্ত হলেও নিজের মনের ভাব খুব সহজেই প্রকাশ করতে পারবেন। তাদের মনের ভাব প্রকাশ করার জন্য বড় প্রতিবন্ধকতা দূর হবে।’
সচরাচর একজন সুস্থ এবং স্বাভাবিক ব্যক্তি ইংরেজিতে প্রতি মিনিটে ১৬০টি শব্দ উচ্চারণ করতে পারেন। সেই হিসেবে এই কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা এখনও কিছুটা ঘাটতির মধ্যে রয়েছে। তারপরও চিকিৎসাবিজ্ঞানের জন্য এটি একটি বড় অগ্রগতি হিসেবেই দেখা হচ্ছে। নতুন এই কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা সংবলিত যন্ত্রটির নাম দেওয়া হয়েছে ব্রেইন-কম্পিউটার ইন্টারফেস কিংবা বিসিআই। বিসিআই মস্তিষ্ক থেকে নিউরন সিগন্যাল সংগ্রহ করার পর এক্সটার্নাল একটি ডিভাইসে কমান্ড প্রেরণ করে এটি। এই সিস্টেমের ব্যবহারে রোবটিক হাত কিংবা যন্ত্রাংশ ব্যবহার করার সুযোগও বাড়বে।
>>>>>>>>>>>>>>
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org