দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলার লক্ষ্যে করণীয় উদ্যোগ নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করতে দেশে এই প্রথমবারের মতো গ্রেট টক সেশন আয়োজন করেছে ব্রিটিশ কাউন্সিল। জলবায়ু পরিবর্তন নিয়ে আয়োজিত এই সেশন একটি সিরিজের অংশ যা গত ২৪ আগস্টে ভারতে শুরু হয়ে ৩১ আগস্ট বাংলাদেশে শেষ হয়েছে।
প্রযুক্তি, শিল্পকলা, চলচ্চিত্র, বিজ্ঞান, বিজ্ঞান যোগাযোগ কর্মকর্তা, পরিবেশ, ডিজাইন এবং সৃজনশীল খাত, ক্রীড়া, মহাকাশ ও রাজনীতিসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে যুক্তরাজ্যে কর্মরত পেশাদারদের নিয়ে আয়োজিত লেকচার সিরিজ হলো গ্রেট টকস। যুক্তরাজ্যকে ভ্রমণ, অধ্যয়ন ও ব্যবসার জন্য একটি চমৎকার জায়গা হিসাবে আন্তর্জাতিকভাবে প্রচার করা ব্রিটিশ সরকারের উদ্যোগ গ্রেট ক্যাম্পেইনেরই অংশ এই গ্রেট টকস। গ্রেট টকস – এর সেশনগুলো ঢাকার নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটি এবং ব্রিটিশ কাউন্সিল মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত হয়।
এই অনুষ্ঠানে বক্তা হিসেবে ছিলেন অ্যাঙলিয়া রাস্কিন ইউনিভার্সিটির এডুকেশন ফর সাসটেইনেবিলিটি’র পরিচালক অধ্যাপক অ্যালিসন গ্রেইগ। অ্যাঙলিয়া রাস্কিন ইউনিভার্সিটির (এআরইউ) গ্লোবাল সাসটেইনেবিলিটি ইনস্টিটিউটে এডুকেশন ফর সাসটেইনেবিলিটি (ইএফএস) গবেষণার নেতৃত্ব দেন অ্যালিসন।
শিক্ষার মাধ্যমে কিভাবে তরুণ প্রজন্মকে আরও টেকসই ভবিষ্যৎ বিকাশের জন্য প্রস্তুত করা যায় তা নিয়ে কাজ করে এই উদ্যোগটি। একই সঙ্গে, তিনি ফেলো অব দ্য হায়ার এডুকেশন অ্যাকাডেমির (বর্তমানে অ্যাডভান্সএইচই নামে পরিচিত) প্রিন্সিপাল ফেলো এবং শেখা ও শিক্ষাদানের ক্ষেত্রে একজন অগ্রণী ব্যক্তিত্ব হিসেবে সর্বোচ্চ পিয়ার-রিভিউড ইন্ডিকেটরে ২০১৯ সালে ন্যাশনাল টিচিং ফেলোশিপ লাভ করেন।
বিভিন্ন কর্মশালা, সম্মেলন এবং সেশনে অ্যাকাডেমিক এবং পেশাদার ব্যক্তিত্বদের সামনে তিনি নিয়মিত তার কাজ উপস্থাপন করেন।
ঢাকায় গ্রেট টকস চলাকালীন তিনি জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব, কী করা যেতে পারে, কীভাবে করা যেতে পারে ও তরুণ প্রজন্ম, বিশেষ করে, যারা সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত, তাদের পরবর্তী সময়ে বিশ্বকে পরিচালনা করতে প্রস্তুত করার উপায়গুলোর ওপর জোর দেন। বর্তমানে যখন দক্ষিণ এশিয়ায় রেকর্ড-ব্রেকিং তাপমাত্রা দেখা যাচ্ছে এবং জলবায়ু সঙ্কটের কারণে বাংলাদেশ এই অঞ্চলের সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্থ দেশগুলোর একটি; এ সময় জলবায়ু সঙ্কট মোকাবিলা আমাদের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে। সেশন চলাকালীন, জলবায়ু সঙ্কট সম্পর্কে অংশগ্রহণকারীদের প্রশ্নের উত্তর দেওয়ার পাশাপাশি এই সঙ্কট সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধি এবং সর্বোত্তম উপায়ে এগিয়ে যেতে সবাইকে অনুপ্রাণিত এবং উৎসাহিত করেন অ্যালিসন।
অনুষ্ঠানে অধ্যাপক অ্যালিসন গ্রেইগ বলেন, “বাংলাদেশে আমার যাদের সাথে দেখা হয়েছে, তারা সবাই জলবায়ু পরিবর্তনকে গুরুত্ব দিয়েই বিবেচনা করেন। আমার বক্তব্য দেওয়ার উদ্দেশ্য ছিল তরুণদের মনে এই নিয়ে আগ্রহের বীজ বপন করা এবং শিক্ষা ও ক্যারিয়ারের মাধ্যমে একটি টেকসই বিশ্ব বিনির্মাণে তারা কীভাবে অবদান রাখতে পারে এ ব্যাপারে তাদের ভাবতে সহায়তা করা।”
ব্রিটিশ কাউন্সিলের কালচারাল এনগেজমেন্ট ডিরেক্টর বাংলাদেশ ডেভিড নক্স বলেন, “গ্রেট টকসে অংশগ্রহণ করার জন্য বাংলাদেশে এসেছেন অধ্যাপক অ্যালিসন গ্রেইগ। এখানে তাকে স্বাগত জানাতে পেরেই আমরা আনন্দিত। তিনি তার বক্তব্যে জলবায়ু সঙ্কট নিয়ে অংশগ্রহণকারীদের ভিন্নভাবে ভাবার চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়েছেন। তিনি অবশ্যই আমাকে নতুন দৃষ্টিভঙ্গি হতে প্রশ্নগুলো ভেবে দেখতে উৎসাহিত করেছেন।
আমি মনে করি, এই বিষয়টি আমাদের সবাইকে নতুনভাবে এই প্রশ্নগুলোর উত্তর খুঁজে পেতে অনুপ্রাণিত করবে। ক্লাইমেটে কানেকশনসে অবদান রাখার মাধ্যমে জলবায়ু নিয়ে সচেতনতা তৈরিতে আমরা বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে ধারাবাহিকভাবে আলোচনা চালিয়ে যেতে প্রত্যাশী।”
অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন শিক্ষার্থী, শিক্ষাবিদ এবং গবেষক, উচ্চ পর্যায়ের সরকারি কর্মকর্তা, এনজিও ও বেসরকারি সংস্থার প্রতিনিধিরা। খবর সংবাদ বিজ্ঞপ্তির।
>>>>>>>>>>>>>>
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org