দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ ফ্লাইটে যাতায়াত করতে হলে ফোনটিকে পুরো সুইস অফ করতে হয়, না হলে এয়ারপ্লেন মোড মোড করতে হয়। প্রায় সবাই সেটি করেও দেন। তবে ফোন ফ্লাইট মোড না করায় বিমান থেকে নামিয়ে দেওয়া হয়েছে জনৈক প্যাসেঞ্জারকে!
বিমানের ফ্লাইটে ওঠার আগে আপনার সমস্ত ইলেকট্রনিক ডিভাইস বন্ধ করতে হয় বা এয়ারপ্লেন মোডে রাখতে হয়। তবে অনেকেই এয়ারপ্লেন মোড অন করতে অস্বীকারও করেন। এমনকি টেক অফের পরেও ফোনে কথা বলতে থাকেন অনেকেই। তবে এটা একেবারেই ভুল। তবে কেনো ফ্লাইটে এয়ারপ্লেন মোড প্রয়োজন হয়? এই উত্তর অনেকের কাছে আজানা। তাই চলুন জেনে নেওয়া যাক এই বিষয়টি।
বিমানে ওঠার পর, কেবিন ক্রু যাত্রীদের তাদের ফোন বন্ধ করতে কিংবা বিমান মোডে রাখতে বলেন, তবে কিছু মানুষ এতে রাজিই হয় না। এমন বেশ কিছু ঘটনাও এর আগে সামনে উঠে এসেছে, যাতে যাত্রীরা প্লেনে ফোন অফ করতে বা এয়ারপ্লেন মোড করতে অস্বীকার করেছেন। এমনই আরেকটি ঘটনা সামনে উঠে এসেছে। একজন যাত্রী এয়ারপ্লেন মোডে রাখবেন না বলে জানান ও ফোনে কথা বলতেও শুরু করেন। তারপর পাইলট বিমানটিকে আবার জরুরি অবতরণ করার পর তাকে বাইরে যেতে বলেন।
এক খবরে বলা হয়, ৪৫ বছর বয়সী সুরঞ্জিত দাস চৌধুরী অ্যালায়েন্স এয়ারে কোলকাতা যাওয়ার জন্য ফ্লাইটে উঠেছিলেন। যখন ফ্লাইটটি টেক অফের জন্য প্রস্তুত হচ্ছিল, তখন তিনি তার ফোনটিকে ফ্লাইট মোডে রাখতে অস্বীকার করে বসেন। তার এই ব্যবহার নিরাপত্তা প্রটোকল লঙ্ঘন বলে মনে হয়। সেখানে থাকা ১০ জন ফ্লাইটে জানিয়েছিলেন, তারা সুরঞ্জিত দাস চৌধুরীর সঙ্গে ভ্রমণই করবেন না। ততোক্ষণে ফ্লাইটটি টেক অফ হয়ে গিয়েছে। তবে পাইলট আবারও ফ্লাইটটি অবতরণ করেন। এরপর ওই যাত্রীকে বের করে আনা যায়। নামার সঙ্গে সঙ্গেই ওই ব্যক্তিকে পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হয়। যদিও তার বিরুদ্ধে কোনও অভিযোগ দায়ের করা হয়নি। তবে তাকে আর কোনও ফ্লাইট না দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় সংস্থাটি। বাড়ি ফিরে যেতে বলা হয়েছে তাকে।
ফ্লাইট মোড কেনো চালু করা উচিত?
ফ্লাইট মোড কেনো চালু করা উচিত? সেটি অনেকের কাছেই অজানা। কারণ ফোন থেকে আসা সিগন্যাল বিমানের ইলেকট্রনিক সিস্টেমটিকে একেবারে খারাপও করে দিতে পারে। এতে বিমানের নিয়ন্ত্রণে সমস্যাও হতে পারে। এমন কি দুর্ঘটনাও ঘটতে পারে। তাই টেক অফ হওয়ার পূর্বেই সবাইকে বলা হয়, ফোন সুইচ অফ করতে বা এয়ারপ্লেন মোড অন করার জন্য। তাই পরের বার আপনি যখনই ফ্লাইটে উঠবেন, অবশ্যই আপনার ফোনটিকে এয়ারপ্লেন মোডে রাখতে কখনও ভুলবেন না।
>>>>>>>>>>>>>>
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org