দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ হজমের সমস্যা আজকাল প্রায় সকলের দেখা যায়। ঘন ঘন গ্যাসের ওষুধ খাওয়ার অভ্যাস নানা ক্রনিক অসুখও ডেকে আনতে পারে। তাই ওষুধ-নির্ভর না হয়ে স্বাভাবিক উপায়ে হজমশক্তি বৃদ্ধির উপর নজর দিতেই হবে। এই ক্ষেত্রে প্রতিদিন সকালে কয়েকটি যোগাসনের উপর ভরসা রাখতে পারেন। জেনে নিন কোন সে যোগাসন।
বছরজুড়ে হজমের সমস্যায় ভোগেন এমন বাঙালির সংখ্যা নেহায়েত কম নয়। কখনও একটু বেশি খেয়ে ফেললে বা তেল-মশলার পরিমাণ সামান্য এ দিক-ও দিক হলেই হজমের সমস্যায় পড়তে হয় অনেককে।
চিকিৎসকদের মতে, খুব বেশি ওষুধ নির্ভর হয়ে পড়লে একটা সময় ওষুধ ছাড়া হজম করা মুশকিল হয়ে পড়বে। তা ছাড়াও ঘন ঘন গ্যাসের ওষুধ নানা ক্রনিক অসুখও ডেকে আনতে পারে। তাই ওষুধ-নির্ভর না হয়ে স্বাভাবিক উপায়ে হজমশক্তি বৃদ্ধির উপরেই নজর দিতে হবে। এই ক্ষেত্রে যোগাসনের উপরে ভরসা রাখতে পারেন। কোন যোগাসন হজমে সাহায্য করে সেটি জেনে নিন।
দণ্ডায়মান ধনুরাসন
প্রথমেই সোজা হয়ে দাঁড়িয়ে একটি হাত সোজা করে উপরের দিকে তুলুন। এরপর বিপরীত দিকের পা পিছনের দিকে উপরে তুলুন। এবার সেই দিকে হাত দিয়ে পায়ের পাতা স্পর্শ করুন। এখন ধীরে ধীরে ঘড়ির কাঁটার মতো উপরের হাতটি নামিয়ে আনুন এবং একই সরল রেখায় পা ভাঁজ করে উপরের দিকে তুলুন। কিছুক্ষণ এই ভঙ্গিতে থাকার পরই ধীরে ধীরে স্বাভাবিক অবস্থায় আসুন। নিয়ম করে এই আসনটি করলে হজমের সমস্যা দূর হবে খুব তাড়াতাড়ি।
ধনুরাসন
প্রথমেই পেট উপুড় করে শুয়ে পড়ুন। এরপর হাঁটু ভাঁজ করে পায়ের পাতা যতোটা সম্ভব পিঠের উপরে নিয়ে আসুন। এখন হাত দুটো পিছনে নিয়ে গিয়ে গোড়ালির উপর শক্তভাবে চেপে ধরুন। চেষ্টা করুন পা দুটো মাথার খুব কাছাকাছি নিয়ে আসার জন্য। এই রকম ভঙ্গিতে মেঝে থেকে বুক, হাঁটু এবং উরু উঠে আসবে। তলপেট এবং পেট মেঝেতে রেখে উপরের দিকে তাকাতে হবে। এই ভঙ্গিতে স্বাভাবিক শ্বাস-প্রশ্বাস নিয়ে ২০ হতে ৩০ সেকেন্ড থাকুন। এরপর আবার পূর্বের ভঙ্গিতে ফিরে যান। এই আসনটি বার তিনেক করতে পারেন।
ভুজঙ্গাসন
প্রথমেই মেঝেতে উপুড় হয়ে শুয়ে পড়ুন। এখন হাতের তালু মেঝের উপরে ভর দিয়ে পাঁজরের ঠিক দুই পাশে রাখুন। তারপর কোমর থেকে পা পর্যন্ত মাটিতে রেখে তারপর হাতের তালুর উপর ভর দিয়ে বাকি শরীরটা ধীরে ধীরে উপরের দিকে তুলতে হবে। তারপর মাথা বেঁকিয়ে উপরের দিকে তাকাতে হবে। এই ভঙ্গিতে ২০ থেকে ৩০ সেকেন্ড থাকার পর পূর্বের অবস্থায় ফিরে যেতে হবে। প্রথম দিকে এই আসন অন্তত তিন বার করুন। পরবর্তী সময় ৫-৬ বারও এটি করতে পারেন ইচ্ছে করলে। তবে এতে আপনি উপকার পাবেন। তথ্যসূত্র: আনন্দবাজার পত্রিকা।
>>>>>>>>>>>>>>
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org