দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ ভারত ও কানাডার মধ্যে চলমান টানাপোড়েনের মধ্যেই এবার ভারতের পক্ষে থাকার কথা বলেছেন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষা সদর দপ্তর পেন্টাগনের সাবেক কর্মকর্তা মাইকেল রুবিন।
তিনি মনে করেন যে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে যদি কানাডা এবং ভারতের মধ্যে যে কোনো একটিকে বেছে নিতে বলা হয়, তাহলে ওয়াশিংটন নিশ্চিতভাবেই দিল্লিকে বেছে নেবে। এক প্রতিবেদনে এমনটি জানিয়েছে ভারতীয় বার্তা সংস্থা এএনআই।
সাবেক এই কর্মকর্তা আরও বলেছেন, কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো ভারতের বিপক্ষে যে অভিযোগগুলো করেছেন, সেটি দিল্লির চেয়ে অটোয়াকেই আরও বেশি বিপদে ফেলতে পারে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের জন্য কানাডার চেয়ে ভারতের কৌশলগত গুরুত্বই বেশি। কানাডা ভারতের বিরুদ্ধে যে ধরনের লড়াইয়ে মেতেছে, তা হাতির বিরুদ্ধে পিঁপড়ার লড়াইয়ের শামিল বলেও উল্লেখ করেছেন তিনি।
ভারতের পাঞ্জাব রাজ্যের জলন্ধর হতে ১৯৭৭ সালে কানাডায় গিয়েছিলেন হরদীপ সিং নিজ্জর। পরে সেখানকার নাগরিকত্ব অর্জন করেন।
৪৫ বছর বয়সী হরদীপ সিং নিজ্জর ভারতের খালিস্তানপন্থী বিচ্ছিন্নতাবাদী গোষ্ঠী খালিস্তান টাইগার ফোর্স ও শিখস ফর জাস্টিস কানাডা শাখার শীর্ষ নেতাও ছিলেন। গত ১৮ জুন দেশটির ব্রিটিশ কলাম্বিয়া প্রদেশের রাজধানী ভ্যানকুভারের একটি গুরুদুয়ারার সামনে আঁততায়ীর হাতে নিহত হন তিনি।
তারপর ওইদিনই কানাডার পার্লামেন্টে দেশটির প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডোর এক বক্তব্যের পর অটোয়া এবং দিল্লির মধ্যে কূটনৈতিক টানাপোড়েন শুরু হয়।
দুই দেশের এই সাম্প্রতিক টানাপোড়েনে অস্বস্তিতে পড়েছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। কারণ হলো, উন্নত বিশ্বের যেসব দেশ আন্তর্জাতিক রাজনীতিতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সবচেয়ে ঘণিষ্ট মিত্র, তাদের মধ্যে কানাডা হলো অন্যতম। অপরদিকে দক্ষিণ এশিয়া অঞ্চলে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ মিত্র এবং কৌশলগত অংশীদার হলো ভারত।
>>>>>>>>>>>>>>
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org