দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ ইন্টারনেট ঘেঁটে নিজেই তৈরি করেছেন ডায়েট চার্ট। তবে শরীর কিংবা খাবারের পুষ্টিগুণ সম্পর্কে তেমন ধারণা নেই। যে কারণে এতোকিছুর পরও কয়েকটি ভুলের কারণে মেদ ঝরছে না: এখন কী করবেন?
অনেকেই মেদ ঝরাতে পরিশ্রমের কোনো ঘাটতিই রাখেন না। ট্রে়ডমিলে দৌড়, সাইক্লিং, ওয়েট ট্রেনিং, আরও কতো কিছুই না করেন! তবে সময়ের অভাবে যারা খুব একটা বেশি শরীরচর্চা করতে পারেন না, তাদের অস্ত্র হলো খাবারে কোপ বসানো। অনেকেই মনে করেন যে, জিম কিংবা যোগাসন করতে পারছেন না মানেই বেশি ক্যালোরি কিংবা ফ্যাটজাতীয় খাবার খাওয়া বন্ধ করে দিতে হবে। তা হলেই বোধ হয় অতিরিক্ত মেদের পরিমাণ কমে যাবে। তবে পুষ্টিবিদরা কিন্তু সে কথা বলছেন না। সঠিক ধারণা না থাকার কারণে এমন কিছু ভুল আমরা করে ফেলি, যে কারণে মেদ ঝরার বদলে উল্টোটা হওয়ার সম্ভাবনাই থাকে বেশি।
কোনও এক বেলার খাবার না খাওয়া
আপনি শরীরচর্চা করতেই পারছেন না। খুব একটা কায়িক পরিশ্রমও করতে হয় না আপনাকে। অতএব শরীরের বাড়তি ক্যালোরি পোড়ানোর কোনই অবকাশ নেই। তাই খাবারের মাধ্যমে ক্যালোরির পরিমাণ যাতে করে শরীরে কম প্রবেশ করে, তাই কোনও এক বেলা খাবার অনেকেই খান না। এই অভ্যাসে অনেক সময় হিতে বিপরীতই হয়।
ফ্যাটজাতীয় খাবার বাদ দেওয়া
ফ্যাট কিংবা স্নেহজাতীয় খাবার খেলেই গায়ে মেদ লেগে যেতে পারে- অনেকেরই এমন ধারণা রয়েছে। যা খানিকটা সত্যি হলেও, তবে পুরোটা সত্যি নয়। বিভিন্ন প্রকার বাদাম, বীজ কিংবা কিছু ফলের মধ্যে যেসব আনস্যাচুরেটেড ফ্যাট থাকে, সেগুলো হার্টের জন্য ভালো। রক্তে খারাপ কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে এইসব আনস্যাচুরেটেড ফ্যাট। সুতরাং সব ফ্যাটই খারাপ নয়। তবে ট্রান্স ফ্যাট রয়েছে যেসব খাবার, তা এড়িয়ে চলায় ভালো।
প্রাণিজ প্রোটিনের পরিপূরক উদ্ভিজ্জ প্রোটিন
প্রাণিজ প্রোটিন ও উদ্ভিজ্জ প্রোটিনের পুষ্টিগত ফারাক খুব বেশি নেই বলে মনে করেন অনেকেই। তবে পুষ্টিবিদরা তেমনটি বলছেন না। ডিম, মাছ, মাংসের মতো প্রাণিজ খাবার হলো সামগ্রিক প্রোটিন। যারমধ্যে বেশ কয়েকটি অ্যামাইনো অ্যাসিড রয়েছে। তবে উদ্ভিজ্জ প্রোটিন যেমন ডাল, বাদাম, সয়া বা টোফু- কোনওভাবেই প্রাণিজ প্রোটিনের পরিপূরক হতেই পারে না।
চিনি গুড় ও ক্ষতি
চিনি খাওয়া কমিয়ে গুড়ের পরিমাণ বেশি খেলে লাভ কিন্তু কিছুই হবে না, উল্টে ক্ষতি হবে। গুড় বা মধুতে প্রাক়ৃতিকভাবেই শর্করা থাকে। রক্তে শর্করার পরিমাণ বেশি গেলে যদি ক্ষতি হয়ে যায়, তাহলে চিনি কিংবা গুড়- দুটোতেই হতে পারে। চিনির বদলে গুড় খেলেও তা খেতে হবে সীমিত পরিমাণে।
স্বাস্থ্যকর খাবার
স্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়ার অর্থই প্রচুর খরচ- এমন ধারণাও থাকে। তবে সঠিক পরিকল্পনা করলে বাড়ির সাধারণ খাবার খেয়েও সুস্বাস্থ্য বজায় রাখা যাবে। তথ্যসূত্র: আনন্দবাজার পত্রিকা।
>>>>>>>>>>>>>>
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org