দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ ফিলিস্তিনের মুক্তিকামী সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাস হুমকি দিয়েছে যে, ফিলিস্তিনি কোনো বেসামরিক বাড়িতে বোমা হামলা চালালেই একজন করে ইসরাইলি বন্দির মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হবে।
অপরদিকে ইসরাইল নজিরবিহীনভাবে তাদের তিন লাখ রিজার্ভ সেনাকে ডেকে পাঠিয়েছে এবং গাজা ভূখণ্ডকে অবরুদ্ধ করেছে। এমন এক পরিস্থিতিতে তারা একটি স্থল অভিযান চালানোর পরিকল্পনা করছে বলে মনে করা হচ্ছে।
শনিবার ভোরে হামাসের অপ্রত্যাশিত ব্যাপক হামলার শিকার হওয়ার পর থেকে গাজায় তীব্র পাল্টা হামলা চালাচ্ছে ইসরাইলের সেনাবাহিনী। চলমান এই সহিংসতায় ইতিমধ্যেই ২ হাজারেরও বেশি মানুষ নিহত হয়েছে। বহু দেশ এই লড়াই বন্ধ করার এবং বেসামরিকদের সুরক্ষা নিশ্চিত করার আবেদন জানিয়েছে।
ইসরাইলি টেলিভিশন চ্যানেলগুলো জানিয়েছে, হামাসের হামলায় নিহত ইসরায়েলির সংখ্যা বেড়ে ৯০০ জনে দাড়িয়েছে। আহত হয়েছে অন্তত ২৬০০ জন, এছাড়াও আরও বহু ইসরাইলিকে ধরে নিয়ে বন্দি করে রাখা হয়েছে।
ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু এক বক্তৃতায় হামাসের বিরুদ্ধে নৃশংসতার অভিযোগ তুলে বলেছেন যে, এই জঘন্য শত্রু যুদ্ধ চায় ও তারা যুদ্ধই পাবে।
এদিকে গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, শনিবার থেকে শুরু হওয়া ইসরাইলের বিমান হামলায় অন্তত ৬৯০ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন এবং ৩ হাজার ৭২৬ জন আহত হয়েছেন।
গণমাধ্যমের প্রতিবেদন এবং প্রত্যক্ষদর্শীদের বক্তব্য অনুযায়ী জানা যায়, গাজার যেসব স্থাপনায় হামলা চালানো হয় সেগুলোর মধ্যে রয়েছে কয়েকটি অ্যাপার্টমেন্ট ব্লক, একটি মসজিদ এবং হাসপাতাল, এর পাশাপাশি কিছু সড়ক এবং বাড়ি ধ্বংস হয়েছে।
ইসরাইল বেসামরিক ফিলিস্তিন টেলিকমিউনিকেশন কোম্পানির সদরদপ্তরেও বোমাবর্ষণ করে। এতে গাজার ল্যান্ড টেলিফোন, ইন্টারনেট এবং মোবাইল ফোন পরিষেবা ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।
গাজায় ইসরায়েলের হামলা সোমবার রাত ও মঙ্গলবারও অব্যাহত ছিল। ইসরায়েলের সামরিক বাহিনী জানিয়েছে যে, তারা আকাশ এবং সাগর থেকে গাজা ভূখণ্ডের বিভিন্ন লক্ষ্যে হামলা চালিয়েছে, এগুলোর মধ্যে ইসলামিক জিহাদের একটি অস্ত্রাগার এবং গাজার উপকূলে হামাসের কিছু স্থাপনাও ছিল।
হামাসের মুখপাত্র আবু উবাইদা সোমবার হুমকি দিয়ে বলেছেন যে, সতর্কতা জানানো ছাড়া গাজার প্রত্যেকটি বেসামরিক বাড়িতে চালানো ইসরাইলের বোমা হামলার জন্য একজন করে ইসরায়েলি বন্দির মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করে তা সম্প্রচার করা হবে।
এই হুমকির বিষয়ে অবশ্য ইসরাইলের সামরিক বাহিনী তাৎক্ষণিকভাবে কোনো প্রতিক্রিয়া দেখায়নি। ইসরায়েলের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এলি কোহেন জানিয়েছেন যে, হামাস ইসরাইল থেকে শতাধিক ব্যক্তিকে বন্দি করে নিয়ে গেছে।
ফিলিস্তিনিরা জানিয়েছেন যে, তারা ইসরাইলি নিরাপত্তা কর্মকর্তাদের কল এবং মোবাইল ফোনে অডিও বার্তা পেয়েছেন, সেগুলোতে তাদের গাজার উত্তরাঞ্চল এবং পূর্বাঞ্চলের এলাকাগুলো ছেড়ে চলে যেতে বলা হয় এবং ইসরাইলি সেনাবাহিনী সেখানে অভিযান চালাতে পারে বলে সতর্ক করা হয়।
>>>>>>>>>>>>>>
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org