দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ ইসরায়েলের টানা হামলা ও অবরোধের কারণে ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকার তৈরি হয়েছে ব্যাপক জ্বালানি সংকট। এতে করে বন্ধ হয়ে গেছে গাজা উপত্যকার একমাত্র ক্যান্সার হাসপাতালটি।
আল জাজিরার প্রতিবেদন অনুযায়ী জানা যায়, গত বুধবার (১ নভেম্বর) বন্ধ হয়ে যায় এই হাসপাতালটি। গাজার এই ক্যান্সার হাসপাতালের নাম হলো তুর্কি-ফিলিস্তিনি ফ্রেন্ডশিপ হাসপাতাল। ওইদিন এক সংবাদ সম্মেলনে হাসপাতালের পরিচালক সুভি সুকেক বলেছেন যে, ‘এই হাসপাতালটি আর কাজ করবে না। আমরা বিশ্বকে বলবো, হাসপাতালকে পরিষেবার বাইরে রেখে ক্যান্সার রোগীদের নির্দিষ্টভাবে আর মৃত্যুর দিকে ঠেলে দেবেন না।’
তুর্কি-ফিলিস্তিনি ফ্রেন্ডশিপ হাসপাতালের কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যাওয়ার অর্থই হলো গাজা ভূখণ্ডের ৩৫টি হাসপাতালের মধ্যে ১৬টিই বর্তমানে বন্ধ হয়ে গেছে। এছাড়াও গাজার ৭২টি প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা ক্লিনিকের মধ্যে ৫০টিরও বেশি ক্লিনিক বর্তমানে বন্ধ।
এর মধ্যদিয়ে মানবিক বিপর্যয় আরও চরমে পৌঁছালো অবরুদ্ধ ওই উপত্যকাটিতে। ফিলিস্তিনের স্বাস্থ্যমন্ত্রী মাই আল-কাইলা এক বিবৃতিতে বলেছেন যে, ‘পরিষেবা বন্ধ হয়ে যাওয়ায় হাসপাতালের ভেতরে চিকিৎসাধীন ৭০ জন ক্যান্সার রোগীর জীবন গুরুতরভাবে হুমকির সম্মুখীন হলো।’
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মুখপাত্র তারিক জাসারেভিচ আল জাজিরাকে বলেছেন যে, ‘হাসপাতালগুলো চালু না থাকলে গাজার হাজার হাজার রোগী জীবন এবং মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে পড়বেন। ক্যান্সার রোগীদের স্বাস্থ্য ইতিমধ্যেই এক নাজুক অবস্থায় নিপতিত হয়েছে। যদি তারা তাদের প্রয়োজনীয় চিকিৎসা না পায় তাহলে তাদের মৃত্যু তখন অনিবার্য।’
>>>>>>>>>>>>>>
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org