দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ অনেকেরই মনে করেন বাদাম খেলে মেদের পরিমাণ বেড়ে যায়। এটি পুরোপুরি ঠিক নয়। ডায়াবেটিস কিংবা হার্টের রোগ থাকলেও বাদাম খাওয়া যাবে। তবে অবশ্যই এটি খেতে হবে পরিমিত।
পুষ্টিগুণের দিক দিয়ে কাঠবাদাম, কাজুবাদাম কিংবা পেস্তাবাদাম খাবারের তালিকায় একেবারে উপরের দিকে থাকলেও ‘পাশের বাড়ির ছেলে’ চিনাবাদামে পিছিয়ে নেই। হলে সিনেমা দেখতে দেখতে বা পার্কে বান্ধবীর হাত ধরে হাঁটতে হাঁটতে আগে এই বাদাম খাওয়ার চলও ছিল। বর্তমানে অবশ্য সেই জায়গা দখল করে নিয়েছে ভুট্টা দিয়ে তৈরি ‘পপকর্ন’। তবে পুষ্টিবিদরা বলেছেন, চিনাবাদামে যে ধরনের উপাদান রয়েছে, তা স্বাস্থ্যের জন্যেও ভালো। ডায়াবেটিস কিংবা হার্টের রোগ থাকলেও বাদাম খাওয়া যাবে। তবে তা অবশ্যই খেতে হবে পরিমিত।
প্রোটিন
ডিম, মাছ, মাংস, খান না এমন অনেকেই প্রোটিনের পরিপূরক হিসেবে বাদাম খেয়ে থাকেন। পুষ্টিবিদরা বলেছেন, বাদাম উদ্ভিজ্জ প্রোটিনের খুব ভালো একটি উৎস। ৭ হতে ১০ গ্রাম বাদামে যে পরিমাণ প্রোটিন পাওয়া যাবে, সেটি মূলত একটি ডিমের সমান।
স্বাস্থ্যকর ফ্যাট
চিনাবাদামের মধ্যে যে ধরনের ফ্যাট থাকে, তা হার্টের জন্যেও খুবই ভালো। রক্তে খারাপ কোলেস্টেরলের পরিমাণ নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য করে এই বাদামের মধ্যে থাকা মনোস্যাচুরেটেড ও পলিস্যাচুরেটেড ফ্যাট।
হজমে সহায়ক
বাদামের ফাইবার কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যার ঘরোয়া টোটকাও হতে পারে। তাছাড়াও নিয়মিত একমুঠো বাদাম খেলে হজমের সমস্যা থাকে না। হজম ভালো হলে বিপাকহারের উপর তার প্রভাব পড়ে। আবার রক্তে ইনসুলিন ক্ষরণ নিয়ন্ত্রণ করতে পারে এই বাদাম।
ভিটামিন ও খনিজ
ভিটামিন ই, বি, ফোলেট, ম্যাগনেশিয়াম, ফসফরাস ও পটাশিয়ামের মতো নানা ধরনের উপাদান রয়েছে এই চিনাবাদামে। শারীরবৃত্তীয় নানা কার্যকলাপে অংশ নেয়, এমন বহু উৎসচেক ক্ষরণেও সাহায্য করে এই উপাদানগুলো।
ওজন নিয়ন্ত্রণ
অনেকের ধারণা যে, বাদাম খেলে দেহের মেদ আরও বেড়ে যায়। তবে সাম্প্রতিক বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে, ওজন নিয়ন্ত্রণেও সাহায্য করে এই বাদাম। কারণ হলো, চিনাবাদামে প্রোটিন ও ফাইবারের পরিমাণ বেশি হলেও ক্যালোরির পরিমাণ অনেক কম থাকে। তথ্যসূত্র: আনন্দবাজার অনলাইন।
>>>>>>>>>>>>>>
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org