দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু জানিয়েছেন যে, ত্রাণ প্রবেশ এবং জিম্মিদের বেরিয়ে আসার সুযোগ দিতে গাজার লড়াইয়ে ‘কৌশলগত সামান্য বিরতি’ দেওয়ার কথা বিবেচনা করা হবে।
তবে আন্তর্জাতিক চাপ বাড়তে থাকা সত্ত্বেও যুদ্ধবিরতির আহ্বান প্রত্যাখ্যান করেছেন ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু। -খবর রয়টার্সের।
সোমবার মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের টেলিভিশন চ্যানেল এবিসি নিউজকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে নেতানিয়াহু বলেছেন যে, তিনি মনে করেন যুদ্ধের পর ‘অনির্দিষ্টকালের’ জন্য ফিলিস্তিনি ছিটমহলটির নিরাপত্তার দায়িত্ব থাকবে ইসরায়েলেরই হাতে।
লড়াইয়ে মানবিক বিরতির সম্ভাবনা নিয়ে প্রশ্নের উত্তরে নেতানিয়াহু বলেছেন, সাধারণ যুদ্ধবিরতি তার দেশের যুদ্ধ প্রচেষ্টাকে ব্যাহত করবে। এদিকে ইসরায়েলের প্রধান মিত্র মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র গাজার লড়াইয়ে মানবিক বিরতির ধারণা সমর্থন করেছে।
নেতানিয়াহু বলেছেন, যতদূর সম্ভব সেখানে এক ঘণ্টা, দুই ঘণ্টার জন্য কৌশলগত সামান্য বিরতি আমরা পূর্বেও দিয়েছি।
আমার ধারনা, যাতে পণ্য, মানবিক ত্রাণ ভেতরে আসতে পারে বা আমাদের জিম্মিরা যাতে বেরিয়ে আসতে পারেন তার জন্যই আমরা পরিস্থিতি পরীক্ষা করবো। তবে আমার মনে হয় না যে, সেখানে সাধারণ যুদ্ধবিরতি হতে যাচ্ছে।
ইসরায়েলে ও গাজা নিয়ন্ত্রণকারী ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী গোষ্ঠী হামাস উভয়ই যুদ্ধবিরতি জন্য তৈরি হওয়া প্রবল আন্তর্জাতিক চাপ প্রত্যাখ্যান করেছে।
আর ইসরায়েলের দাবি, আগে হামাসের হাতে বন্দি সকল জিম্মিকে মুক্তি দিতে হবে। অপরদিকে হামাস বলছে, গাজায় হামলা চালানো বন্ধ না হলে তাদের মুক্তি দেওয়া হবে না ও লড়াইও থামানো হবে না।
গত ৭ অক্টোবর ইসারায়েলের দক্ষিণাঞ্চলে নজিরবিহীন হামলা চালায় গাজা নিয়ন্ত্রণকারী ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী গোষ্ঠী হামাস। ইসরায়েল জানিয়েছে যে, হামাসের হামলায় ১৪০০ জন নিহত হয়েছে ও ২৪০ জনকে বন্দি করে গাজায় নিয়ে জিম্মি করে রাখে হামাস। ওই দিন থেকেই গাজা ভূখণ্ড অবরুদ্ধ করে ফিলিস্তিনি ছিটমহলটিতে ব্যাপক বিমান এবং ক্ষেপণাস্ত্র হামলা শুরু করেছে ইসরায়েল। পরে তারা গাজায় স্থল আক্রমণ শুরু করে।
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ইসরায়েলের হামলায় গাজায় এই পর্যন্ত ১০ হাজার ২২ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে, যারমধ্যে শিশুর সংখ্যা ৪ হাজার ১০৪।
>>>>>>>>>>>>>>
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org