দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ মস্তিষ্কের বিকাশজনিত সমস্যা হলো অটিজম। এই সমস্যা শিশুদের বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে প্রকাশও পেতে থাকে। তাই শুরুতেই শনাক্ত করা না গেলে অটিজমের মাত্রা গুরুতর আকারও ধারণ করে।
অনেক মা-বাবাই অটিজমের প্রাথমিক উপসর্গগুলো শনাক্ত করতে না পারায় শিশুদের স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরিয়ে আনাও সম্ভব হয় না। এই সমস্যার সমাধান দেবে এআই প্রযুক্তি।
নতুন এক গবেষণায় দেখা যায়, শিশুদের চোখের ছবি স্ক্যান করে প্রায় শতভাগ নির্ভুলভাবে অটিজম শনাক্ত করতে পেরেছে এই কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা প্রযুক্তি।
অটিজম শনাক্ত করতে সক্ষম এআই টুলটি তৈরি করেছেন দক্ষিণ কোরিয়ার সিউলে অবস্থিত ইয়নসেই বিশ্ববিদ্যালয়েরই একদল গবেষক। শিশুদের চোখের রেটিনার ছবি পর্যালোচনায় সক্ষম অ্যালগরিদম ব্যবহার করা হয় এআই টুলটিতে। টুলটির কার্যকারিতা পরখ করার জন্য ৯৫৮ জন শিশুর ওপর গবেষণা চালানো হয়েছে যার অর্ধেকেই ছিল অটিজম আক্রান্ত। গবেষণায় দেখা যায় যে, এআই টুলটি নির্ভুলভাবে শিশুদের অটিজম শনাক্ত করতে পারেন।
গবেষণার এই ফলাফল চিকিৎসাবিষয়ক সাময়িকী জেএএমএ নেটওয়ার্কে সম্প্রতি প্রকাশিত হয়েছে। তবে বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, এখনই এই টুলটি থেকে প্রাপ্ত ফলাফলের ওপর শতভাগ নির্ভর করার সময়ই আসেনি। এআই টুলটিকে ডায়াগনস্টিক টুল হিসেবে বিবেচনা না করে অটিজম শনাক্তের সম্ভাব্য একটি স্ক্রিনিং পদ্ধতি হিসেবেও বিবেচনা করা যেতে পারে।
উল্লেখ্য, সময়মতো অটিজম শনাক্ত না হওয়ায় প্রাথমিক পর্যায়ে চিকিৎসা থেকে বঞ্চিত হয় অনেক শিশু। নতুন এআই টুলটির মাধ্যমে শিশুদের অটিজম একেবারেই প্রাথমিক পর্যায় থেকে শনাক্ত করা সম্ভব হওয়ার কারণে প্রতি বছর লাখ লাখ শিশুকে সময়মতো প্রয়োজনীয় চিকিৎসা দেওয়া সম্ভব হবে বলে ধারণা করা হয়েছে।
>>>>>>>>>>>>>>
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
মশা বাঢহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org