দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ কৃষকদের সুবিধার জন্য উৎপাদিত ফসল সংগ্রহ করতে ও শস্যের ন্যায্যমূল্য নিশ্চিত করতে প্রকিউরমেন্ট হাব চালু করেছে আইফার্মার। দিনাজপুর জেলার বীরগঞ্জে আজ এই উদ্বোধনী অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়।
বাংলাদেশে ফসল কাটার পর কৃষকরা তাদের শস্য বিক্রি করা নিয়ে নানামুখী সমস্যার সম্মুখীন হন। কৃষকরা তাদের কষ্টে উৎপাদিত ফসল কম দামে বিক্রি করে দিতে বাধ্য হন, নতুবা পরে ক্রেতারা শস্য কিনতে না চাইলে তা নষ্ট হয়ে যাওয়ার আশঙ্কাও থাকে। এখন কোনো ধরনের ক্ষতির সম্মুখীন হওয়া ছাড়াই আইফার্মারের প্রকিউরমেন্ট হাবে স্বাচ্ছন্দ্যে নিজেদের শস্য বিক্রি করার সুযোগ পাবেন কৃষকরা।
প্রকিউরমেন্ট হাবটিতে প্রায় ২০,০০০ টন শস্য সংগ্রহ করে রাখার সুবিধাও রয়েছে। হাবটি হাই-ওয়ে সংলগ্ন স্থানীয় বাজারের মধ্যেই অবস্থিত যেখানে কৃষকরা সহজেই তাদের ফসল নিয়ে আসতে পারবেন। অতিরিক্ত খরচ কমিয়ে এনে, সময় বাঁচিয়ে এবং অন্যান্য সুবিধা যুক্ত করার মাধ্যমে এই প্রকিউরমেন্ট হাব থেকে কৃষকরা যেনো বেশি লাভ করতে পারেন তা নিশ্চিত করা হবে। ইতিমধ্যে, হাবটি ডিজিটাল স্কেল মিটার পরিষেবা ব্যবহার করে স্বচ্ছতার সাথে কৃষকদের থেকে ধান, চাল, ভুট্টা ও সরিষা সংগ্রহ করে কার্যক্রম শুরু করেছে।
বর্তমানে, ৫০০ জন কৃষক, ৫০ জন রিটেইলার, ৫০ জন ফড়িয়া ও ৬০ জন সাপ্লায়ার এ প্রকিউরমেন্ট হাবের তালিকাভুক্ত রয়েছেন। এদের মধ্যে হাবে আসা কৃষক আইয়ুব আলী বলেন, “আগে গ্রামের বাজার বা শহরে শস্য বিক্রি করতে যাওয়ার সময় অনেক টাকা খরচ করতে হতো। এরপরও শস্যের পুরো টাকা আমরা কখনই একসঙ্গে হাতে পেতাম না। এখন, খুব সহজেই হাবে শস্য নিয়ে আসা যাচ্ছে, কোনোরকম ঝামেলা ছাড়াই শস্য বিক্রির টাকা পাওয়া যাচ্ছে।”
এই বিষয়ে আইফার্মারের সহ-প্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান নির্বাহী ফাহাদ ইফাজ বলেন, “ভালো মানের শস্য উৎপাদনে কৃষকদের উৎসাহিত করতে এবং ন্যায্যমূল্যে শস্য বিক্রিতে তাদের সহায়তা করতে এই প্রকিউরমেন্ট হাব গড়ে তোলা হয়েছে। স্মার্ট কৃষি গড়ে তোলার ক্ষেত্রে এই উদ্যোগ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে আমরা আশাবাদী।”
প্রকিউরমেন্ট হাবের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন আইফার্মারের সহ-প্রতিষ্ঠাতা এবং প্রধান অতিথি ফাহাদ ইফাজ এবং সহ-প্রতিষ্ঠাতা ও চীফ অপারেটিং অফিসার জামিল মহিউদ্দিন আকবর। এছাড়াও অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন দিনাজপুর কৃষি বিপণন অধিদপ্তরের সিনিয়র কৃষি বিপণন কর্মকর্তা মো. হুমায়ুন কবির, বীরগঞ্জ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. শরীফুল ইসলাম এবং বাংলাদেশ পুলিশের (বীরগঞ্জ) পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মো. মইনুল ইসলাম।
উল্লেখ্য যে, দিনাজপুরের পাশাপাশি অন্যান্য জেলাতেও আইফার্মারের প্রোকিউরমেন্ট হাব চালু করার পরিকল্পনা রয়েছে।
খবর সংবাদ বিজ্ঞপ্তির।
>>>>>>>>>>>>>>
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
মশা বাঢহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org