দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ কৃষি কার্যক্রমকে সম্প্রসারণ এবং দীর্ঘস্থায়ী করতে কৃষকের প্রয়োজন কৃষি অর্থায়ন সুবিধা। কিন্তু কৃষি অর্থায়ন পাওয়ার ক্ষেত্রে নানা প্রতিকূলতার সম্মুখীন হন আমাদের কৃষকরা। তাই, অর্থায়ন পাওয়ার প্রক্রিয়াকে আরও সহজ এবং সমতা-ভিত্তিক করতে সম্প্রতি একটি সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) স্বাক্ষর করেছে আইফার্মার ও ইস্টার্ন ব্যাংক লিমিটেড পিএলসি (ইবিএল)।
কৃষিকাজের জন্য বীজ, উপকরণ ও অবকাঠামোগত ব্যয়ের ক্ষেত্রে অগ্রিম টাকার প্রয়োজন হয়, এবং এখান থেকে মুনাফা আসতে কয়েক মাস এমনকি বছরও লেগে যেতে পারে। এছাড়াও, বাংলাদেশের কৃষকরা অনাকাঙ্ক্ষিত আবহাওয়া, পণ্যের দামের ওঠানামা এবং কীটপতঙ্গ সংশ্লিষ্ট ক্ষতি নিয়ে ঝুঁকিতে থাকেন, যা তাদের ঋণ পরিশোধের ক্ষেত্রে বড় বাধার সৃষ্টি করে। এক্ষেত্রে, স্থানীয় কৃষকদের জন্য অর্থায়ন প্রক্রিয়াকে আরও সহজলভ্য করার জন্য করপোরেট খাতের সাথে সম্মিলিত পার্টনারশীপের প্রচেষ্টা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। আর তাই, ইস্টার্ন ব্যাংক লিমিটেড (ইবিএল) এখন থেকে আইফার্মারের কৃষকদের রিস্ক স্কোর, মাঠ পর্যবেক্ষণ ও লাস্ট মাইল সাপোর্টের মাধ্যমে কৃষকদের কাংখিত অর্থায়ন সেবা প্রদানে সহায়তা করবে। অন্যদিকে, কৃষকরা যেন সরাসরি ব্যাংক থেকে অর্থায়ন সেবা গ্রহণ করতে পারেন, সে বিষয়ে সার্বিক সহায়তা প্রদান করবে আইফার্মার। রাজধানীর ১০০, গুলশান অ্যাভিনিউয়ে অবস্থিত ইবিএল কার্যালয়ে এ চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠিত হয়। নিজ নিজপ্রতিষ্ঠানের পক্ষে চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন ইবিএল’র ডিএমডি এবং হেড অব রিটেইল অ্যান্ড এসএমই ব্যাংকিং এম. খোরশেদ আনোয়ার এবং আইফার্মারের প্রধান নির্বাহী ফাহাদ ইফাজ। অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন ইবিএল’র হেড অব বিজনেস সৈয়দ জুলকার নয়ন, প্রতিষ্ঠানটির হেড অব অ্যাসেট মোহাম্মদ সালেকীন ইব্রাহিম, এসএমই’র হেড অব অ্যাসেট মোঃ শাবু মুন্সী, আইফার্মারের ফিল্ড অপারেশনসের ভাইস প্রেসিডেন্ট – ফরহাদ জুলফিকার রাফেল, আইফার্মারের ব্যাংকিং অ্যান্ড ফিনান্সিয়াল সেক্টর অ্যাডভাইজার – ইরফান ইসলাম, আইফার্মারের ফাইন্যান্সিয়াল প্রোডাক্ট অ্যান্ড সার্ভিসের অ্যাসিসট্যান্ট ম্যানেজার ইত্তেসাম বারী রিও এবং প্রতিষ্ঠানটির ফাইন্যান্সিয়াল প্রোডাক্ট অ্যান্ড সার্ভিসের এক্সিকিউটিভ কাজী ফাহিম ফারহান সাজিদ।
অনুষ্ঠানে আইফার্মারের প্রধান নির্বাহী ফাহাদ ইফাজ বলেন, “সহযোগিতামূলক এ উদ্যোগের উদ্দেশ্য হল দেশের কৃষক এবং কৃষি-উদ্যোক্তা, বিশেষ করে যারা দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে বাস করেন তাদের জন্য অর্থায়ন সেবা সহজ করা। ব্যাংক ও অর্থায়ন সেবা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে পার্টনারশীপের মাধ্যমে কৃষকরা যেসব প্রতিকূলতা মোকাবিলা করেন আমরা তা কমিয়ে আনতে সহায়তা করব। ইবিএল’র সাথে আমাদের পার্টনারশীপ কৃষকদের সামাজিক নিরাপত্তা ও দীর্ঘস্থায়ী উন্নয়নে অবদান রাখতে সহযোগিতা করবে, যার মাধ্যমে কৃষক কমিউনিটি উপকৃত হবে এবং অর্থনীতির প্রবৃদ্ধিতে ভূমিকা রাখবে।”
ইবিএল’র ডিএমডি ও হেড অব রিটেইল অ্যান্ড এসএমই ব্যাংকিং এম. খোরশেদ আনোয়ার বলেন, “আমাদের অর্থনীতিতে কৃষকরা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন; তাই, আইফার্মারের সাথে এই পার্টনারশীপ করতে পেরে আমরা অত্যন্ত আনন্দিত। আমরা স্থানীয় কৃষক কমিউনিটির পাশে দাঁড়াতে আমাদের সর্বাত্মক প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখব এবং তারা যেসব অসুবিধার সম্মুখীন হন তা চিহ্নিত করতে ও সমাধানে কাজ করবো। আমাদের প্রত্যাশা, আমরা তাদের দীর্ঘস্থায়ী জীবিকা নিশ্চিতে ভূমিকা রাখতে পারবো।”
খবর সংবাদ বিজ্ঞপ্তির।
>>>>>>>>>>>>>>
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org