দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ সাধারণ বংশে কারও মৃগী থাকলে পরবর্তী প্রজন্মের মধ্যেও এই রোগটি সঞ্চারিত হতে পারে। মস্তিষ্কের স্নায়ু বা গঠনগত কোনও সমস্যা থাকলেও অনেক সময় এই রোগ হানা দিতে পারে।
ঘরে-বাইরে কাজের চাপ, দাম্পত্য কলহ ইত্যাদি জীবনে এই সব থেকেই যায়। যে কারণে স্নায়ুর উপর চাপ বৃদ্ধি পাওয়াটা স্বাভাবিক। দিনের পর দিন এমন শারীরিক ও মানসিক চাপ সামাল দিতে না পারলে মস্তিষ্ক মাঝে-মধ্যে কাজকর্ম বন্ধ করে দিতে পারে। সুস্থ মানুষ হঠাৎ করে জ্ঞান হারিয়ে ফেলতে পারেন। যদিও অজ্ঞান হয়ে যাওয়া মানেই মৃগী নয়। এপিলেপসি কিংবা মৃগী হলে হাত-পায়ে টান, খিঁচুনি দেখা দিতে পারে।
কোন কোন ব্যক্তি এই রোগে আক্রান্ত হতে পারেন?
কে মৃগীতে আক্রান্ত হবেন, তা আগে থেকেই বলা মুশকিল। চিকিৎসকরা বলেছেন, বংশে কারও মৃগী থাকলে পরবর্তী প্রজন্মের মধ্যেও এই রোগটি সঞ্চারিত হতে পারে। মস্তিষ্কের স্নায়ু বা গঠনগত কোনও সমস্যা থাকলেও অনেক সময় এই রোগটি হানা দিতে পারে। তাই নিরাময় করতে গেলে আগে রোগ নির্ণয়েই বেশি জোর দিতে হবে। মৃগীর সঙ্গে লড়াই করতে নিয়মিত ওষুধ খাওয়ার পাশাপাশি জীবনধারায়ও কিছু পরিবর্তন আনাটা জরুরি।
# ঘুমের স্বাভাবিক চক্র ব্যাহত হলে এই ধরনের সমস্যা আরও বাড়তে পারে। তাই প্রত্যাহ নির্দিষ্ট সময় ঘুমোনোর অভ্যাস করাটা জরুরি। রাতে ৭ থেকে ৯ ঘণ্টা ঘুমোতে হবে। কাজের মধ্যে ‘পাওয়ার ন্যাপ’ নিতে পারলেও ভালো হয়।
# মৃগী রোগ নিয়ন্ত্রণের প্রাথমিক শর্তই হলো নিয়ম করে ওষুধ খাওয়া। যাদের স্নায়ু সমস্যার কারণে নিয়মিত ওষুধ খেতে হয়, তাদেরও এই বিষয়ে আরও সতর্ক থাকতে হবে। কোনওভাবেই ওষুধ খেতে ভুলে গেলে মোটেও চলবে না।
# নিয়মিতভাবে শরীরচর্চা করতে হবে। শারীরিকভাবে সক্রিয় থাকলে শারীরবৃত্তীয় কাজগুলোও সঠিকভাবে সম্পন্ন হয়। শরীরের পাশাপাশি মানসিক চাপও তখন বশে থাকে।
# মৃগী থাকলে অ্যালকোহল জাতীয় পানীয় খেতে একেরারেই বারণ করা হয়। কারণ হলো, অ্যালকোহল জাতীয় পানীয় অ্যান্টি-এপিলেপ্টিক ওষুধের কার্যকারিতা নষ্ট করে দেয়।
# মৃগী রোগ নিয়ে অনেকের মনেই নানা রকম কুসংস্কার বা অন্ধবিশ্বাসও রয়েছে। প্রথমেই বলে রাখা ভালো যে, মৃগী জিনগত কিংবা ছোঁয়াচে নয়। তাই কারও যদি খিঁচুনি হয় কিংবা হঠাৎ করে কেও জ্ঞান হারান, তাহলে ঘরোয়া টোটকার উপর ভরসা না করে তাৎক্ষণাৎ চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যাওয়াই ভালো। তথ্যসূত্র: আনন্দবাজার পত্রিকা অনলাইন।
>>>>>>>>>>>>>>
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org