দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটন অঙ্গরাজ্যে ইসরায়েলি দূতাবাসের সামনে মার্কিন বিমানবাহিনীর সক্রিয় একজন সদস্য নিজের শরীরে আগুন ধরিয়ে দিয়েছেন। গাজায় ইসরায়েলি হামলার প্রতিবাদ এই কাণ্ড করেছেন তিনি।
সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, স্থানীয় সময় গতকাল (রবিবার) বিকেলে এই ঘটনাটি ঘটেছে। ওই ব্যক্তিকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় সেখানকার একটি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
মার্কিন বিমানবাহিনীর মুখপাত্র সংবাদ সংস্থা এএফপিকে বলেছেন, ওই ব্যক্তি মার্কিন বিমানবাহিনীর সক্রিয় একজন সদস্য। তবে তিনি এই বিষয়টি নিয়ে বিস্তারিত কিছু জানাননি। ফায়ার সার্ভিস বলেছে যে, ওই ব্যক্তির অবস্থা আশঙ্কাজনক। ইসরায়েলি দূতাবাসের মুখপাত্র বলেছেন যে, ওই ব্যক্তি শরীরে আগুন দেওয়ার সময় দূতাবাসের কেও আহত হননি। তারা কেও ওই ব্যক্তিকে চেনেনও না।
মার্কিন গণমাধ্যমের খবরের বরাত দিয়ে এএফপি আরও জানিয়েছে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের লাইভ ভিডিও স্ট্রিমিং টুইচে ক্লান্ত অবস্থায় ওই ব্যক্তিকে বলতে শোনা যায় যে, তিনি আর গণহত্যার মতো এমন অপরাধ করতে চান না। তারপরই তিনি নিজের শরীরে তরলজাতীয় দাহ্য পদার্থ ঢেলে আগুন ধরিয়ে নেন। মাটিতে পড়ে না যাওয়া পর্যন্ত তাকে চিৎকার করে বলতে শোনা যায় যে, ‘ফিলিস্তিন’কে মুক্ত করো’। যদিও এইসব ফুটেজের সত্যতা তাৎক্ষণিকভাবে যাচাই করতে পারেনি এএফপি। নিউইয়র্ক টাইমসের খবরের বরাত দিয়ে এএফপি জানিয়েছে, টুইচ থেকে ওই ফুটেজ সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।
রয়টার্সের খবরে বলা হয় যে, গত অক্টোবরে ফিলিস্তিনের গাজায় রক্তক্ষয়ী যুদ্ধ শুরুর পর হতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইসরায়েলি দূতাবাসের সামনে একের পর এক বিক্ষোভের ঘটনাও ঘটছে। ইসরায়েল এবং ফিলিস্তিনপন্থী- দুই পক্ষই সেখানে বিক্ষোভ করে আসছে।
উল্লেখ্য যে, গাজায় গত কয়েক মাসের নির্বিচার হামলায় নারী ও শিশুসহ প্রায় ৩০ হাজার মানুষের প্রাণ গেছে। এইসব তথ্য হামাস নিয়ন্ত্রিত গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের। অপরদিকে ইসরায়েল সরকার জানিয়েছে যে, ৭ অক্টোবরের হামলায় দেশটিতে ১ হাজার ২০০ জনের বেশি মানুষ নিহত হন। ২৫৩ জনকে জিম্মি করা হয়।
>>>>>>>>>>>>>>
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org