দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ টানা ফোন কিংবা কম্পিউটারের পর্দায় চোখ রেখে কাজ করলে অথবা সিরিজ় দেখলে প্রায়ই এমনটি হতে পারে। আবার অনেক সময় অতিরিক্ত মানসিক চাপ থেকেও মাথা যন্ত্রণা দেখা দিতে পারে।
হয়তো আপনি দেখলেন অফিসে এসে সবে ল্যাপটপ খুলেছেন। এখনও অনেক কাজ বাকি রয়েছে। তখন মাথার এক পাশ দপদপ করতে শুরু করেছে। এমন হতেই পারে। টানা ফোন বা কম্পিউটারের পর্দায় চোখ রেখে কাজ করলে কিংবা সিরিজ় দেখলে প্রায়ই এমনটি হয়। আবার অনেক সময় অতিরিক্ত মানসিক চাপ থেকেও মাথা যন্ত্রণা দেখা দিতে পারে। আপনার মাথা যেহেতু সমস্ত কাজ পরিচালনা করে তাই সারাক্ষণ এমন অস্বস্তি নিয়ে কিছুতেই মন বসানো যাবে না। প্রথম দিকে কয়েক বার আদা-চা, কফি খেয়ে নেন। তাতে খুব একটা আরাম না হলে শেষ পর্যন্ত ব্যথা কমানোর ওষুধ খেতে হয়। তবে অভিজ্ঞরা বলেছেন, মাথাব্যথার ওষুধ খেয়ে কিছুক্ষণ ঘুমোতে না পারলে কষ্ট আরও বেড়ে যেতে পারে। তাই ওষুধের বিকল্প হিসেবে কয়েকটি টোটকার উপর আস্থা রাখা যেতেই পারে।
তাহলে মাথাব্যথা কমাতে ওষুধ না খেয়ে কী করবেন?
পর্যাপ্ত পরিমাণ পানি খাওয়া
প্রচণ্ডভাবে মাথা ধরলে বা যন্ত্রণা করলে এক কাপ ঈষদুষ্ণ পানি খান, অনেক সময় বদহজম থেকেও মাথাব্যথা হয়ে থাকে। গরম পানি খেলে সেই কষ্ট কমে আসতে পারে। এছাড়াও, শরীরে পানির ঘাটতি হলেও মাথাব্যথা হতেই পারে। পর্যাপ্ত পানি না খেলে শরীর ডিহাইড্রেটেডও হয়ে পড়ে। যে কারণে মাথাব্যথা আরও বাড়তে পারে।
মানসিক চাপ নিয়ন্ত্রণ করা
আবহাওয়া পরিবর্তন হয়। সব সময়ই যে আবহাওয়ার হেরফের কিংবা মাইগ্রেন থেকেও অনেক সময় মাথা যন্ত্রণা হয়, তা মোটেও নয়। মানসিক চাপও মাথা যন্ত্রণার কারণ হতে পারে। এই সমস্যা বশে রাখতে হলে নিয়মিত প্রাণায়াম, শরীরচর্চা, যোগাসন অভ্যাস করতে পারেন।
অ্যারোমাথেরাপি
মাথা যন্ত্রণার সময় উগ্র কোনও গন্ধই সহ্য করা যায় না। এতে অনেকের ব্যথার তীব্রতাও বেড়ে যায়। আবারও, এমন কিছু প্রাকৃতিক গন্ধ রয়েছে যা শুঁকলে, প্রদাহজনিত কষ্টও কমে। স্নায়ুরও আরাম হয়। পোশাকি ভাষায় এই চিকিৎসাকে সুগন্ধি চিকিৎসা কিংবা অ্যারোমাথেরাপি বলা হয়। পানিতে কয়েক ফোঁটা ল্যাভেন্ডার, ইউক্যালিপটাস, ল্যাং ল্যাং বা পুদিনা অয়েল মিশিয়ে তারপর সেই ঘ্রাণ নিলেই অনেক ক্ষেত্রে উপকার পাওয়া যায়।
আকুপ্রেশার
অনেক পুরনো এই পদ্ধতিটি মাথাব্যথার অব্যর্থ দাওয়াই। এটি এক ধরনের মাসাজ করার পদ্ধতিও। বাঁ হাতের বুড়ো আঙুল ও তর্জনীর মাঝের অংশে ডান হাতের বুড়ো আঙুল এবং তর্জনীও চেপে ধরুন। এরপর ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে জায়গাটি মাসাজও করুন। একইভাবে বিপরীত হাতে করুন। কিছুক্ষণেই কমে আসবে মাথাব্যথা।
ঠাণ্ডা সেঁক
মাথাব্যথার সময় প্রদাহ কমাতে দারুণভাবে কাজ করে এই ঠাণ্ডা সেঁক। পরিষ্কার সুতির কাপড়ে বরফ জড়িয়েও নিতে পারেন। অথবা সেঁক দেওয়ার পানি ভর্তি পাউচ থাকলেও চলবে। এটি দিয়ে মাথা এবং ঘাড়ের চারপাশ চেপে চেপে সেঁক দিতে হবে। আবার প্রদাহও কমবে। এতে আরামও পাবেন। তথ্যসূত্র: আনন্দবাজার পত্রিকা অনলাইন।
>>>>>>>>>>>>>>
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org