দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ শিশু হতে বৃদ্ধ, এই রোগটি যে কোনও মানুষের হতে পারে। তবে বাড়তি কোনও শারীরিক ঝুঁকি থাকলে রোগে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনাও অনেক বেশি।
এইসব উপসর্গের মধ্যে ড্রাই আইজ়, চোখ লাল হয়ে যাওয়া, জ্বালা করা বা অনবরতো চোখ থেকে পানি পড়া- এইসব উপসর্গ দেখলে হয়তো সতর্ক থাকা যায়। তবে কোনও রকম লক্ষণ ছাড়াই কিন্তু চোখে হানা দেয় গ্লকোমা।
চিকিৎসকরা বলেছেন, সঠিক সময় এই রোগ ধরা না পড়লে দৃষ্টিশক্তি একেবারে নষ্টও হয়ে যেতে পারে। অনেকেই মনে করেন যে, অত্যাধিক মোবাইল, ল্যাপটপ বা কম্পিউটারে চোখ রাখলে এই ধরনের সমস্যা আরও বৃদ্ধি পায়। তবে সেই সম্পর্কে নিশ্চিত করে বলতে গেলে আরও গবেষণা দরকার।
গ্লকোমা কী?
চোখের যে অংশ দিয়ে ফ্লুইড কিংবা তরল প্রবাহিত হয়, সেই রাস্তা বন্ধ হয়ে গেলেই তা কোনও একটি স্থানে জমতেও শুরু করে। যে কারণে চোখের অপটিক নার্ভে বাড়তি চাপও সৃষ্টি হয়। যাকে ‘ইন্ট্রাঅকুলার প্রেশার’ বলা হয়ে থাকে। চাপ বাড়তে থাকলে দৃষ্টিশক্তি ক্রমশ যেনো ক্ষীণ হতে থাকে। যা পরবর্তী সময় অন্ধত্ব ডেকে আনে। গ্লকোমায় আক্রান্ত হলে একেবারে শুরুর দিকেই রোগীর ‘সাইড ভিশন’ অর্থাৎ পাশের জিনিস দেখার ক্ষমতাও নষ্ট হতে থাকে। চোখের চারপাশে অতিরিক্ত ফ্লুইড জমলে এমনটা হওয়া একেবারেই স্বাভাবিক। ক্ষতির শুরু সেখান থেকেই। সুতরাং কারও যদি ‘সাইড ভিশন’ ঝাপসা হতে শুরু করে দেয়, সেই ক্ষেত্রে দেরি না করে অবশ্যই জরুরি ভিত্তিতে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত। কারণ হলো, দেরি হলে জটিলতা আরও বাড়তে পারে।
গ্লকোমা কী সারতে পারে?
আসলে গ্লকোমা এমন একটি অসুখ, যার সম্পূর্ণ নিরাময় সম্ভব নয়। এটি ধরা পড়ার পর চিকিৎসা শুরু হলেও ১০ শতাংশ ক্ষেত্রে দৃষ্টিশক্তি হারানোর আশঙ্কাও থেকে যায়। শিশু হতে বৃদ্ধ, এই রোগ যে কোনও মানুষের হতে পারে। তবে বাড়তি কোনও শারীরিক ঝুঁকি থাকলে রোগে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা আরও বেশি। যেমন পরিবারে কারও গ্লকোমা থাকলে, কারও ডায়াবেটিস কিংবা উচ্চ রক্তচাপের ইতিহাস থাকলে আরও সতর্ক থাকতে হবে। বিশেষ করে যারা স্টেরয়েডজাতীয় ওষুধ খান, ইনহেলার গ্রহণ করেন, তাদের ক্ষেত্রেও এই একই কথা প্রযোজ্য। আবার চোখে গুরুতর চোট কিংবা আঘাত লাগলেও গ্লকোমা হানা দিতে পারে অনেক সময়। তথ্যসূত্র: আনন্দবাজার পত্রিকা অনলাইন।
>>>>>>>>>>>>>>
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org