দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ আমাদের দীর্ঘদিনের অভ্যাসের কারণে রাস্তার ধারের মুখরোচক খাবারের টান এড়িয়ে যাওয়া মুশকিল হয়ে পড়ে। সঙ্গে শিশু সন্তান থাকলে তো কথাই নেই। চিপ্স, চকোলেট বা প্রক্রিয়াজাত খাবার খাওয়ার প্রবণতাও তখন বাড়তে থাকে। কিন্তু এইসব খাবার খেয়ে অজান্তেই আমরা ক্যান্সারের মতো মারণ রোগের ঝুঁকি বাড়াচ্ছি না তো?
আপনি যতোই ডায়েট করুন না কেনো, দোকানে রং-বেরঙের প্যাকেট ঝুলতে দেখলে বা খাবারের ভালো গন্ধ পেলে পেটের খাদক ইঁদুরকে আটকে রাখা মুশকিল। হয়তো সেইসব খাবারের কোনও রকম পুষ্টিগুণই নেই। খেলে উপকারের বদলে ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কাও থাকে বেশি। তা সত্ত্বেও রাস্তার ধারের মুখরোচক খাবারের টান এড়িয়ে যাওয়া প্রায় মুশকিল। সঙ্গে খুদে থাকলে তো আর কথাই নেই। চিপ্স, চকোলেট বা প্রক্রিয়াজাত খাবার খাওয়ার প্রবণতাও বাড়তে থাকে। তবে চিকিৎসক থেকে পুষ্টিবিদ সকলেই বলেছেন, সাধারণত মানুষ খুব পছন্দ করেন এমন বেশ কিছু খাবার রয়েছে, যা নিয়মিত খেলে ক্যান্সারে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা বেড়ে যাওয়া অস্বাভাবিক কিছুই নয়।
প্রক্রিয়াজাত মাংস
দোকান থেকে কেটে আনা টাটকা মাংস এনে খেলে ক্যান্সারে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা থাকে না। তবে এই মাংস থেকে বেকন, সসেজ, সালামি তৈরি করার সময় বিভিন্ন প্রক্রিয়ার মধ্যেদিয়েই যেতে হয়, নানা রকম রাসায়নিক যোগও করতে হয়। যা মলাশয়ের ক্যান্সারে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি আরও বাড়িয়ে দেয়।
প্যাকেটজাত খাবার
বিস্কুট, চিপ্স, কুকির মতো সাধারণ কিছু খাবারের মধ্যে ট্রান্স ফ্যাট, কার্বোহাইড্রেট ও কৃত্রিম নানা রাসায়নিক থাকে। এই ট্রান্সফ্যাটের সঙ্গে হার্ট ও ক্যান্সারের যোগও রয়েছে। এই ধরনের খাবার খেলে বাড়তে পারে স্থূলতাও। ক্যান্সারের অনেকগুলো কারণের মধ্যে সেটিও একটি কারণ।
চিনি দেওয়া পানীয়
আপনি কী অতিরিক্ত চিনি দেওয়া পানীয় খেতে ভালোবাসেন? এই ধরনের পানীয় স্থূলত্বের সমস্যা আরও বাড়িয়ে দিতে পারে। দীর্ঘদিন ধরে স্থূলত্বের সমস্যা ক্যান্সারে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কাও বাড়িয়ে দিতে পারে।
ক্যানের খাবার
দীর্ঘদিন পর্যন্ত বেক্ড বিন্স, কর্ন, অলিভ, মাশরুম ভালো রাখার জন্য বিসফেনল এ (বিপিএ) ব্যবহার করা হয়ে থাকে। শরীরে এই রাসায়নিক অতিরিক্ত হয়ে গেলে হরমোনের হেরফেরও ঘটে। স্তন ও প্রস্টেট ক্যান্সারে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা বাড়িয়ে তোলে এটি।
মাইক্রোওয়েভ করা পপকর্ন
সাধারণ দোকান হতে কিনে আনা প্যাকেটজাত ভুট্টার বীজ বিশেষ একটি দ্রবণে ভেজানো থাকে। তা থেকে খই তৈরি করার জন্য অনেকেই নির্দিষ্ট তাপমাত্রায় মাইক্রোওয়েভে সেগুলো গরম করতে দেন। গবেষণায় দেখা গেছে, ওই দ্রবণের মধ্যে পারফ্লুয়োরোঅক্টানোয়িক অ্যাসিড (পিএফওএ) নামক একটি উপাদানও থাকে। তা কিডনি, অণ্ডকোষ, অগ্ন্যাশয়ের ক্যান্সারে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কাও বাড়িয়ে তুলতে পারে। তথ্যসূত্র: আনন্দবাজার পত্রিকা অনলাইন।
>>>>>>>>>>>>>>
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org