দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ মোজাম্বিকের উত্তর উপকূলে একটি নৌকা ডুবে অন্তত ৯০ জনেরও বেশি মানুষের মৃত্যু ঘটেছে। নৌকাটিতে ১৩০ জন মানুষ ছিলেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। যারমধ্যে ৫ জনকে জীবিত উদ্ধার করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন নামপুলা প্রদেশের এক কর্মকর্তারা।
নামপুলার একজন মন্ত্রী জানিয়েছেন যে, দেশটিতে সাম্প্রতিক দেখা দেওয়া কলেরার প্রাদুর্ভাব থেকে বাঁচতে নিহতরা অন্য কোথাও পালিয়ে যাচ্ছিলেন। নিহতদের মধ্যে অনেক শিশুও রয়েছে। অতিরিক্ত যাত্রী তোলার কারণেই নৌকাটি ডুবে যায়।
সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি ভিডিওতে দেখা যায় যে, একটি সৈকতে বেশ কজনের লাশ পড়ে রয়েছে। তবে ওই ভিডিওর সত্যতা সম্পর্কে অবশ্য নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
নামপুলা প্রদেশের মন্ত্রী জেইমে নেটো বলেছেন, নৌকাটি অতিরিক্ত যাত্রী বহনের জন্য অনুপযুক্ত হওয়ায় এটি ডুবে যায়। এই দুর্ঘটনায় সেখানে ৯০ জন প্রাণ হারান। ভুক্তভোগীদের মধ্যে অনেক শিশুও রয়েছেন। উদ্ধারকর্মীরা এ পর্যন্ত ৫ জনকে জীবিত উদ্ধার করেছে। বাকিদের উদ্ধারের চেষ্টাও চালানো হচ্ছে। তবে সাগর উত্তাল থাকার কারণে এটি বেশ কষ্টসাধ্য হয়ে পড়েছে।
নামপুলা প্রদেশের এই মন্ত্রী জানিয়েছেন, কলেরা নিয়ে গুজব ছড়িয়ে পড়ায় ওই নৌকার বেশিরভাগ যাত্রী তাদের আবাসস্থল ছেড়ে একটি দ্বীপে আশ্রয় নেওয়ার জন্যই যাচ্ছিলেন।
স্থানীয় প্রশাসনের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, নৌকাডুবির প্রকৃত কারণ জানার জন্য তদন্ত চলছে।
গত বছরের জানুয়ারি থেকে দক্ষিণ আফ্রিকার বিভিন্ন দেশে কলেরার প্রাদুর্ভাব দেখা দেয়। যারমধ্যে নামপুলা প্রদেশ সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত একটি প্রদেশ।
উল্লেখ্য, ইউনিসেফের হিসাব মতে, চলামন প্রাদুর্ভাব গত ২৫ বছরের মধ্যে সবচেয়ে ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। ২০২৩ সালের অক্টোবর হতে মোজাম্বিকে অন্তত ১৩ হাজার ৭০০ জন কলেরায় আক্রান্ত হয়েছেন। যারমধ্যে ৩০ জন মারাও গেছেন।
>>>>>>>>>>>>>>
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org