দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ বাংলাদেশে যেমন নির্বাচনী বক্তব্য একে অপরকে প্রতিপক্ষ বানানো হয়, এবার ভারতের নির্বাচনেও সেই ধরনের কালচার দেখা যাচ্ছে। এবার নির্বাচনের এই সময় নরেন্দ্র মোদীকে চাঁদাবাজ বললেন রাহুল গান্ধী!
নির্বাচনী বন্ড নিয়ে এবার প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর দাবির জবাব দিয়েছেন কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী। কেরালায় ভোটের প্রচারে গিয়ে গতকাল (সোমবার) রাতে তিনি বলেন, ‘নির্বাচনী বন্ড আদৌ কোনো স্বচ্ছ কর্মসূচিই নয়, বরং বিশ্বের সবচেয়ে বড় চাঁদাবাজি চক্র। আর নরেন্দ্র মোদী হলেন এই চক্রেরই মাস্টারমাইন্ড।’
এর আগে (সোমবার) প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী সুপ্রিম কোর্টের আদেশে নির্বাচনী বন্ড বাতিলের সিদ্ধান্তে আদালতের নাম উল্লেখ না করে বলেন, ‘দেশকে কালো টাকার দিকে ঠেলে দেওয়া হলো।’
এই সময় তিনি আরও বলেন, ‘নির্বাচনী বন্ড না থাকলে কেও জানতেই পারতো না কোন সংস্থা, কতো টাকা কোন দলকে দিচ্ছে।’ -খবর এএনআইয়ের।
প্রতিবেদনটিতে আরও বলা হয়, নির্বাচনী বন্ডের স্বপক্ষে মত দিয়ে নরেন্দ্র মোদী বলেন, ‘ভোটে কালো টাকার ব্যবহার বন্ধ করার উদ্দেশ্যেই হলো নির্বাচনী বন্ড চালু করা হয়েছিল। আমি কখনই বলিনি যে, নির্বাচনী বন্ডের সিদ্ধান্ত পুরোপুরিভাবে ত্রুটিমুক্ত, তবে বিরোধী দলগুলো নির্বাচনী বন্ড নিয়ে মিথ্যে প্রচার করে আসছে।’
‘দেশকে কালো টাকার দিকে ঠেলে দেওয়া হয়েছে’- মোদীর এমন বক্তব্যের পরপরই কেন্দ্রীয় সরকার ও শাসকদলকে কড়া ভাষায় আক্রমণ করেন রাহুল গান্ধী। তিনি বলেছেন, ‘কীভাবে কেন্দ্রীয় এজেন্সির অভিযানের পরও শাসকদলের তহবিলে নির্বাচনী বন্ডের অনুদান ঢুকছে। কীভাবে নির্বাচনী বন্ডের মাধ্যমে টাকা পাওয়ার পর নির্দিষ্ট সংস্থাকে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে, তা এখন প্রকাশ্যে এসেছে।’
উল্লেখ্য যে, গত ১৫ ফেব্রুয়ারি নির্বাচনী বন্ড ব্যবস্থাকে অসাংবিধানিক ও ক্ষতিকারক বলে আখ্যা দিয়েছে দেশটির সুপ্রিম কোর্ট। পরে আদালত এসবিআইকে নির্দেশ দেয় যে, অবিলম্বে যেনো ওই বন্ড বন্ধ করে দেওয়া হয়। এইসময় শীর্ষ আদালতের নির্দেশে নির্বাচনী বন্ড সংক্রান্ত তথ্য নির্বাচন কমিশনে জমা দেয় এসবিআই।
এই ঘটনায় দেশটির কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামনের স্বামী এবং বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ পরাকলা প্রভাকর ভারতের নির্বাচনী বন্ডকে পৃথিবীর সবচেয়ে বড় দুর্নীতি বলে চিহ্নিত করেন।’
>>>>>>>>>>>>>>
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org