দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ ক্যানসারে চলে গেলেন জনপ্রিয় অভিনেতা অলিউল হক রুমি। তিন দশকের ক্যারিয়ারে বহু নাটক এবং সিনেমায় অভিনয় করেছেন তিনি। আজ (সোমবার) ভোরে মৃত্যু হয় তার।
ক্যানসারে আক্রান্ত অভিনেতা অলিউল হক রুমি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেলেন। তার এক সময়ের নাট্যদল থিয়েটারের সহকর্মী আপন আহসান জানান, ঢাকার ইবনেসিনা হাসপাতালে বেশ কিছুদিন ধরে ভর্তি ছিলেন রুমি। সোমবার ভোর ৪টার দিকে সেখানেই তার মৃত্যু ঘটে।
“ক্যানসার ধরা পড়ার পর মাসখানেক পূর্বে ভারতে গিয়েও চিকিৎসা করিয়েছেন তিনি। ঢাকার একটি হাসপাতালেও চিকিৎসা নেন তিনি। তবে সব চেষ্টা ব্যর্থ হয়ে না ফেরার দেশে চলে গেলেন এই গুনি অভিনেতা।”
তিন দশকের বেশি সময় ধরে অভিনয় করছেন রুমি। দীর্ঘ এই পথচলায় অভিনয় করেছেন বহু নাটক এবং সিনেমায়। তার মৃত্যুর খবরে সহকর্মীদের মধ্যেও নেমে এসেছে শোকের ছায়া। অনেকেই ফেইসবুকে এই অভিনয়শিল্পীকে নিয়ে শোক প্রকাশ করেছেন।
অভিনেত্রী ফারজানা চুমকি ফেইসবুকে লিখেছেন যে, “রুমি ভাই শেষ পর্যন্ত চলে গেলেন। ভালো থাকেন ওপারে। আমার জন্মদিনের প্রথম যে ফোনটি আসতো সেটা তার ফোন। সেই কলটি আর কখনও আসবে না। সাব্বিরের (অভিনেতা মীর সাব্বির) সাথে অভিমান কে করবে রুমি ভাই? ক্ষমা করেন ভাই।”
অভিনেতা জিয়াউল ফারুক অপূর্ব লিখেছেন, “টেলিভিশন নাটকের জনপ্রিয় মুখ অলিউল হক রুমি ভাই কিছুক্ষণ পূর্বে মৃত্যুবরণ করেন। ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন। সবাই তার জন্য দোওয়া করবেন।”
অভিনেত্রী রোকেয়া প্রাচী লিখেছেন, “রুমি ভাই বিদায়, আমার পরিচালনায় প্রথম ধারাবাহিক ‘সেলাই পরিবার’ নাটকের সময়টি মনে হচ্ছে খুব, আল্লাহ আপনাকে বেহেশত নসিব করুন।’
উল্লেখ্য, ১৯৮৮ সালে রুমির অভিনয়ের শুরু থিয়েটার বেইলি রোডের ‘এখনও ক্রীতদাস’ নাটকের মধ্যদিয়ে। একই বছর ‘কোন কাননের ফুল’ নাটকের মাধ্যমে ছোট পর্দায় অভিষেক ঘটে তার।
সাজেশন সেলিম, ঢাকা মেট্রো লাভ, বোকাসোকা তিনজন, ঢাকা টু বরিশাল, আমেরিকান সাহেব, সোনার শিকল, কমেডি ৪২০ মেকআপ ম্যান, প্রেসিডেন্ট সিরাজউদ্দৌলা এবং দীপ্ত টিভির (চলমান) নাটক মেগাসিরিয়াল বকুলপুর তার অভিনীত উল্লেখযোগ্য নাটক।
টেলিভিশনের পাশাপাশি রুমি অভিনয় করেছেন সিনেমাতেও। ২০০৯ সালে ‘দরিয়াপাড়ের দৌলতি’ চলচ্চিত্রে প্রথমবারের মতো অভিনয় করেন অলিউল হক রুমি।
>>>>>>>>>>>>>>
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org