দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ বর্তমানে পড়াশোনার জন্য দিনের বেশির ভাগ সময় কম্পিউটারে চোখ রাখতে হয়। তাতে করে চোখের ক্ষতি যা হওয়ার তা তো হয়েছেই। সঙ্গে দোসর হচ্ছে স্থূলত্ব।
সারাদিন বইয়ে মুখ গুঁজে পড়াশোনা করলেই যে সন্তান ভালো মানুষ হবে, এমন ধারণা মোটেও ঠিক নয়। পড়াশোনার সঙ্গে খেলাধুলা না করলে মানসিক বিকাশও বাধাপ্রাপ্ত হয়। তবে সেই খেলাধুলা যদি ‘ডিজিটাল’ মাধ্যমে আটকে হয়, তাহলে তো আরও এক বিপদ! এমনিতেই বর্তমানে পড়াশোনার জন্য দিনের বেশির ভাগ সময় কম্পিউটারে চোখ রাখতে হয়। তাতে করে চোখের ক্ষতি যা হওয়ার তা কিন্তু হয়েছেই। সঙ্গে দোসর হচ্ছে স্থূলত্ব। এই সব সমস্যা সামাল দিতে অনেকেই অভিভাবকই শিশুদের জিম, যোগচর্চা কেন্দ্রে ভর্তি করিয়ে দিয়ে থাকেন। এ ছাড়াও কী শরীরচর্চা করার কোনও মাধ্যম নেই?
সাঁতার
শরীরে রক্ত সঞ্চালন হতে শুরু করে গোটা শরীরে অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ স্বাভাবিক রাখতে সাঁতার দারুণ কাজের। ছোট থেকেই সাঁতার কাটার অভ্যাস করলে বয়ঃসন্ধির সমস্যাগুলো খুব সহজেই এড়িয়ে চলা যাবে। হরমোন ক্ষরণে সমতা রক্ষা করতেও সাহায্য করে এই ব্যায়ামটি। তাছাড়াও প্রাপ্তবয়স্কদের কার্ডিয়োভাসকুলার রোগ সংক্রান্ত জটিলতা, শরীরের নমনীয়তা স্বাভাবিক রাখতে সাহায্য করে এই সাঁতার।
সাইক্লিং
শরীর ও মন- দু’টিই ভালো থাকবে সাইকেল চালালে। সাম্প্রতিক সময় শরীরচর্চার মাধ্যম হিসাবে সাইক্লিং বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। শিশুদের মধ্যে স্থূলত্ব, টাইপ ২ ডায়াবেটিস-এ আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কাও রোধ করা যাবে, যদি নিয়মিত অন্তত আধাঘণ্টা সাইকেল চালানো যায়। এ ছাড়াও দেহের নিম্নাঙ্গ সচল রাখতে এবং পেট-কেমর-ঊরুর মেদ ঝরাতে এই ব্যায়ামটি বেশ কার্যকর।
দৌড়ানো
বছরে একটি দিন স্কুলের ক্রিড়া প্রতিযোগিতায় দৌড়ে প্রথম স্থান অধিকার করতে পারলো না বলে, সন্তানকে বকাবকি করার প্রয়োজন নেই। বরং সারাবছর অল্প অল্প করে দৌড়ানো অভ্যাস করাতে পারেন। তাতে ফিটনেস বজায় থাকবে ও দৌড়ানোর অভ্যাসও গড়ে উঠবে খুব সহজেই। তথ্যসূত্র: আনন্দবাজার পত্রিকা অনলাইন।
>>>>>>>>>>>>>>
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org