দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ দুই বছর পূর্বে মারামারি করে এক ব্যক্তিকে হত্যার দায়ে ইরানে এক ইহুদি যুবকের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হবে বলে জানা গেছে। ইরানের মানবাধিকার সংস্থা জানিয়েছে, হত্যাকাণ্ডের সময় আরভিন নাথানিয়াল গাহরামানি নামে এই যুবকের বয়স ছিলো ১৮ বছর। এই যুবকের বিরুদ্ধে ‘ইচ্ছাকৃত হত্যা’ সংঘটিত করার অভিযোগ উঠে ও পরবর্তীতে এটি প্রমাণিতও হয়।
টাইমস অব ইসরায়েল এক তথ্যে বলা হয়, অসলোভিত্তিক মানবাধিকার সংস্থা ইরান হিউম্যান রাইটস (আইএইচআর) জানিয়েছে যে, ওই ইহুদি যুবকের বাড়ি দক্ষিণপূর্বাঞ্চলের শহর কারমানশাহতে।
১৮ মে তার মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের কথা ছিলো। তবে তার পরিবারকে জানানো হয়েছে যে, এই মৃত্যুদণ্ডটি আগামী সোমবার (২০ মে) কার্যকর করা হবে।
তবে ইরানী সরকার বিরোধী সংশ্লিষ্ট সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে যে, আরভিন নাথানিয়াল গাহরামানি ছুরি হামলার শিকার হন। তখন তিনি নিজেকে বাঁচাতে এই হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছেন।
হত্যাকাণ্ডের শিকার হওয়া ব্যক্তির পরিবার যদি তাকে ক্ষমা করে দেন, শুধুমাত্র তাহলেই এই ইহুদি যুবক বেঁচে যেতে পারেন। তবে এখন পর্যন্ত এই হত্যাকারীকে ক্ষমা করার ক্ষেত্রে অস্বীকৃতি জানিয়েছে হত্যাকারী ব্যক্তির পরিবারের সদস্যরা।
১৯৭৯ সালের ইসলামী বিপ্লবের মাধ্যমে ইরানে ইসলামিক শাসন কায়েম হয়। ওই বিপ্লবের পূর্বে ইরানে ১ লাখ ইহুদির বসবাস ছিলো। ২০১৬ সালে চালানো সর্বশেষ আদম শুমারির তথ্য অনুযায়ী জানা যায়, ইরানে ইহুদির সংখ্যা ১০ হাজারেরও নিচে নেমে এসেছে। বিশ্বে বর্তমানে সবচেয়ে বেশি ইহুদি বসবাস করে ইসরায়েলে।
আন্তর্জাতিক সংস্থা অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের তথ্য মতে, ২০২৩ সালে ইরানে ৮৫৩ জনের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়েছিলো, যা ২০১৫ সালের পর সর্বোচ্চ মৃত্যুদণ্ড।
>>>>>>>>>>>>>>
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org