দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ সম্প্রতি আইফোনের অপারেটিং সিস্টেম ‘আইওএস’-এর জন্য কয়েকটি নতুন ফিচার দেখায় অ্যাপল। যারমধ্যে রয়েছে এমন এক অভিজ্ঞতা, যা গাড়িতে ফোন ব্যবহারের সময় যাত্রীদের অসুস্থ হওয়ার প্রবণতা বন্ধ করতে সাহায্য করে!
গত সপ্তাহে ‘ভিয়েকল মোশন কিউস’ নামে একটি নতুন ফিচার ঘোষণা করেছে টেক জায়ান্ট কোম্পানিটি, যা তৈরি হয়েছে চলন্ত গাড়িতে যাত্রীর ‘মোশন সিকনেস’ কিংবা গতিবিধির অসুস্থতা কমানোর লক্ষ্যেই।
এই ফিচারটি চালু করলেই স্ক্রিনের বিভিন্ন প্রান্তে কিছু ‘অ্যানিমেটেড ডট’ দেখা যাবে, যেগুলো মূলত গাড়ির গতিবিধির সঙ্গে তাল মিলিয়ে ঘুরতে থাকে। অ্যাপল বলছে যে, এর মাধ্যমে ফোনের সেন্সর সংশ্লিষ্ট জটিলতাও কমে আসবে।
আর এইসব চলমান বিন্দু ফোনের কাজে হস্তক্ষেপ না করে গাড়ির গতিকে অনুকরণ করবে। যে কারণে, গাড়ির পেছনের সিটে বসে ব্যবহারকারীরা আরও আরামে স্ক্রিনের লেখা পড়তে কিংবা গেইমও খেলতে পারবেন।
ইতিপূর্বের এক গবেষণায় উঠে এসেছিলো, মোশন সিকনেস মূলত দেখা যায় মানুষের দৈহিক অনুভূতির সঙ্গে চোখ দিয়ে দেখা দৃশ্যের অমিল ঘটলেই।
নতুন ফিচারটি ১৬ মে ‘গ্লোবাল অ্যাক্সেসিবিলিটি অ্যাওয়ারনেস ডে’র পূর্বে ঘোষণা করা বিভিন্ন আপডেটেরই অংশ। এ বছরের শেষ নাগাদ আইফোন ১৬’র সঙ্গে আইওএস ১৮’র অংশ হিসেবে এটি প্রকাশ পেতে পারে বলেও এক প্রতিবেদনে তথ্য দিয়েছে ব্রিটিশ দৈনিক ইন্ডিপেন্ডেন্ট।
এতে আইফোন এবং আইপ্যাডের সেন্সর ব্যবহার করা হয়, যা দিয়ে ব্যবহারকারী কখন চলমান গাড়িতে রয়েছেন, তা শনাক্তও করা যায়। ফোনের কন্ট্রোল সেন্টার থেকেও ফিচারটি চালু কিংবা বন্ধ করা যাবে।
এই নতুন মোশন সিকনেস ফিচারের পাশাপাশি আইফোন ও আইপ্যাডে ‘আই ট্র্যাকিং’ নামে সুবিধা আনতে যাচ্ছে অ্যাপল, যার মাধ্যমে শারীরিক প্রতিবন্ধী ব্যবহারকারীরা শুধুমাত্র চোখ দিয়েই ডিভাইসটি নিয়ন্ত্রণ করতে পারবেন।
অ্যাপল বলছে যে, এই ফিচারটি এআইয়ের মাধ্যমে চলবে এবং ফোনের সামনের ক্যামেরা ব্যবহার করবে। এটির মাধ্যমে ব্যবহারকারীরা শুধু নিজের চোখ ব্যবহার করে গাড়ির গতিবিধি ‘নেভিগেট’ করতে ও বিভিন্ন কনটেন্টের সঙ্গে সংযোগ স্থাপন করতে এবং স্ক্রিনের ওপর ও নিচে সোয়াইপও করতে পারবেন।
‘মিউজিক হ্যাপটিক্স’ নামে আরও একটি নতুন ফিচার আনতে যাচ্ছে অ্যাপল। এটিতে ব্যবহার করা হয়েছে আইফোনের ‘ট্যাপটিক ইঞ্জিন’ নামে সুবিধাটি, যার মাধ্যমে সংগীতের তালে তালে ডিভাইসে কম্পনও সৃষ্টি হবে।
শ্রবণ প্রতিবন্ধী ব্যবহারকারীদের ফোনে সংগীত উপভোগের নতুন উপায়ও দেবে এই ফিচারটি। ইতিপূর্বে স্টার্টআপ কোম্পানি ‘নাথিং’ নিজেদের ফোনে একই ধরনের ফিচার এনেছে বলেও প্রতিবেদনে উল্লেখ করেছে ইনডিপেন্ডেন্ট।
তাছাড়াও, ১০ জুন নিজস্ব আয়োজন ডব্লিউডব্লিউডিসি’তে আইওএস ১৮’র আসন্ন ফিচারগুলোও ঘোষণা দিতে পারে অ্যাপল, যেখানে বড় ভূমিকা রাখতে পারে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা প্রযুক্তি এআই।
>>>>>>>>>>>>>>
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org