দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ সাম্প্রতিক সময় তরুণ প্রজন্মের মধ্যে কার্বোহাইড্রেট বাদ দিয়ে প্রোটিনজাতীয় খাবার খাওয়ার প্রবণতা যেনো বাড়ছে। তবে বেশি প্রোটিন খেলে অন্য কোনও সমস্যা বেড়েও যেতে পারে।
শারীরবৃত্তীয় কাজকর্মগুলো সঠিকভাবে পরিচালনা করতে হলে প্রোটিন খাওয়া দরকার। ওজন ঝরাতে, পেশির গঠনে প্রোটিনের যথেষ্ট পরিমাণে ভূমিকা রয়েছে। তাই সাম্প্রতিক সময় তরুণ প্রজন্মের মধ্যে কার্বোহাইড্রেট বাদ দিয়ে প্রোটিনজাতীয় খাবার খাওয়ার প্রবণতা যেনো বাড়ছে। তবে অনেকেই বলেন যে, বেশি প্রোটিন খেলে নাকি কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা আরও বাড়ে! এই কথা কী আদৌ ঠিক?
এই বিষয়ে ভারতের নেটপ্রভাবী ও পুষ্টিবিদ পূজা ভাবে বলেছেন, প্রোটিনের সঙ্গে সরাসরি কোষ্ঠকাঠিন্যের কোনও যোগই নেই। তবে বেশি করে প্রোটিন খেতে গিয়ে যদি ফাইবারের অভাব হয়ে থাকে, তাহলে মুশকিল। ডায়েটে শুধু মাছ, মাংস, ডিম বা দুধ রাখলে শরীরে ফাইবারের অভাব হতেই পারে। তাই প্রোটিনের সঙ্গে ফল, সব্জি, বাদাম, বীজ ও দানাশস্য জাতীয় খাবার খাওয়ার প্রয়োজনীয়তাও রয়েছে। এই ধরনের খাবার কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে থাকে।
কার শরীরে কতোটুকু প্রোটিন দরকার?
এই বিষয়ে পুষ্টিবিদরা বলেছেন, শারীরবৃত্তীয় কাজকর্মগুলো সঠিকভাবে পরিচালনা করার জন্য প্রয়োজনীয় মোট ক্যাালোরির ১৫ হতে ২০ শতাংশ প্রোটিন হতে পেলেই হলো। প্রোটিনের চাহিদা পূরণ করতে ডিম, মাছ, দুধ খাওয়া যেতে পারে। তবে যারা আমিষজাতীয় খাবার খান না, তাদের প্রোটিনের ঘাটতি পূরণ করা বেশ কঠিন হয়ে পড়ে। উদ্ভিজ্জ প্রোটিন শরীরের জন্য ভালো। তবে আমিষ খাবারে সাধারণত যে পরিমাণ অ্যামাইনো অ্যাসিড থাকে, তা নিরামিষ খাবারে মোটেও থাকে না। বিশেষ করে যারা শরীরচর্চা করেন, তাদের প্রোটিন দরকার। তবে কার শরীরে কতোটুকু প্রোটিন দরকার, তা নির্ভর করবে ওই ব্যক্তির কাজের ধরন ও খাবারের পছন্দ-অপছন্দের উপরে। নির্ধারিত পরিমাণের চেয়ে বেশি প্রোটিন বেশি খেলে কোষ্ঠকাঠিন্য বা হজমের সমস্যা, দুই’ই হতে পারে বলে মত দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। তথ্যসূত্র: আনন্দবাজার পত্রিকা অনলাইন।
>>>>>>>>>>>>>>
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org