দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ আজ আপনাদের জন্য রয়েছে এমন এক দ্বীপের গল্প যে দ্বীপের মানুষরা একশো বছর পর্যন্ত বেঁচে থাকে! তাহলে কোথায় সেই দ্বীপ? আসুন সেটি আজ জেনে নিই।
ইকারিয়া হলো বিশ্বের পাঁচ ‘ব্লু জোন’ এর একটি। ‘ব্লু জোন’ বলতে সেইসব অঞ্চলকেই বোঝায় যেখানকার মানুষদের মধ্যে শতবর্ষী হওয়ার হার উল্লেখযোগ্যহারে বেশি। এজিয়ান সাগরের পূর্ব অংশের গ্রীকের ছোট এই দ্বীপটির স্থায়ী বাসিন্দা ৮ হাজারের কিছু বেশি।
এখানে অন্যান্য অনেক জায়গার তুলনায় ক্রনিক ডিজিজ কিংবা দীর্ঘস্থায়ী রোগের হারও অনেক কম। পৃথিবীর যে ক’টি স্থানের বাসিন্দারা দীর্ঘ জীবন লাভ করেন গড় আয়ুর বিচারে এখানকার জনগোষ্ঠী তারমধ্যে অন্যতম।
আসলে এক তৃতীয়াংশ ইকারিয়ান ৯০ বছরের বেশি বেঁচে থাকেন। দৃঢ় সামাজিক এবং পারিবারিক বন্ধন, নিয়মিত শরীর চর্চা ও প্রয়োজন মাফিক ঘুম ইত্যাদি এই দ্বীপের বাসিন্দাদের শতবর্ষী হওয়ার মূল কারণ হিসেবে মনে করা হয়।
আরও একটি গুরুত্বপূর্ণ ফ্যাক্টর হলো, তাদের নিত্যদিনের খাদ্যাভ্যাস। অর্থাৎ, তারা কী ধরনের খাবার গ্রহণ করেন। মেডিটারেনিয়ান ডায়েট কিংবা ভূমধ্যসাগরীয় অঞ্চলের খাদ্যাভ্যাস স্বাস্থ্যকর হিসেবেই বেশি সুপরিচিত।
এই ডায়েটের সঙ্গে মিল রয়েছে ইকারিয়া ডায়েটেরও। এতেও স্বাস্থ্যকর চর্বি, প্রচুর আঁশ কিংবা ফাইবার ও পুষ্টিগুণ সম্পন্ন খাবার অন্তর্ভুক্ত থাকে। এই খাদ্যাভ্যাস মূলত ব্যাপকভাবে উদ্ভিজ্জনির্ভর। বাদাম, আলু, লেবু, শাকসবজি, শস্য ও বীজেও আধিক্য থাকে সেখানে। ফ্যাট কিংবা চর্বির প্রধান উৎস হিসেবেও থাকে জলপাই তেল।
দই, পনির, মাছ, পোল্ট্রি ও রেড ওয়াইন পরিমিত পরিমাণ খাওয়া হয়। আর লাল মাংস খাওয়া হয় খুবই সীমিত পরিমাণে, মাসে মাত্র কয়েকবার। দেখা গেছে যে, এমন নিয়ম মেনে খাবার নির্বাচনে অনেক রোগের ঝুঁকিও কমে যায়।
আর তাই হ্রাস পায় হৃদরোগ, স্ট্রোক, ডায়াবেটিস, উচ্চ কোলেস্টেরল, স্থূলতা ও উচ্চ রক্তচাপের মতো রোগের নেপথ্য কারণগুলোও। আর সে কারণেই এদের দীর্ঘ জীবনের কথা উঠে আসে। তথ্যসূত্র: বিবিসি।
>>>>>>>>>>>>>>
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org