দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ সকালে চায়ের সঙ্গে অনেক খাবারই খাওয়া মোটেও ঠিক নয়। তাতে শরীরের ক্ষতি হতে পারে। কোন খাবারগুলো জেনে রাখলে বিপদ এড়ানো সম্ভব।
দিনের শুরুতেই অর্থাৎ সকালে কী খাচ্ছেন, তার উপর নির্ভর করে সারাদিন শরীরের হাল আসলে কেমন থাকবে। চিকিৎসক থেকে পুষ্টিবিদ, সকলেই তাই স্বাস্থ্যকর খাবার খেয়ে দিন শুরু করার কথাও বলেন। সারাদিনের কাজের ব্যস্ততায় ও দৌড়ঝাঁপে আলাদা করে শরীরের খেয়াল রাখার সময়ই হয়ে ওঠে না। সকালে বাড়ি থেকে বের হওয়ার পূর্বে তাই ভালো করে খাওয়া-দাওয়া করা উচিত। ঘুম থেকে উঠে অনেকেই গোসলঘরে ঢুকে পড়েন। বিছানায় বসে মৌজ করে চা বা কফির কাপে চুমুক দেওয়ার সুযোগও হয় না। অনেকেই তাই সকালে নাস্তা খাওয়ার সময় চায়ে গলা ভিজিয়ে নেন। তবে চায়ের সঙ্গে অনেক খাবারই খাওয়া মোটেও ঠিক নয়। এতে শরীরের ক্ষতি হয়। কোন খাবারগুলো জেনে রাখলে বিপদ এড়ানো সম্ভব।
ভাজাভুজি
অফিস থেকে ফিরেই চপ, শিঙা়ড়ার সঙ্গে দুধ চা খেতে একেবারে মন্দ লাগে না। তবে দুধ চা এবং তেলেভাজার যুগলবন্দি মোটেও স্বাস্থ্যকর নয়। ভাজাভুজিতে সোডিয়ামের পরিমাণ অনেক বেশি। দুধ চায়ের সঙ্গে সোডিয়াম মিশে গিয়েও হজমের গোলমাল বাধাতে পারে। তখন বিপাকহারও খানিকটা ধীর হয়ে যায়।
চিজ়
পিৎজ়া বা বার্গারের সঙ্গে ভুলেও কখনও দুধ চা খাবেন না। কারণ এই ধরনের জাঙ্কফুডে চিজ় ও মেয়োনিজ থাকে। যে কারণে দুগ্ধজাত খাবার দুধ চায়ের সঙ্গে না খাওয়াই ভালো। চিজ়, মেয়োনিজ় ও দুধ চা— এই ৩টি একসঙ্গে খেলে হিতে বিপরীতও হতে পারে।
সাইট্রাসজাতীয় ফল
দুধ চা খাওয়ার পূর্বে বা পরে ভুলেও টকজাতীয় কোনও ফল খাবেন না। দুধ চা ও ফল কয়েক মুহূর্তের তফাতে খেলে মারাত্মক বদহজমও হতে পারে। কারণ হলো, ফলে অ্যাসিডের পরিমাণ থাকে বেশি। তার সঙ্গে দুধ চা খেলে গ্যাস হয়।
ওট্স
স্বাস্থ্য সচেতন, তাই ওট্স দিয়ে তৈরি মুখরোচক ‘টা’ খেয়ে থাকেন কফির সঙ্গেই। খাসির মাংসের মতোই ওট্সের মধ্যেও রয়েছে জিঙ্ক। তাই এই খাবারটিও ব্রাত্য।
ডিম
ডিমে প্রোটিনের পরিমাণ বেশি হলেও জিঙ্কের পরিমাণ কিন্তু কম নয়। তাই পুষ্টিবিদরা এই খাবারটিও কফির সঙ্গে খেতে বারণ করে থাকেন। সকালে অনেকেই ডিমসেদ্ধ খেয়ে থাকেন। সেইক্ষেত্রে কফি ও ডিমসেদ্ধর মধ্যে কোনও একটিকে বেছে নিতে হবে আপনাকে। তথ্যসূত্র: আনন্দবাজার পত্রিকা অনলাইন।
>>>>>>>>>>>>>>
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org