দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ এটি হলো সোনার প্রলেপ দেওয়া রুপার গয়না। দাম মাত্র ৩০০ রুপি। সুযোগ পেলে কেও কিছুটা বেশি দামেও বিক্রি করে থাকেন। তবে এক বিদেশিনিকে পেয়ে ওই গহনা ৬ কোটিতে বিক্রি করেছেন এক গয়না বিক্রেতা! যা বাংলাদেশি টাকায় প্রায় সাড়ে ৮ কোটি টাকা।
ভারতের রাজস্থানের জয়পুরে ঘটে যাওয়া এই প্রতারণায় তোলপাড় শুরু হয়েছে পুরো বিশ্বে। -খবর এনডিটিভি।
ভারতের রাজস্থানে বেড়াতে আসেন মার্কিন নাগরিক চেরিশ। সেখান থেকে জয়পুরের জহুরি বাজার হতে ৬ কোটি রুপিতে অলংকারটি কেনেন তিনি। তারপর দেশে ফিরে যান চেরিশ। গত এপ্রিল মাসে ভারত থেকে কেনা ওই অলংকার নিয়ে আমেরিকার এক প্রদর্শনীতে যান চেরিশ। সেখানে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে দেখা যায় যে, এতো টাকা খরচ করে যে অলংকার তিনি কিনেছেন, তার পুরোটাই ছিলো নকল। এর প্রকৃত দাম হলো ৩০০ রুপির আশপাশে। যা বাংলাদেশী টাকায় ৪২০ টাকা!
বিষয়টি নিয়ে চেরিশ এতোটাই হতাশাগ্রস্ত হয়ে পড়েন যে, তিনি পুনরায় ভারতে চলে আসেন। সেখানে ওই অলংকারের দোকানে গেলে দোকানমালিক রাজেন্দ্র সোনি এবং তার ছেলে গৌরব চেরিশের সঙ্গে তর্কে লিপ্ত হয়ে পড়েন।
গত ১৮ মে এই বিষয়ে স্থানীয় মানক চক পুলিশ স্টেশনে অভিযোগ করেন চেরিশ। তবে পাল্টা অভিযোগ দায়ের করে বসেন রাজেন্দ্র সোনি। যে কারণে বিষয়টির কোনো সুরাহাই হচ্ছিল না।
শেষ পর্যন্ত উপায়ান্তর না দেখে ভারতে থাকা মার্কিন দূতাবাসের দ্বারস্থ হন চেরিশ। তারা বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গেই নিয়ে হস্তক্ষেপ করলে তখন টনক নড়ে রাজস্থান পুলিশের। অবস্থা বেগতিক বুঝে দোকান মালিকরা পালিয়ে যায়।
রাজস্থান পুলিশের মুখপাত্র বজরং সিং শেখাওয়াত জানিয়েছেন, তদন্ত করে দেখা গেছে যে, রুপার অলংকারে স্বর্ণের প্রলেপ দিয়ে বিক্রি করা হচ্ছিল, যার দাম কোনোভাবেই তিনশ রুপির বেশি হতেই পারে না। তবে ভুয়া সার্টিফিকেট দেখিয়ে ওই অলংকার চেরিশের কাছে বিক্রি করা হয়েছিলো ৬ কোটি রুপিতে।
পুলিশ দোকান মালিককে ধরতে না পারলেও অলংকারের ভুয়া সার্টিফিকেট দেওয়া নন্দ কিশোর নামে অপর এক ব্যক্তিকে গ্রেফতার করেছে।
>>>>>>>>>>>>>>
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org