দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ শরীর ফোলা ফোলা ভাবের নানা কারণ থাকতেই পারে। যারমধ্যে অন্যতম হতে পারে অতিরিক্ত লবণ খাওয়া। কী কী কারণে হতে পারে এই সমস্যা? সমাধানের উপায় কী?
কেবলমাত্র মেদই নয়, অনেক সময় পানি জমেও ফুলে থাকে শরীর। রোগা হওয়ার দৌড়ে শামিল হলে এই বিষয়েও আপনাকে খেয়াল রাখতে হবে। ওজন কমিয়ে নির্মেদ চেহারা চাইলে শুধু বাড়তি মেদ ঝরালেই চলবে না, পানি কিংবা তরল জমে ফোলা ফোলা ভাব দেখা দেয়, সেটিও দূর করতে হবে। নানা কারণে শরীরে ফোলা ফোলা ভাব দেখা দিতেই পারে। যেমন- হরমোনের ভারসাম্যের অভাব হওয়া, ডায়েটে ত্রুটি কিংবা শরীরচর্চার অভাব। তাছাড়াও অন্য কারণও থাকতে পারে। তবে কয়েকটি সহজ উপায়ে সমস্যার সমাধান করা সম্ভব।
# পানির অভাবেও অনেক সময় শরীরে পানি জমতে পারে। আমাদের প্রতিদিনের শারীরবৃত্তীয় ক্রিয়াকলাপ সুষ্ঠুভাবে সম্পাদনের জন্য পর্যাপ্ত পানির প্রয়োজন। সাধারণ, একজন সুস্থ প্রাপ্তবয়স্ক মানুষকে দিনে দু’লিটার পানি পানের পরামর্শ দিয়ে থাকেন চিকিৎসকরা। তবে পানি কম খেলে, নিজের প্রয়োজনে শরীর তা জমিয়ে রাখার চেষ্টাও করে। যে কারণে ফোলা ফোলা ভাব দেখা দিতে পারে। পর্যাপ্ত পানি পানে শরীর থেকে অতিরিক্ত সোডিয়াম এবং তরল বেরিয়ে যায়।
# অতিরিক্ত লবণ খেলে, শরীরে উচ্চ মাত্রায় সোডিয়াম গেলে এই ধরনের সমস্যা হতে পারে। প্রথমেই কাঁচা লবণ খাওয়া ছাড়তে হবে। পাশাপাশি, ভাজাভুজি, বার্গার, পিৎজ়া জাতীয় খাবার, প্রক্রিয়াজাত খাবার খেলেও শরীরে ফোলা ফোলা ভাব দেখা দিতে পারে। শরীরের পক্ষে ক্ষতিকর এই ধরনের খাবারগুলো এড়িয়ে যাওয়াই উত্তম।
# সোডিয়ামের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখতে, শরীর থেকে ফোলা ফোলা ভাব দূর করতে পটাসিয়াম যুক্ত খাবার খাওয়াটা জরুরি। কলা, পেঁপে, গাজর, পালং, মিষ্টি আলু, বিভিন্ন ধরনের বাদাম খাদ্যতালিকায় রাখতে হবে।
# এছাড়াও ম্যাগনেশিয়াম সমৃদ্ধ খাবার শরীরে তরলের ভারসাম্য নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে। বিভিন্ন ধরনের শাকসব্জি, বিন্স, বাদাম, কিনোয়াতে এই ম্যাগনেশিয়াম থাকে। এই ধরনের খাবার সুস্বাস্থ্যের জন্য খুবই জরুরি।
# সাধারণ শরীরচর্চার কারণে বাড়তি জলীয় অংশ ঘামের মাধ্যমে বেরিয়ে যায়। যারা একেবারেই শরীরচর্চা করেনই না, অতিরিক্ত চিনি এবং লবণ যুক্ত খাবার খান, তাদেরই শরীরে সাধারণত ফোলা ফোলা ভাব দেখা দেয়। নিয়মিত শরীরচর্চা তরলের ভারসাম্য সঠিক রাখতেও সাহায্য করে।
# ডিটক্স ওয়াটারও শরীর থেকে টক্সিন এবং অপ্রয়োজনীয় তরল বের করে দিতেও সাহায্য করে। আঙুর, শসা, স্ট্রবেরি, লেবু কেটে পানিতে মিশিয়ে ডিটক্স পানীয় তৈরি করেও নিতে পারেন। তথ্যসূত্র: আনন্দবাজার পত্রিকা অনলাইন।
>>>>>>>>>>>>>>
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org