দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ ‘শেয়ালের কাছে মুরগি বর্গা’ প্রবাদটিকে মিথ্যা প্রমাণ করলেন খামারি আজিজুল হক। তার বাড়িতে পরিবারের সদস্যের মতোই হাঁস-মুরগি-ছাগলের সঙ্গে বসবাস শেয়ালেরও। ভয় পায় না কেও কাওকে, খাওয়াও একই পাত্রে। নেত্রকোণার কলমাকান্দা উপজেলার নয়নকান্দি গ্রামের খামারে ঘটেছে এমন বিস্মিত ঘটনা। সৃষ্টি হয় চাঞ্চল্য।
আমরা সবাই জানি শেয়াল দেখলেই প্রাণ বাঁচাতে ভয়ে পালাতে থাকে গৃহপালিত পশু-পাখি। তবে এবার বিস্ময়কর হলো, একই বাড়িতে সেই শেয়ালের সঙ্গেই লালিত-পালিত হচ্ছে বেশকিছু হাঁস-মুরগি ও ১২টি ছাগল।
খামারি আজিজুল হক জানিয়েছেন, একই সঙ্গে একই পাত্রের খাবারও খায় এই প্রাণিগুলো।
আজিজুল হক বলেছেন, “হাঁস-মুরগী-ছাগল একসঙ্গেই থাকে কোনো ক্ষয়ক্ষতিও করেনা। শেয়ালটি সময় হলেই খাবার খায়।”
শখের বশেই শেয়ালটি পালন করছেন আজিজুল হক। অন্যগুলোর সঙ্গে সখ্যতা গড়ে নিয়েছে সে নিজেই।
খামারি জানালেন, “আড়াই-তিনমাসের বয়স হতেই একসঙ্গে বসবাস করছে শেয়ালটি।”
আজিজুলের বোন বলেছেন, “বছরে ৪-৫টি ছাগল নিয়ে যেতো অন্য শিয়ালগুলো। এটি পালন করার পর থেকে একটা ছাগলেরও কোনো ক্ষতি হয়নি।”
গ্রামবাসীরা জানিয়েছেন, অন্য প্রাণিগুলোর সঙ্গে ঘুরে বেড়ালেও কারও ক্ষতি করে না শেয়ালটি।
গ্রামবাসীরা জানিয়েছেন, “সে নিজের পোলাপানের মতো করেই পালছে। শেয়ালটি যে কোনো ক্ষতি করেছে এটা আমাদের জানা নাই। বিভিন্ন বাড়িতে যায় সে।”
বাড়িটির নামও বর্তমানে শেয়ালবাড়ি। হাঁস-মুরগি-ছাগলের সঙ্গে শেয়ালের বসবাস দেখে বিস্মিত মানুষরা দূর-দূরান্ত থেকে ছুটে আসছেন এই বাড়িটিতে।
তবে বন্যপ্রাণি হওয়ায় রোগ-জীবাণু হতে বাঁচতে শেয়ালটিকে দিতে হবে জলাতঙ্কের টিকা। এই বিষয়ে কলমাকান্দা ভেটেরিনারী সার্জন আনোয়ার পারভেজ বলেন, “শেয়ালটিকে অবশ্যই ভ্যাকসিন দিতে হবে। বন অধিদপ্তরের অনুমোদনের একটি বিষয়ও রয়েছে।
সংবাদ মাধ্যমকে উপজেলা প্রাণিসম্পাদ কর্মকর্তা কনিকা সরকার জানিয়েছেন, “যদি ভ্যাকসিন না দেওয়া হয় তবে কাওকে কামড় দিলে সেখান থেকে জলাতঙ্কের রোগ ছড়ানোর শঙ্কাও থাকে।”
>>>>>>>>>>>>>>
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org