দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ হয়তো অনেকেই জানেন মাথার ত্বক পরিষ্কার বা চুলে শ্যাম্পু করার সময় স্ক্যাল্প ব্রাশটির প্রয়োজন পড়ে। বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে যে, চুলের ঘনত্ব বৃদ্ধি করতে এই জিনিসটির অনেক ভূমিকা রয়েছে।
আকারে বেশ ছোট, দেখতে অনেকটা গোলাকার বিশেষ এক ধরনের চিরুনি দিয়ে চুল আঁচড়াতেন আশির দশকের পুরুষরা। তর্জনি ও মধ্যমা নয়তো মধ্যমা ও অনামিকায় আটকানো থাকতো সেই চিরুনির গোল আংটা। আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে ঘণ্টার পর ঘণ্টা তেল চপচপে চুলে এক হাতের তালু ও অন্য হাতের আঙুলে আটকানো ওই ব্রাশ দিয়ে বিশেষ কায়দায় তারা চুল (ব্যাক ব্রাশ) আঁচড়াতেন। তাদের বাসনা একটিই। পাতলা ফিনফিনে চুল যেনো অভিনেতা জিতেন্দ্র বা বিনোদ খান্নার মতো হয়।
এই প্রজন্মের স্ক্যাল্প ব্রাশ দেখতে অনেকটাই সেই ধরনের চিরুনির মতো হলেও কাজ কিন্তু একেবারেই ভিন্ন। তাড়াহুড়ো করে কাজে বেরোনোর সময় প্রায় দিনই শ্যাম্পু করা হয়। তবে পার্লারে গেলে সেখানকার দক্ষ কর্মীরা যেভাবে শ্যাম্পু করিয়ে দেন, তেমনটি একার পক্ষে কখনও সম্ভব নয়। যে কারণে মাথার ত্বকে জমতে থাকে মৃত কোষ এমনকি ধুলো-ময়লাও। কখনওবা তেল, সিরাম, শ্যাম্পু বা কন্ডিশনারের অংশ জমেও মাথার ত্বকে পৃথক করে পাতলা চামড়ার একটি পরত তৈরিও করে ফেলতে পারে। এটি শুধুমাত্র আঙুলের ছোঁয়ায় দূর করা সম্ভব না।
দিনের পর দিন এমন অবস্থা চলতে থাকলে চুলের সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয়। সম্ভাব্য যে কারণে চুল পড়তে পারে, তেমন কিছু নজরে আসে না। অথচ নামীদামি প্রসাধনী ব্যবহার করেও চুল পড়া রোধ করা সম্ভব নয়।
এই বিষয়ে কেশচর্চা বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, এই ধরনের সমস্যার সহজ সমাধানই হলো স্ক্যাল্প ব্রাশ। নরম সিলিকন কিংবা নমনীয় প্লাস্টিকের তৈরি ব্রিসল্স-যুক্ত এই ব্রাশটি মাথার ত্বক হতে নোংরা ধুলো-ময়লা, খুশকি কিংবা মৃতকোষ দূর করতে সাহায্য করে। ব্রাশের উপর শ্যাম্পু দিয়ে ভিজে চুলে হালকা হাতে অনেকটা চিরুনির মতো করেই ব্রাশটি চালনা করতে হয়। বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে, চুলের ঘনত্ব বৃদ্ধি করতে এই জিনিসটির ভূমিকাও রয়েছে। নিয়মিত এই জিনিসটি ব্যবহার করলে ফাঁকা সিঁথিতে সত্যিই কী নতুন চুল উঁকি দেবে?
স্ক্যাল্প ব্রাশ ব্যবহার করলে কি সত্যিই চুলের মান ভাল হয়?
স্ক্যাল্প ব্রাশে অনেকটা চিরুনির মতোই ছোট ছোট দাঁত থাকে, তাই মাথার তালুতে সঞ্চালন করলে রক্ত চলাচল ভালো হয়। শ্যাম্পু করার সময় মাথার ত্বকে জমে থাকা অবাঞ্ছিত নোংরা খুব সহজেই ধুয়ে ফেলা যায়। পরিষ্কার মাথার ত্বক নতুন চুল গজানোর ক্ষেত্রেও অনুকূল পরিবেশ তৈরি করে। তবে পার্লারে গিয়ে শ্যাম্পু করার সময় এমন ধরনের ব্রাশ সচরাসর ব্যবহার করতে দেখা যায় না। সেই ক্ষেত্রে মাথার ত্বক পরিষ্কার করার ‘অস্ত্র’ হাতের আঙুলই। প্রায় ২৫ বছর ধরে পার্লারে কাজ করছেন সোনালি তরফদার। সেই অভিজ্ঞতা থেকে বলেছেন, “এখন অনেকেই এই ধরনের স্ক্যাল্প ব্রাশ ব্যবহারও করছেন। তাতে যে নতুন চুল গজাবেই এমনটি কিন্তু হলফ করে বলা যায় না। প্রশ্ন হলো যদি পরিষ্কার এবং পরিচ্ছন্নতারই হয়, তাহলে আমি বলবো সময় নিয়ে শ্যাম্পু করার জন্র। এক বারের জায়গায় দু’বার শ্যাম্পু করতে হবে। তাতেও মাথার ত্বক পরিষ্কার থাকবে। এটি ব্যবহারের সঠিক নিয়ম না জানলে উল্টো আরও চুলের ক্ষতি হতে পারে। ভিজে চুলের গোড়া এমনিতেই অনেকটা নরম থাকে। সঠিক পদ্ধতি না জেনে ব্রাশ ঘষলে চুল পড়ার পরিমাণ উল্টো আরও বেড়েও যেতে পারে। চুলে জট পড়ে যাওয়ার আশঙ্কাও একেবারে উড়িয়ে দেওয়া যায় না।”
মাথার ত্বক পরিষ্কার রাখতে বাড়িতে সম্পূর্ণ প্রাকৃতিক উপাদান দিয়ে স্ক্যাল্প স্ক্রাবার তৈরি করে নেওয়া যেতেই পারে। শ্যাম্পু করার পূর্বে সেই স্ক্রাবার কিংবা এক্সফোলিয়েটর দিয়ে মাথার ত্বক হালকা হাতে ঘষে নিলে অনেকটা কাজ হয়। এ ছাড়াও মাথার ত্বকের ধরন অনুযায়ী প্রসাধনী নির্বাচন করলেও এই ধরনের কোনো রকম সমস্যায় থাকে না। তথ্যসূত্র: আনন্দবাজার পত্রিকা অনলাইন।
>>>>>>>>>>>>>>
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org