দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ আমিষ ছুঁয়েও দেখেন না অনেকেই। তাহলে শরীরের প্রয়োজনীয় ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিডের ঘাটতি পূরণ কীভাবে হবে?
সুস্থ থাকতে সুষম খাদ্যের দরকার। একইসঙ্গে প্রয়োজন ফ্যাটি অ্যাসিড। হার্ট ভালো রাখতে হলে এবং মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতা বৃদ্ধিতে ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিড জরুরি একটি উপাদান। এটি ট্রাইগ্লিসারয়েডের মাত্রা আরও কমিয়ে রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে, যে কারণে হার্টও ভালো থাকে। স্মৃতিশক্তি ভালো রাখতে, মস্তিষ্কের কার্যকারিতা বৃদ্ধিতেও ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিড অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এছাড়াও এটি চোখ ভালো রাখতে, প্রদাহ কমাতে সাহায্য করে।
পুষ্টিবিদ শম্পা চক্রবর্তী বলেছেন, ‘‘ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিডই হলো এসেনশিয়াল পলি আনসাচুরেটেড ফ্যাটি অ্যাসিড। স্যামন, সার্ডিন, ম্যাকারেল, টুনা— এই সমস্ত মাছে প্রচুর পরিমাণে ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিড পাওয়া যায়। তাছাড়াও পমফ্রেট, কাতল, ইলিশ মাছেও পাওয়া যায় এটি।’’ ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিডের ঘাটতি পূরণে পুষ্টিবিদরা মাছ খাওয়ার পরমার্শ দিয়ে থাকেন। এ ছাড়াও ক্যাপসুল আকারেও এটি কিনতে পাওয়া যায়। যারা মাছ খান, তাদের এই নিয়ে সমস্যা না হলেও উপাদানটির ঘাটতি হওয়ার আশঙ্কাও থাকে নিরামিষাশী এবং ভিগানদের মধ্যেও। বিশেষত: ভিগানরা কোনও প্রাণিজ উৎস হতে প্রাপ্ত খাদ্য খান না। সেই ক্ষেত্রে তাহলে কোন খাবার খাবেন তারা?
পুষ্টিবিদ শম্পা বলেছেন, উদ্ভিজ্জ খাবারের মধ্যে রকমারি বাদাম এবং বীজে এই ধরনের ফ্যাটি অ্যাসিড পাওয়া যেতে পারে। কোনও কোনও শাকসব্জিতেও অল্প পরিমাণে ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিড পাওয়া যায়। সেই ক্ষেত্রে নিরামিষাশীরা বাদাম এবং বীজ জাতীয় খাবারও খাদ্যতালিকাতে রাখতে পারেন।
বীজ
চিয়া বীজেও ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিড পাওয়া যায়। এতে আরও থাকে ফাইবার, প্রোটিন, অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট। তবে মাছে সাধারণ যে ধরনের ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিড থাকে, তা অবশ্য এতে পাওয়া যায় না। মাছে পাওয়া ফ্যাটি অ্যাসিডে থাকে ডিএইচএ এবং ইপিএ। আর চিয়া বীজে পাওয়া যায় আলফা-লিনোলেনিক অ্যাসিড। শরীর এই উপাদানকেই ডিএইচএ এবং ইপিএ’তে রূপান্তরিত করে নেয়। এ ছাড়াও তিল, তিসি, কুমড়োর বীজ, তরমুজের বীজেও এই উপাদানটি পাওয়া যায়।
আখরোট ও কাঠবাদাম
ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিডের অন্যতম উৎসই হলো আখরোট ও কাঠবাদাম। এতে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট ছাড়াও ফাইবার এবং প্রোটিনও থাকে। খাদ্যতালিকায় এই ধরনের বাদাম রাখলেও এর ঘাটতি পূরণ করা সম্ভব হবে।
সব্জি ও সয়াবিন
পালং শাকসহ বেশ কয়েকটি শাক-সব্জিতে কম মাত্রায় ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিড পাওয়া যেতে পারে। এ ছাড়াও সয়াবিন এবং তোফুতেও ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিড পাওয়া যেতে পারে। তথ্যসূত্র: আনন্দবাজার পত্রিকা অনলাইন।
>>>>>>>>>>>>>>
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org