দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ আমরা জানি ঘুমের ঘোর কাটতে বেশ সময় লাড়ে। অনেকক্ষণ ঘুম লেগেই থাকে চোখে। সেই নিদ্রাচ্ছন্ন চোখে যদি হঠাৎ করে মোবাইলের নীল আলো সামনে এসে পড়ে, তাহলে তা চোখের জন্যও ক্ষতিকর।
আপনি ঘুম ভেঙে সবে চোখ খুলেছেন। এই সময় হাত আপনা থেকেই চলে গেলো বালিশের পাশে থাকা ফোনের কাছে। মোবাইলটি হাতে নিয়েই শুরু হয় হোয়াট্সঅ্যাপ, মেসেঞ্জার, ফেসবুক, ইমেলে ঢুঁ দেওয়া। ঘুম ভাঙার পরই বেশ অনেকটা সময় এভাবে কেটে যায়। প্রায় সিংহভাগের এটাই প্রতিদিনের রুটিন। বিভিন্ন গবেষণা থেকে জানা যায়, ঘুম থেকে উঠেই মোবাইল ঘাঁটার অভ্যাস চোখের উপর ক্ষতিকর প্রভাবও ফেলে। ঘুম ভেঙে গেছে মানেই আপনি সজাগ, তা নয়। ঘুমের ঘোর কাটতে সময়ও নেয়। বেশ অনেকক্ষণ ঘুম লেগে থাকে চোখে। সেই নিদ্রাচ্ছন্ন চোখে যদি হঠাৎ করেই মোবাইলের নীল আলো এসে পড়ে, তাহলে তা চোখের জন্যও ক্ষতিকর।
এতে ভবিষ্যতে চোখের ব্যাপক ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা থাকে। তবে ভবিষ্যতের জন্য অপেক্ষা করার প্রয়োজন নেই। এই অভ্যাসের কারণে ‘ড্রাই আইজ’-এর সমস্যা ক্রমশই বাড়ছে। ছোট হতে বড় সকলেই এই রোগের শিকার। যতো সময় যাচ্ছে সমস্যা ততো ছড়াচ্ছে। প্রতিরোধ করার কি কোনও উপায় নেই?
এই বিষয়ে চক্ষু চিকিৎসক শান্তনু মণ্ডল বলেন, ‘‘অভ্যাসে রাশ টানা ছাড়া এই সমস্যা প্রতিরোধের কোনও রকম উপায় নেই। মোবাইলের ব্যবহারও কমাতে হবে। তাহলেই চোখ সুরক্ষিত থাকবে। সেইসঙ্গে এটিও ঠিক যে, প্রযুক্তিনির্ভর জীবনে সব ক্ষেত্রে যন্ত্রের ব্যবহার করতে হয়। এড়িয়ে যাওয়ার কোনো উপায় নেই। সেই ক্ষেত্রে মাঝে-মধ্যে চোখের বিশ্রামও নিতে হবে। প্রয়োজনে ড্রপ ব্যবহার করতে হবে।’’ সাম্প্রতিক বেশ কিছু গবেষণা বলছে যে, শুধুমাত্র চোখই নয়, ঘুম ভাঙার পর মোবাইল দেখার অভ্যাসে মানসকি স্বাস্থ্যও বিঘ্নিত হয়। এতে করে মানসিক অস্থিরতাও দেখা দেয়।
আর চোখের ক্ষতির সঙ্গে সঙ্গে ব্যাঘাত ঘটে কাজেরও। সকালে উঠে যদি আপনি আপনার সারাদিনের কাজের তালিকা নিয়ে ভাবতে থাকেন বা নেটমাধ্যমে আপনার চারপাশের মানুষের কার্যকলাপের খবরই পেতে থাকেন, এতে করে আপনার মানসিক স্থিতি কমতে থাকে। এই খবরগুলো আপনার অস্থিরতা আরও বাড়িয়ে দেয়। কোনও কাজের প্রতিই মন দিতে দেয় না। খুব সমস্যা না থাকলে রাতে ফোনটি বন্ধ করেও রাখতে পারেন। সকালে উঠে পরিষ্কার হয়ে, ধীরেসুস্থে তারপর ফোন ধরুন। এতে সুস্থ থাকবে আপনার শরীর ও মন। তথ্যসূত্র: আনন্দবাজার পত্রিকা অনলাইন।
>>>>>>>>>>>>>>
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org