দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ আমাদের মধ্যে দেখা যায় মুখের ঘায়ের সমস্যা। তবে যখন ছোট শিশুদের এমন সমস্যা হয় তখন চিন্তার বিষয় হয়ে দাঁড়ায়। তবে সন্তানের মুখের ঘায়ের সমস্যা মিটতে পারে টোটকার গুণে।
আপনার সন্তানের কী বারবার মুখে ঘা দেখা দিচ্ছে? এই সমস্যার সমাধানে এই নিবন্ধে উল্লেখিত কয়েকটি ঘরোয়া টোটকা ব্যবহার করে দেখতে পারেন। আজ জেনে নিন সেই বিষয়টি।
অনেক শিশুর বারবার মুখে ঘা হয়। ওই সময় তারা একেবারেই খেতে চায় না। সন্তানের এমন কষ্টে দেখে বাবা-মায়ের মন কেমন যেনো করে। তারা বুঝে উঠতে পারেন না এই সমস্যা থেকে সন্তানকে বের করে আনবেন কীভাবে।
তবে চিন্তার কিছু নেই, এই সমস্যা সমাধানে সেরার সেরা অস্ত্র হলো কয়েকটি সহজ সরল ঘরোয়া টোটকা। বিপদে পড়লেই ব্যবহার করুন এইসব টিপস। আশা করা যায়, এই নিয়মগুলো মেনে চললেই সন্তান সুস্থ হয়ে উঠবে।
লবণ পানিতে কুলকুচি
এক গ্লাস পানি গরম করে নিন। পানি মোটামুটি সহনযোগ্য হলে তাতে ফেলে দিন কিছু পরিমাণ লবণ। এবার এই পানিতে সন্তানকে কুলকুচি করতে বলুন। তাতে বেশ উপকার পাওয়া যাবে। কমে যাবে ঘায়ের ক্ষত।
তবে অনেক শিশু গরম পানি কিন্তু সহ্য করতে পারে না। সেইক্ষেত্রে তাদের ঠাণ্ডা পানিতে লবণ ফেলে কুলকুচি করার পরামর্শ দিন। এতেই উপকার পাওয়া যাবে হাতেনাতে। কমে আসবে সমস্যা।
মধু সেরার সেরা
আমাদের অতি পরিচিত মধুতে রয়েছে অ্যান্টিসেপটিক গুণ। তাই সন্তান এই ধরনের সমস্যায় পড়লে তার মুখে লাগান কিছুটা মধু। দেখবেন, দুই-একদিনের মধ্যেই তার সমস্যা কমে আসবে। তবে সন্তানকে কখনও নিম্নমানের মধু খাওয়াবেন না। এই ভুল করলে উপকার তো পাবেনই না, উল্টো ক্ষতিও হতে পারে। তাই মধু কেনার সময় অবশ্যই সতর্ক হতে হবে- অর্থাৎ আসল মধু খুঁজে বের করুন। তাতে খারাপ কিছু আছে কিনা সেটা বোঝার চেষ্টাও করুন। তাহলেই পাবে উপকার।
দই খাওয়ান
মনে রাখতে হবে, অনেক সময় পেটের সমস্যার দরুনও মুখে ঘা হতে পারে। তার পেটের হাল ফেরাতে চাইলে আপনাকে নিয়মিত দই’ও খাওয়াতে হবে। কারণ হলো, এই দইতে রয়েছে প্রোবায়োটিকের ভাণ্ডার। এই উপাদান অন্ত্রের হাল ফেরানোর কাজেও একাই একশো। যে কারণে দই খেলে ভালো থাকবে পেট। সেইসঙ্গে বাড়বে ইমিউনিটি। এমনকী মুখের ক্ষত কমেও যেতে পারে। তাই বিপদে পড়লে এই টোটকার শরণাপন্ন হতে ভুলবেন না কখন!
নিয়মিত খাওয়ান হলুদ
হলুদে রয়েছে কারকিউমিন নামক এক উপাদান। এই উপাদান শরীরের হাল ফেরানোর কাজে আসে। তাই সকলকেই নিয়মিত হলুদ সেবন করার পরামর্শ দিয়ে থাকেন বিশেষজ্ঞরা।
অ্যাপেল সিডার ভিনেগার
অ্যাপেল সিডার ভিনেগার এই সমস্যা সমাধানে সেরার সেরা হাতিয়ারও হতে পারে। তাই সন্তানের মুখে ঘা তৈরি হলেই অবশ্যই তার ক্ষত জায়গায় এই তরলটি লাগিয়ে দিন। এতে হাতেনাতে উপকার পাবেন। তারপরও যদি সমস্যা না যায় তাহলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। তথ্যসূত্র: এই সময়।
>>>>>>>>>>>>>>
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org