দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ এক জনের ছবি দিয়ে আরেক জন ফেসবুক খোলার ঘটনা মাঝে-মধ্যেই দেখা যায়। যেমন অনেকেই মেয়েদের ছবি দিয়ে তার আইডি ব্যবহার করেন। যদি আপনার ছবি দিয়ে কেও এমনটি করে থাকে তাহলে আপনার করণীয় কী? আজ সেটি জেনে নিন।
বর্তমানে বিভিন্ন সময় দেখা যায় অভিনেতা, অভিনেত্রী থেকে শুরু ক্রীড়াঙ্গনের তারকারদের নামে একাধিক ফেসবুক অ্যাকাউন্ট খোলা হচ্ছে। এতে বাদ যান না রাজনীতিবিদরাও। তাদের নামেও একাধিক অ্যাকাউন্ট ফেসবুক খুলতে দেখা যায়। যা তাদের শুধুমাত্র বিব্রতই করে না, নিজেদের ইমেজ সংকটও তৈরি করে অনেক সময়।
দেখা যায় নামি শিল্পী, অভিনেতা-অভিনেত্রীদের প্রোফাইল হতে তথ্য চুরি করে হুবহু একই রকম ‘ক্লোন’ তৈরি করার মাধ্যমে নানা রকম অসামাজিক, অনৈতিক কাজ করা হচ্ছে। তবে সাধারণ মানুষ যদি সেই ফাঁদে পা দেন, তাহলে কী করতে হবে?
এই বিষয়ে সাইবার বিশেষজ্ঞেরা বলেছেন, এটি মূরত জালিয়াতির নতুন এক কায়দা। ফেসবুকে নতুন অ্যাকাউন্ট খোলা ওই ব্যক্তির ছবি, ব্যক্তিগত তথ্য চুরি করে হুবহু একই রকম দেখতে আরও একটি ভুয়া অ্যাকাউন্ট তৈরিও করে। সেখান থেকে ওই ব্যক্তির চেনা-পরিচিতদের কাছে বন্ধুত্বের অনুরোধও পাঠায়। সেই অনুরোধ গ্রহণ করা মাত্রই সেখান থেকে নানা রকম অনৈতিক কাজকর্ম শুরু করে দেয়। তথ্য চুরি তো আছেই, তাছাড়াও এভাবে জালিয়াতের অর্থ, ব্যক্তিগত তথ্য, মেইল কিংবা অন্যান্য অ্যাপ্লিকেশনের পাসওয়ার্ডও চুরি করতে পারে। যেহেতু ওই প্রোফাইলটি দেখতে একেবারেই একই রকম, তাই চেনা মানুষের কাছ থেকে ‘ফ্রেন্ড রিকোয়েস্ট’ পাওয়া মাত্রই ঠিক-ভুল না ভেবে তা ‘অ্যাকসেপ্ট’ করে ফেলেন বেশির ভাগ ব্যক্তি। আর ভুলটা হয় ঠিক সেখানেই।
ফেসবুক প্রোফাইল ‘ক্লোন’ হলে আপনার করণীয় কী?
# ভয় না পেয়ে প্রথমে সকলকেই এই বিষয়টি অবগত করুন। বন্ধু, সহকর্মী, আত্মীয়দের সাবধান করে দিতে হবে, ওই অ্যাকাউন্ট থেকে আসা বন্ধুত্বের কোনও অনুরোধ যেনো তারা গ্রহণ না করেন। এই ক্ষেত্রে সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সেই ফেসবুকই। পুরো ঘটনার বর্ণনা দিয়ে নিজের আসল ফেসবুক অ্যাকাউন্ট হতে পোস্ট করতে পারেন। সেই পোস্ট যাতে সকলের নজরে পড়ে সেজন্য কমেন্টস বক্সে ‘অ্যাট হাইলাইট’ কিংবা ‘অ্যাট ফলোয়ার’ লিখেও রাখতে পারেন।
# চেনা-পরিচিত সকলকে অনুরোধ করতে পারেন ভুয়া ওই অ্যাকাউন্টটি দেখা মাত্রই যেনো ‘রিপোর্ট’ করে দেন। সেজন্য আপনাকে যা করতে হবে:
# প্রথমেই ফেসবুকে আসা বন্ধুতালিকার মধ্য হতে ভুয়া অ্যাকাউন্টটি খুঁজে বের করে, তার আসল পাতাটির মধ্যে ঢুকতে হবে।
# দেখবেন প্রোফাইলের এক পাশে থাকে ছবি ও নাম। ঠিক তার উল্টো দিকেই একটু নীচে রয়েছে ৩টি ‘ডট’ চিহ্ন।
# সেখানে ক্লিক করলে ‘রিপোর্ট প্রোফাইল’ অপশন চলে আসবে।
# এরপর ফেসবুক জানতে চাইবে আপনি কেনো ওই প্রোফাইলটির বিরুদ্ধে রিপোর্ট করতে চাইছেন।
# সেখানে ক্লিক করলে সম্ভাব্য নানা প্রকার কারণের একটি তালিকাও আসবে।
# সেখান থেকে ‘ফেক অ্যাকাউন্ট’ ক্লিক করলে কাজ শেষ।
# পদ্ধতি সঠিক হলে ‘রিপোর্ট’ করার সঙ্গে সঙ্গেই নিশ্চিত হওয়ার মেসেজ পৌঁছে যাবে ফেসবুক কর্তৃপক্ষের কাছে।
>>>>>>>>>>>>>>
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org