বিশেষজ্ঞ মতামত: দিনে কতো কিলোমিটার হাঁটলে শরীর সুস্থ-সবল থাকবে?

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ অযথায় শুধুমাত্র হাঁটলেই কোনও লাভ পাবেন না। বরং দূরত্ব মেপে হাঁটাটা জরুরি। তা হলেই শরীরকে সুস্থও রাখতে পারবেন। আপনি হয়তো ভাবছেন নিশ্চয়ই দিনে ঠিক কতো কিমি হাঁটাটা জরুরি? সেই উত্তর দিয়েছেন বিশিষ্ট যোগ বিশেষজ্ঞ।

বর্তমান সময়ে দেখা যাচ্ছে খুব কম বয়স হতেই শরীরে বাসা বাঁধছে একাধিক জটিল অসুখ। এই তালিকায় কোলেস্টেরল, প্রেশার, সুগার, আর্থ্রাইটিস হতে শুরু করে একাধিক কঠিন রোগও রয়েছে। সে কারণেই বিশেষজ্ঞরা সকলকে স্বাস্থ্যের দিকে নজর ফেরানোর পরামর্শও দেন। তাদের ভাষায়, অলস জীবনযাত্রা ছেড়ে যদি কেবলমাত্র হাঁটা যায়, তা হলেই এই সব সমস্যা থেকে দূরে থাকা যাবে। যাদের ইতিমধ্যেই এই ধরনের সমস্যা রয়েছে, তারা সুস্থ-সবল থাকতে পারবেন।

তবে একটি বিষয় হলো নিজের ইচ্ছে মতো হাঁটলে এতোসব উপকার পাবেন না। বরং আপনাকে কিলোমিটার মেপেই হাঁটতে হবে। সেই বিষয়টি সম্পর্কে বিশদে আলোচনা করা হলো এই নিবন্ধে।

সারাদিনে কতো কিলোমিটার হাঁটতে হবে?

এই প্রশ্নের উত্তর দিয়েছেন বিশিষ্ট যোগ বিশেষজ্ঞ সিদ্ধার্থ লাহিড়ি। তিনি বলেন, ‘একজন মানুষের দিনে অন্ততপক্ষে ৪ হতে ৫ কিলোমিটার হাঁটা দরকার। তবে কারও যদি হাঁটুতে সমস্যা থাকে কিংবা পায়ে কোনও রকম ব্যথা থাকে, তারা বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিয়ে সেই টিপস মেনে হাঁটুন। বাদবাকি সকলেই দিনে ৪ হতে ৫ কিমি চলতে পারেন। এতে করে শরীর থাকবে সুস্থ-সবল। আর তাই একাধিক রোগের ফাঁদ অনায়াসে এড়িয়ে চলতে পারবেন।’

Related Post

​কী কী উপকার পাওয়া যাবে?​

দিনে মাত্র ৪ থেকে ৫ কিমি হাঁটলে এ সব উপকার পাবেন–

# ওজন কমবে দ্রুত গতিতে।
# বাড়বে হার্ট এবং ফুসফুসের ক্ষমতা।
# পায়ের পেশিও শক্ত হবে।
# বাতের সমস্যা প্রতিরোধ করতে পারবেন।
# কমবে সুগার, প্রেশার ও কোলেস্টেরল।
# হার্ট অ্যাটাক এবং স্ট্রোকের মতো রোগের ফাঁদে পড়ার আশঙ্কাও কমবে।
# আপনি সামগ্রীকভাবে সুস্থ থাকবেন।
# মনের ভার নেমে যাবে।

তবে হেঁটে উপকার পেতে চাইলে কিছু নিয়ম মেনে চলাটা সত্যিই জরুরি।

হাঁটবেন কীভাবে?​

হাঁটার মানেই হেলেদুলে বেড়ানো নয়। বরং আপনাকে ঘাম ঝরিয়েই হাঁটতে হবে। হাঁটার সময় যাতে করে শ্বাস কিছুটা ফুলে ওঠে, সেই বিষয়টি নিশ্চিত করুন। তা হলেই উপকার পাবেন।

তবে যারা নতুন করে শুরু করছেন, তারা প্রথমেই বেশি জোরে হাঁটার চেষ্টা করবেন না। আপনারা ধীরে সুস্থে প্রথম দিকে ১ কিলোমিটার হাঁটুন। একটু অভ্যাস হয়ে গেলে গতি ও দূরত্ব দুই’ই বাড়িয়ে দিন। এই নিয়মটি মেনে চললে আপনার শরীর তখন মানিয়ে নিতে পারবে।

​হাঁটবেন কখন?​

সুস্থ থাকতে হলে রোদ বাঁচিয়ে হাঁটতে হবে। সেই ক্ষেত্রে সকাল সকাল হাঁটতে চলে যান। মোটামুটি ৮টা হতে ৯টার মধ্যে মর্নিং ওয়াক শেষ করে ফিরে আসতে হবে। যাদের সকালে একেবারেই সময় হয় না, তারা সন্ধ্যার পর বাড়ি ফিরে অনায়াসে হাঁটতে যেতে পারেন। সকালে খালি পেটে হাঁটতে যাবেন না। তার বদলে কিছু একটা কিছু খেয়ে নিয়েই তারপর হাঁটতে যান। এই নিয়মটি মেনে চললে পাবেন উপকার।

হাঁটবেন কোথায়?​

আপনাকে সুস্থ থাকতে চাইলে সমতল জায়গাতে হাঁটতে হবে। কোনও এবড়োখেবড়ো জায়গায় হাঁটবেন না। সবথেকে ভালো হয়, মাঠে কিংবা পার্কে হাঁটতে পারলে। একান্তই যদি মাঠ কিংবা পার্কে যাওয়ার সুযোগ নাই থাকে, তাহলে নিরিবিলি কোনও রাস্তাতেও হাঁটতে পারেন। আশা করি এই নিয়মটি মেনে চললেই আপনার শরীর এবং স্বাস্থ্যের হাল ফিরবে। তথ্যসূত্র: এই সময়।

>>>>>>>>>>>>>>

ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে

মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।

লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।

১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর

২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।

সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-

১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।

২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।

৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।

৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।

৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।

৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।

৭. ত্বকে র‌্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।

রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :

১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।

২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।

এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।

অপরদিকে

জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।

ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:

১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।

২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।

৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।

৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।

৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।

৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।

৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।

৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org

This post was last modified on অক্টোবর ৯, ২০২৪ 2:02 অপরাহ্ন

স্টাফ রিপোর্টার

Recent Posts

শিক্ষার্থীদের সৃজনশীলতার বিকাশে বিজ্ঞান, প্রযুক্তি, প্রকৌশল, শিল্পকলা ও গণিত (স্টিম) বিষয়ক কার্নিভাল

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ সম্প্রতি শিক্ষার্থীদের জন্য বিজ্ঞান, প্রযুক্তি, প্রকৌশল, শিল্পকলা এবং গণিত (স্টিম)…

% দিন আগে

মিডরেঞ্জ বাজেটে ফ্ল্যাগশিপ অভিজ্ঞতা: ইনফিনিক্স নোট ৪০এস

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ জনপ্রিয় ট্রেন্ডি প্রযুক্তি ব্যান্ড ইনফিনিক্স বিগত কয়েক বছর ধরেই মিডরেঞ্জের…

% দিন আগে

পূর্ণিমা-শ্রাবন্তীর সঙ্গে দুবাই যাচ্ছেন শাকিব খান

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ দুবাই হলো বিনোদন জগতের তারকাদের একটি মিলন মেলা। সেখানে নানা…

% দিন আগে

আমরাই আমাদের সিদ্ধান্ত নিতে পারি: ট্রাম্পকে নেতানিয়াহু

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু বলেছেন যে, ইসরায়েলের স্বার্থ রক্ষায় আমরাই…

% দিন আগে

প্রচারে গতি আনতে বন্ধুর স্ত্রী-কন্যাদের ‘ধার’ করলেন এক রাজনীতিবিদ!

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ ডেরিক একজন প্রাক্তন সেনা। ভার্জিনিয়ার একটি জেলার আসনে রিপাবলিকান দলের…

% দিন আগে

অসম্ভব সুন্দর এক প্রাকৃতিক দৃশ্য

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ শুভ সকাল। সোমবার, ২১ অক্টোবর ২০২৪ খৃস্টাব্দ, ৫ কার্তিক ১৪৩১…

% দিন আগে