দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ যদি আপনি হৃদরোগের থেকে দূরে থাকতে চান তাহলে ভরসা রাখতে পারেন কাঁচকলার উপর। এই খাবারটি নিয়মিত খেলে একাধিক উপকার পাবেন।
মানব শরীরের সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গগুলির মধ্যে প্রথমেই যার নাম আসে সেটি হলো হার্ট। এই অঙ্গটি শরীরের প্রতিটি প্রান্তে অক্সিজেন এবং পুষ্টিসমৃদ্ধ রক্তকে পৌঁছে দেয়। তাই এই অঙ্গটি সুস্থ রাখা জরুরি।
কিন্তু অদ্ভুত খাদ্যাভ্যাস ও জীবনযাত্রার কারণে আজকাল আমাদের কম বয়সেই হার্টের অসুখ পিছু নিচ্ছে। যে কারণে প্রাণ নিয়ে পড়ে যাচ্ছে টানাটানি। তাই যেভাবেই হোক না কেনো হার্টকে সুস্থ রাখতে হবে। এই কাজে সাফল্য পেতে চাইলে সবার আগে ফাস্টফুড, তেল সমৃদ্ধ খাবার, মদ ও ধূমপান ছাড়তে হবে। এর পরিবর্তে ভরসা রাখতে পারেন অত্যন্ত উপকারী কাঁচকলার উপর। তাতে করে আপনার হার্টের হাল ফিরবে।
হার্টের জন্য সেরা
এই অঙ্গের হাল ফেরাতে হলে খেতেই পারেন কাঁচকলা। কারণ হলো, এতে রয়েছে পটাশিয়ামের ভাণ্ডার। এই উপাদানটি রক্তনালীকে শান্ত করে। যে কারণে কমে প্রেশার। সেই সুবাদে হার্টের রোগ থেকে শুরু করে একাধিক জটিল অসুখ এড়িয়ে চলা যাবে। শুধু তা-ই নয়, এই কাঁচা ফলটিতে উপস্থিত অ্যান্টিঅক্সিডেন্টের গুণে কমে যায় প্রদাহ। এমনকী এতে মজুত ফাইবার কোলেস্টেরলও কমায়। যে কারণে কাছে ঘেঁষতে পারে না হৃদরোগ। তাই প্রতিদিনের ডায়েটে অবশ্যই কাঁচকলার মতো একটি খাবারকে জায়গা করে দিতে হবে। শুধুমাত্র হার্টের হাল ফেরানোই নয়, এর পাশাপাশি আরও একাধিক উপকার করে এই কাঁচা ফল।
ওজন কমবে
শরীরে মেদ বাড়লেই বিপদ! যে কারণে ডায়াবেটিস, প্রেশার, কোলেস্টেরল, হার্টের অসুখসহ বিভিন্ন ধরনের জটিল রোগ নিতে পারে পিছু। তাই যেভাবেই হোক না কেনো ওজন কমাতে হবে। সেই কাজে আপনাকে সাহায্য করতে পারে অত্যন্ত উপকারী এই কাঁচকলা। কারণ হলো, এতে রয়েছে ফাইবারের অফুরন্ত ভাণ্ডার। এই উপাদান পেট ভরিয়ে রাখতে সাহায্য করে। যে কারণে খিদেও পায় কম। কম খেলে তো ওজন কমবেই, এই কথা পৃথক করে বলার অপেক্ষা রাখে না।
বাড়বে ইমিউনিটি
যদি আপনি মাঝে-মধ্যেই সর্দি-কাশির সমস্যায় ভোগেন? সেইক্ষেত্রে ভরসা রাখতে পারেন এই কাঁচকলার উপর। কারণ হলো, এতে রয়েছে ভিটামিন সি’র ভাণ্ডার। এই ভিটামিন ইমিউনিটি বাড়ায়।
সুগার থাকবে রাখতে
হাই ব্লাড সুগারে ভুক্তভোগীদের একাধিক খাবারে বারণ রয়েছে। তবে আপনারা যদি নিয়মিত এই কাঁচা ফলটি খেতে পারেন, সেইক্ষেত্রে অনায়াসে গ্লুকোজের মাত্রাকেও বশে রাখতে পারবেন। এর গ্লাইসেমিক ইনডেক্স খুবই কম। শুধু তা-ই নয়, এতে ভালো পরিমাণে ফাইবার রয়েছে। যে কারণে কাঁচকলা খেলে সুস্থ থাকে শরীর। কমে যায় সুগার। তাই ডায়াবেটিস রোগীদের নিয়মিত এই খাবারটি খাওয়ার পরামর্শ দেন বিশেষজ্ঞরা।
চোখের উপকারী
চোখের জন্যও অত্যন্ত কার্যকরী ভূমিকা পালন করতে পারে এই কাঁচকলা। এতে থাকা ভিটামিন এ এই কাজে সাহায্য করে। এর পাশাপাশি হাড়ের জোর ও এনার্জি বাড়াতেও সাহায্য করে এই কাঁচাকলা। তথ্যসূত্র: এই সময়।
>>>>>>>>>>>>>>
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org