দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ কথায় রয়েছে ‘স্বাস্থ্যই সকল সুখের মূল’। জীবনে একবার স্বাস্থ্যের হাল সম্পূর্ণ বিগড়ে গেলে কোনও ধন-সম্পদ দিয়েও তা ফেরানো যাবে না।
মুশকিলের বিষয় হলো, আজকালকার ভুলে ভরা জীবনযাত্রা এবং খাদ্যাভ্যাসের সাঁড়াশি আক্রমণে ঝটপট বেড়ে যাচ্ছে ওজন। মেদের বহর বাড়ার কারণে স্বাস্থ্যের হালও বিগড়ে যাচ্ছে। কারণ হলো, ওজন বেশি থাকলে ডায়াবেটিস, প্রেশার, কোলেস্টেরল হতে শুরু করে একাধিক জটিল রোগ নিতে পারে পিছু। তাই সুস্থ থাকতে চাইলে প্রথমেই ওজনকে বশে রাখতে হবে।
সেই কাজে সাফল্য পেতে চাইলে মেনে চলতে হবে ‘৩০-৩০-৩০ রুল’। ভাবছেন নিশ্চয়ই, কী সেই নিয়ম?
গোড়ার কথা
বিশিষ্ট লেখক টিম ফেরিস ‘৪ আওয়ার বডি’-তে সবার আগে এই নিয়মের কথায় উল্লেখ করেছেন। এরপর বিভিন্ন সোশ্যাল মিডিয়ায় এই টেকনিক ভাইরাল হয়ে যায়। বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, এই নিয়ম মেনে চললেই ওজন কমে আসবে। সেইসঙ্গে বাড়বে শারীরিক ক্ষমতাও। এর পাশাপাশি মনের হালও ফেরানো যাবে। তাই আজকাল অনেকেই এই কৌশলে ঝটপট ওজন কমিয়ে ফেলার চেষ্টায় লেগে থাকেন।
তাহলে কী এই ‘৩০-৩০-৩০ রুল’?
# সকালে ঘুম থেকে ওঠার ৩০ মিনিটের মধ্যে ৩০ গ্রাম প্রোটিন খেতে হবে।
# পরের ৩০ মিনিট হালকা চালের কার্ডিওভাস্কুলার (হাঁটা, জগিং, ট্রেডমিল) এক্সারজাইজ় করতে হবে।
# তার ৩০ মিনিট পর সেরে নিতে হবে ব্রেকফাস্ট।
# এরপর সারাদিন ধরে অল্প অল্প করে প্রোটিন খেতে থাকুন।
এই নিয়ম মেনে চললেই ওজনও কমবে, সেইসঙ্গে আরও একাধিক উপকার পাবেন।
বাড়বে এনার্জি
বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, এই নিয়ম মেনে চললেই ক্লান্তি দূর হয়। শরীরে ফিরবে এনার্জি। এমনকি কাজেও মন বসবে। ব্রেন দ্রুত কাজ করবে। মনও ভালো থাকে। দুশ্চিন্তা, উৎকণ্ঠা কমে আসবে।
শুধু তা-ই নয়, এই কৌশলে হার্টও ভালো থাকে। হৃদরোগের ফাঁদে পড়ার আশঙ্কাও কমে যায়। আবার কমে সুগার। এমনকি কোলেস্টেরলের মতো সমস্যা থেকেও মুক্তি পেতে পারেন। তাই এখন থেকেই ৩০-৩০-৩০ রুল মেনে চলার কাজ শুরু করে দিতে পারে। এতে শরীরকে ভালো রাখতে পারবেন। তথ্যসূত্র: এই সময়।
>>>>>>>>>>>>>>
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org