দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ শৌচালয়ে ব্রাশ রাখার অভ্যাস যে নিঃশব্দেই শরীরের ক্ষতি করে চলেছে, তা আমাদের অনেকের অজানা। বিশেষ করে শৌচালয়ে ব্রাশ রাখার অভ্যাস অত্যন্ত অস্বাস্থ্যকর একটি কাজ। এতে কঠিন রোগের ঝুঁকি বাড়তে পারে। বেশ কিছু গবেষণা তেমনটিই জানিয়েছে।
আমাদের মধ্যে অনেকেই দাঁতের যত্নের বিষয়ে যতটা সচেতন থাকেন, টুথব্রাশ নিয়ে মোটেও ততোটা সচেতন নন। অথচ এই টুথব্রাশ জায়গা মতো না রাখলে, তা থেকে নানা ধরনের সংক্রমণও ছড়াতে পারে। বেশির ভাগ মানুষেরই অভ্যাস হলো গোসলের ঘরে গিয়ে দাঁত মাজা। এই অভ্যাস যে নিঃশব্দে শরীরের ক্ষতি করে যাচ্ছে, তা অনেকের অজানা। বিশেষ করে শৌচালয়ে ব্রাশ রাখার অভ্যাসটি অত্যন্ত অস্বাস্থ্যকর একটি কাজ। এতে কঠিন রোগের ঝুঁকিও বাড়তে পারে। বেশ কিছু গবেষণা তেমনটিই জানিয়েছে।
মূলত শৌচালয় হচ্ছে জীবাণুর আতুঁড়ঘর। ওখানে বাতাসে ভেসে বেড়ায় নানা ব্যাক্টেরিয়া-জীবাণু। ওই পরিবেশে খোলা অবস্থায় ব্রাশ রেখে দেওয়া কতোটা বিপজ্জনক, সেটি খানিকটা হলেও অনুমান করা যায়। আর্দ্র পরিবেশে ব্যাক্টেরিয়া খুব সহজেই বেড়ে ওঠে। শৌচালয়ের ভিতরের বাতাসে আর্দ্রতার পরিমাণও অত্যাধিক। যে কারণে ব্যাক্টেরিয়া সক্রিয় হয়ে ওঠে। এছাড়াও মল-মূত্র ত্যাগের পর যতোই ফ্লাশ করা হোক, কমোডের পানির স্রোত ব্যাক্টেরিয়া নিশ্চিহ্ন করতে পারে না; সেগুলো থেকেই যায়।
এমন একটি ভাইরাসময় পরিবেশে ব্রাশ থাকলে খুব স্বাভাবিকভাবেই সেটিও জীবাণুর হাত থেকে রক্ষা পায় না। ব্রাশ থেকে সেই সমস্ত জীবাণু সরাসরি শরীরে প্রবেশ করে। যে কারণে তখন মুখের ভিতরে বিভিন্ন ধরনের সংক্রমণের ঝুঁকিও বেড়ে যায়।
তাই বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, কখনও শৌচালয়ে ব্রাশ রাখবেন না। আবার ব্রাশ কখনও যত্রতত্র ফেলে রাখবেন; সেটিও ঠিক নয়। মনে রাখতে হবে ব্রাশ যেখান-সেখানে রাখার জিনিস নয়। যেহেতু সরাসরি শরীরের সংস্পর্শে আসে, তাই ব্রাশ যত্নে রাখাটা জরুরি।
ব্রাশ কোথায় রাখা সুরক্ষিত?
অবশ্যই পরিষ্কার, শুকনো কোনও স্থানে আপনাকে ব্রাশ রাখতে হবে। ব্রাশ উন্মুক্ত জায়গায় না রাখাই ভালো। কোনও আলমারি বা ড্রয়ারে রাখতে পারেন। এছাড়াও ব্রাশ রাখার শৌখিন বাক্স আজকাল কিনতে পাওয়া যায়। চাইলে সেগুলোও ব্যবহার করতে পারেন। তবে কোনওভাবেই ব্রাশ বাইরের খোলা হাওয়ায় ফেলে রাখা চলবে না। তা হলেই ঘটতে পারে বিপদ। এছাড়াও অনেকেই পাশাপাশি অনেকগুলো টুথব্রাশ রেখে দেন, সেই অভ্যাসও মোটেও স্বাস্থ্যকর নয়। অন্যের মুখে কোনও রকম সংক্রমণ থাকলে ব্রাশের মাধ্যমে তা আপনার মুখেও ছড়িয়ে পড়তেই পারে। তাই এই বিষয়টিও আপনাকে খেয়াল রাখতে হবে। তথ্যসূত্র: আনন্দবাজার পত্রিকা অনলাইন।
>>>>>>>>>>>>>>
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org