দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ দীর্ঘ এক বছরেরও বেশি সময় ধরে চলা যুদ্ধের পর অবশেষে যুদ্ধবিরতি চুক্তিতে রাজি হয়েছে লেবাননের শক্তিশালী সশস্ত্র গোষ্ঠী হিজবুল্লাহ এবং দখলদার ইসরায়েল।
আজ বুধবার (২৭ নভেম্বর) মধ্যরাতে এই যুদ্ধবিরতি চুক্তির বিষয়ে ঘোষণাও দিয়েছেন ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু। ইসরায়েলের একটি সংবাদমাধ্যমের বরাত দিয়ে বার্তা সংস্থা রয়টার্স এই কথা জানিয়েছে। জাতির উদ্দেশে এক ভাষণে চুক্তির পক্ষে যুক্তি তুলে ধরে নেতানিয়াহু বলেছেন, এর ফলশ্রুতিতে উত্তর ইসরায়েলের বাসিন্দারা তাদের বাড়িঘরে ফিরে যাবেন।
লেবাননে হামলার প্রতি ইঙ্গিত করে নেতানিয়াহু বলেছেন, হিজবুল্লাহকে ইসরায়েলি বাহিনীই পিছু হটিয়ে দিয়েছে। মূলত তারা কয়েক দশক আগের অবস্থায় চলে গেছে। ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেন যে, ‘হিজবুল্লাহ যদি চুক্তি লঙ্ঘনও করে, আমরা তাদের ওপর হামলা চালাবো। ইসরায়েল মধ্যপ্রাচ্যের চেহারা পাল্টে দিচ্ছে জানিয়ে দেশটির প্রধানমন্ত্রী বলেন, হিজবুল্লাহর সঙ্গে যুদ্ধবিরতি চুক্তির মানেই হলো ইরানের হুমকি মোকাবিলায় এখন বেশি জোর দেওয়া যাবে।
ইসরায়েলের মন্ত্রিসভায় লেবাননে যুদ্ধবিরতি চুক্তি অনুমোদন হওয়ার পরও এই বিষয়টি নিয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সময় গতকাল (মঙ্গলবার) বেলা আড়াইটায় বক্তব্য দেওয়ার কথা মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের। হোয়াইট হাউসের পক্ষ হতে এ কথা জানানো হয়। ইতিপূর্বে যুদ্ধবিরতি চুক্তির বিষয়ে ইতিবাচক ইঙ্গিতও দেন লেবাননের প্রধানমন্ত্রী নাজিব মিকাতি এবং হিজবুল্লাহ নেতা নাইম কাসেম।
উল্লেখ্য, গত বছরের ৭ অক্টোবর ফিলিস্তিনের গাজায় ইসরায়েলি আগ্রাসন শুরু হওয়ার পর থেকেই হামাস এবং ফিলিস্তিনের সমর্থনে ইসরায়েলের সঙ্গে সংঘাতে জড়িয়ে পড়ে হিজবুল্লাহ। এক বছরের বেশি সময় ধরে চলা এই সংঘাত সেপ্টেম্বরের মাঝামাঝি সময় তীব্র হয়ে ওঠে। ইসরায়েল লেবাননে স্থল অভিযান শুরু করে ও হিজবুল্লাহর কয়েকজন শীর্ষ নেতাকে হত্যাও করে। নিহত হন হিজবুল্লাহর প্রতিষ্ঠাতাদের একজন ও সংগঠনটির প্রধান হাসান নাসরুল্লাহ।
>>>>>>>>>>>>>>
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org