দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ বিজনেস কেইস প্রতিযোগিতার ক্ষেত্রে দেশের অগ্রণী প্ল্যাটফর্ম ‘ব্যাটেল অব মাইন্ডস’ -এর ২১তম সংস্করণের সমাপনী অনুষ্ঠান গত ২৮ নভেম্বর রাজধানীর র্যাডিসন ব্লু ওয়াটার গার্ডেনের গ্র্যান্ড বলরুমে অনুষ্ঠিত হয়েছে। এ প্রতিযোগিতার লক্ষ্য সক্ষমতার বিকাশ, সীমাবদ্ধতা অতিক্রম ও সমসাময়িক চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় মেধাবী ও সম্ভাবনাময় তরুণদের অনুপ্রাণিত করার মাধ্যমে তাদের পরবর্তী প্রজন্মের ব্যবসায়িক নেতৃত্ব হিসেবে প্রস্তুত করে তোলা।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. নিয়াজ আহমেদ খান। বক্তব্যে তিনি তরুণদের ক্ষমতায়নের রূপান্তরমূলক শক্তির পাশাপাশি অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি এবং সমাজে ইতিবাচক পরিবর্তন আনার ক্ষেত্রে তাদের অপার সম্ভাবনার ওপর গুরুত্বারোপ করেন। এছাড়াও, তিনি তরুণদের বাস্তব অভিজ্ঞতা প্রদান এবং তাদের উদ্ভাবনী ক্ষমতা ও নেতৃত্বকে উদ্বুদ্ধ করতে ভূমিকা রাখার জন্য ‘ব্যাটেল অব মাইন্ডস’-এর প্রশংসা করেন।
এই বছর, অংশগ্রহণকারীরা দুটি চ্যালেঞ্জের মধ্যে একটি বেছে নিতে পেরেছে – পণ্য বা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বিপ্লব, উভয়ই মানবকল্যানে অবদান রাখছে। প্রতিযোগিতার এবারের আসরে বিজয়ী হয় বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব প্রফেশনালসের (বিইউপি) দল পারডন আস, কামিং থ্রু। বিজয়ী দলের সদস্যরা হলেন: মো. নাহিয়ান হাসান, আদীবা রুকাইয়া হাসান ও রিদাহ তারান্নুম মেহমুদ। বিজয়ী দল অনন্য দক্ষতা ও সক্ষমতা প্রদর্শনের মাধ্যমে তাদের উদ্ভাবনী ধারণা উপস্থাপন করে অন্য চারটি ফাইনালিস্ট দলকে পেছনে ফেলে বিজয়ী হওয়ার স্বীকৃতি অর্জন করে। বিজয়ী দলের বিজনেস প্ল্যান ছিল কাঁঠালের স্বাদকে নতুন রূপে নিয়ে আসা জ্যাকো ন্যাচারাল জ্যাকফ্রুট চিপস। ক্লাসিক সেভরি, আচারি টুইস্ট, বিবিকিউ ডিলাইট ও গ্রিলড চিজ – সুস্বাদু এসব ফ্লেভারের স্বাস্থ্যকর সুপার- স্ন্যাকটিতে রয়েছে পুষ্টিগুণে ভরপুর উপাদান, সাথে দুর্দান্ত স্বাদ।
প্রতিযোগিতায় প্রথম রানার-আপ হয় ইসলামিক ইউনিভার্সিটি অব টেকনোলজির (আইইউটি) সামিহা মাসুদ, ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের মোহাম্মদ ফসিউল আবেদীন খান ও খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুয়েট) অর্পা সাহার গঠিত দল সিডসিঙ্ক। তাদের বিজনেস প্ল্যান ছিল ওয়েলনেস ড্রিংক লাইন ‘বাবল,’ যা নারীদের শরীরে হরমোনের ভারসাম্য বজায় এবং হরমোনের সাইকেল ঠিক রাখতে সহায়তা করার মাধ্যমে তাদের সুস্থতায় ভূমিকা রাখবে। এ ড্রিংকের তিনটি ভ্যারিয়েন্ট রয়েছে।
প্রত্যেক ভ্যারিয়েন্টে রয়েছে প্রাকৃতিক উপাদান ও কার্যকর ফর্মুলেশনের চমৎকার সমন্বয়। ‘বাবল’ নারীদের সুস্থতায় সহায়ক ভূমিকা পালন করবে।
দ্বিতীয় রানার আপ দল হয়েছে নিউরনস। এর সদস্যরা হলেন ইউনাইটেড ইন্টারন্যশনাল ইউনিভার্সিটির (ইউআইইউ) আবির মোহাম্মদ সাদ ও সাদিয়া আহমেদ এবং মিলিটারি ইনস্টিটিউট অব সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজির (এমআইএসটি) ফারহান ইশতিয়াক। তাদের আইডিয়া ছিল মস্তিষ্কের কার্যক্রম বোঝার মাধ্যমে অবচেতন মনে ভোক্তাদের আচরণ বিশ্লেষণে নিউরোমার্কেটিংয়ের ক্ষেত্রে ইইজি ও আই-ট্র্যাকিং প্রযুক্তি ব্যবহার করা। এর মাধ্যমে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান আরও কার্যকরী ও ফলপ্রসূ ক্যাম্পেইন ও কমিউনিকেশন প্ল্যান এবং পণ্যের ডিজাইন করতে পারবে।
ব্যাটেল অব মাইন্ডসের ২১তম সংস্করণে ৭০টিরও বেশি বিশ্ববিদ্যালয়ের ৩ হাজার ৭ শ’রও বেশি প্রতিযোগী অংশগ্রহণ করেন। বাংলাদেশ থেকে চ্যাম্পিয়ন দলটি বৈশ্বিক পর্বে ২৫টি দেশের বিজয়ী দলের সাথে প্রতিযোগিতা করবে। বৈশ্বিক পর্বের বিজয়ীরা তাদের উপস্থাপিত ধারণা বাস্তবায়নের জন্য সিড ফান্ড হিসেবে ৫০ হাজার ব্রিটিশ পাউন্ড পাবে।
ব্যাটেল অব মাইন্ডস প্রতিযোগিতা ২০০৪ সাল থেকে তরুণদের প্রতিভা বিকাশে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে আসছে। এ প্রতিযোগিতা তরুণদের উদ্ভাবনী ধারণা, অগ্রণী প্রযুক্তি ও দূরদর্শী সমাধানের মাধ্যমে পৃথিবীতে ইতিবাচক পরিবর্তন নিয়ে আসার সুযোগ প্রদান করছে। ব্যাটেল অব মাইন্ডসের প্রায় ২ হাজার সদস্যের একটি সমৃদ্ধ ও বিস্তৃত নেটওয়ার্ক রয়েছে। ধারাবাহিকভাবেই এর অ্যালামনাইরা তাদের কাজের জন্য খ্যাতি অর্জনের পাশাপাশি পেশাগত জায়গায় এবং স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক বিভিন্ন খাতে নেতৃত্ব দান করে অসামান্য ভূমিকা রেখে চলেছেন। খবর সংবাদ বিজ্ঞপ্তির।
>>>>>>>>>>>>>>
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org