দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ আপনার কী লো প্রেশার রয়েছে? সেই ক্ষেত্রে আপনি ভরসা রাখতে পারেন এই প্রবন্ধে উল্লেখিত খাবারগুলোর উপর। তাহলে সমস্যা থেকে দ্রুতই সেরে উঠতে পারবেন।
হাই ব্লাড প্রেশার নিয়ে বহু কথা শোনা যায়। সব সময় প্রচারের আলোয় থাকে এই অসুখটি। এই রোগের ঘাতপ্রতিঘাত নিয়েও সকলেই চিন্তিত থাকেন। তবে সেদিক থেকে দেখলে লো ব্লাড প্রেশার থেকে যায় একেবারেই প্রচারের অন্তরালেই। যে কারণে সমস্যা দিনকে দিন বাড়তে থাকে। সাধারণত রোগীর অসচেতনতার সুযোগ নিয়ে ধীরে ধীরে এই অসুখটি প্রভাব বিস্তার করে। আর তাই এই রোগ নিয়ে আপনাকে সাবধান হতে হবে। চেষ্টা করতে হবে এই সমস্যাকে কন্ট্রোলে রাখার জন্য।
কোনও মানুষের প্রেশার যদি ১০০/৭০ এমএম এইচজি (মিলিমিটার অব মার্কিউরি) এর কম থাকে, তাহলে ধরতে হবে তিনি লো ব্লাড প্রেশারে আক্রান্ত হয়েছেন। এই রোগে ভুক্তভোগীদের ডায়েটে বদল আনতে হবে। খেতে হবে কিছু উপকারী খাবারও। তেমনই কিছু খাবার নিয়ে আজ আলোচনা করা হলো।
কিশমিশ
এই ড্রাই ফ্রুটটি হলো এক পুষ্টির ভাণ্ডার। এতে জরুরি সব অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট রয়েছে যা প্রদাহ কমাতে সাহায্য করে। শুধু তা-ই নয়, এতে মজুত পটাশিয়ামের গুণে প্রেশারও কন্ট্রোলে আসে। অর্থাৎ লো ব্লাড প্রেশারের সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। তবে ডায়াবেটিস থাকলে এই ড্রাই ফ্রুট খাওয়া যাবে না। তাতে করে সুগার আরও বাড়তে পারে। বাদবাকি অন্যনা এই ড্রাই ফ্রুট খেতে পারেন। সবথেকে ভালো হয়, কিশমিশ পানিতে ভিজিয়ে খেলে।
বিটরুট
অত্যন্ত উপকারী একটি সবজি হলো এই বিটরুট। এতে রয়েছে একাধিক প্রয়োজনীয় ভিটামিন এবং খনিজ। এমনকি এতে নাইট্রিক অক্সাইড রয়েছে। এই উপাদান রক্তনালীকে রিল্যাক্স করতেও সাহায্য করে। যে কারণে রক্তচাপ স্বাভাবিক হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনাও তখন বাড়ে। তাই প্রতিদিনের ডায়েটে অবশ্যই বিটরুটকে জায়গা করে দিতে হবে। চাইলে এটির জুস করেও খেতে পারেন। তাতে সমস্যার সমাধান করে ফেলতে পারবেন।
ব্রাউন রাইস
শুধুমাত্র সাদা ভাত খেলে লো ব্লাড প্রেশারের সমস্যাকে আপনি কন্ট্রোলে আনতে পারবেন না। তার পরিবর্তে খাওয়া শুরু করে দিন ব্রাউন রাইস। এই খাবারটিতে রয়েছে ম্যাগনেশিয়াম। এই খনিজ শরীর ও স্বাস্থ্যের হাল ফেরাতেও সাহায্য করে। এমনকি রক্ত চাপকেও স্বাভাবিকের গণ্ডিতে আনতে সাহায্য করে। তাই নিয়মিত ব্রাউন রাইস খান।
আমন্ড
আপনি কী বাদাম খেতে ভালোবাসেন? তাহলে অন্যান্য সব বাদামকে বাদ দিয়ে এবার খাওয়া শুরু করে দিন আমন্ড। এতে রয়েছে অত্যন্ত উপকারী নানা ফ্যাট। সেইসঙ্গে এতে ম্যাগনেশিয়ামও রয়েছে যা লো ব্লাড প্রেশারের মতো সমস্যাকেও বাগে আনতে পারে। তাই চাইলেই প্রতিদিন ৫ থেকে ১০টি আমন্ড খেতেই পারেন। তাতে সুস্থ-সবল জীবন কাটানোর পথে আরও অনেকটা এগিয়ে যাবেন।
ডার্ক চকোলেট
চকোলেটের প্রতি প্রেম রয়েছে অনেকের। কারণ হলো, ডার্ক চকোলেট খেলে লো প্রেশারের রোগীরা সুস্থ থাকতে পারবেন। এছাড়াও এই খাবারটিতে রয়েছে অ্যান্টিঅক্সিডেন্টের ভাণ্ডার যা শরীর এবং স্বাস্থ্যের হাল ফেরানোর কাজেও একাই একশো। তাই সময় সুযোগ হলেই ডার্ক চকোলেট খেয়ে নিন। তবে খুব নিম্নমানের ডার্ক চকোলেট খাবেন না। তাতে উপকার তো পাবেনই না, উল্টো শরীরের হাল বিগড়ে যাওয়ার আশঙ্কাও থাকবে। তথ্যসূত্র: এই সময়।
>>>>>>>>>>>>>>
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org