দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ বাংলাদেশে সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোটের নেতা চিন্ময় কৃষ্ণ দাস গ্রেফতারের পর গত কয়েকদিন ধরে প্রতিবেশী দেশ ভারতে ডেপুটেশন জমা, মিছিল-সমাবেশ, কুশপুত্তলিকা দাহসহ বিক্ষোভের ঘটনা ঘটছে।
এরই রেশ ধরে সোমবার হঠাৎই আগরতলায় বাংলাদেশের সহকারী হাইকমিশনে হামলা, ভাঙচুর এবং পতাকা নামিয়ে ছিঁড়ে ফেলার ঘটনাও ঘটেছে।
ঘটনাস্থলের একটি ভিডিওতে দেখা যায়, বাংলাদেশের পতাকা নামিয়ে ফেলা হচ্ছে। এছাড়াও বাংলাদেশের পোড়া পতাকার ভিডিও ছড়িয়ে পড়েছে বিভিন্ন গণমাধ্যম এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। বাংলাদেশ সহকারী হাইকমিশনের কর্মকর্তারা বিবিসি বাংলাকে জানিয়েছেন যে, ভিডিওগুলো তারাও দেখেছেন এবং সেটি ঘটনাস্থলেরই।
এই ঘটনার পর সোমবার সন্ধ্যায় দুঃখ প্রকাশ করে বিবৃতি দিয়েছে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। বিবৃতিতে দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে যে, ভারত সরকারের পক্ষ থেকে বাংলাদেশের ডেপুটি এবং সহকারী হাইকমিশনগুলোতে নিরাপত্তা বাড়ানোর নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
হামলা এবং ভাঙচুরের খবর পেয়ে ত্রিপুরা পুলিশের শীর্ষ কর্মকর্তারা ঘটনাস্থলে গিয়ে বাংলাদেশ সহকারী হাইকমিশনের অফিসটি ঘুরে দেখেন ও সেখানকার কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথাও বলেন। তবে ভারতের আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা সেখানে উপস্থিত সাংবাদিকদের কাছে এই বিষয়ে কোনো মন্তব্যই করেননি।
আগরতলার সহকারী হাইকমিশনের কর্মকর্তারা বলেন, ঘটনাটি যখন ঘটে যায় তারপরই ভারত সরকারের এক ধরনের তৎপরতা তারা দেখতে পান।
হাইকমিশনের একজন কর্মকর্তা বলেন, তারা তাদের জায়গা থেকে আমাদের কাছে দুঃখ প্রকাশ করেছেন। আমাদের খোঁজ খবর নিয়েছেন। তারা আমাদের এই নিয়ে নিশ্চয়তা দিয়েছেন, পরবর্তীতে এমন আর কিছুই হবে না।
তিনি আরও বলেন, আমাদের নিরাপত্তাকে আরও বাড়ানো হবে বলে ভারতের পক্ষ হতে জানানো হয়েছে।
সোমবার সন্ধ্যায় ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে দুঃখ প্রকাশ করেছে। মন্ত্রণালয়ের এক্স হ্যান্ডলে বিবৃতিটি প্রকাশ করা হয়েছে। যেখানে লেখা হয়েছে যে, কোনো অবস্থাতেই কূটনৈতিক সম্পত্তি’কে লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত করা উচিত নয়।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতে আরও বলা হয়, আগরতলায় বাংলাদেশের সহকারী হাইকমিশনের ভবনে আজকের অনুপ্রবেশের ঘটনাটি গভীরভাবে দুঃখজনক। কোনো অবস্থাতেই কূটনৈতিক এবং কনস্যুলার সম্পত্তি লক্ষ্যবস্তু হওয়া উচিত নয়।
বাংলাদেশের হাইকমিশন এবং তাদের ডেপুটি/সহকারী হাইকমিশনগুলোর জন্য ভারত সরকার নিরাপত্তা বাড়ানোর ব্যবস্থা নিচ্ছে বলে বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়।
>>>>>>>>>>>>>>
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org