দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ সকালে ঘুম থেকে উঠেই মাটিতে পা রাখা মাত্রই তীব্র যন্ত্রণা শুরু হয়ে যায় গোড়ালিতে। হাঁটতে গেলেই টান ধরে পায়ে। অনেকক্ষণ বসে থাকার পর উঠতে গেলেও প্রচণ্ড যন্ত্রণা করে। এমন অবস্থায় কী করবেন? আজ জেনে নিন সেটি।
শীত এলে বাতের ব্যথা-বেদনা এমনিতেও বেড়ে যায়। বিশেষ করে যারা দীর্ঘক্ষণ দাঁড়িয়ে কিংবা বসে কাজ করেন, তাদের পায়ের পাতায় এবং গোড়ালিতে ব্যথা বাড়ে। সকালে ঘুম থেকে উঠেই মাটিতে পা রাখা মাত্রই তীব্র যন্ত্রণা শুরু হয়ে যায় গোড়ালিতে। হাঁটতে গেলেই টান ধরে পায়ে। অনেকক্ষণ বসে থাকার পর উঠতে গেলেও প্রচণ্ড যন্ত্রণা করে। এই সময় মনে হয় মাটিতে পা ফেলাই যাচ্ছে না।
পায়ের পাতায় প্লান্টার ফাসিয়া নামে একটি লিগামেন্টও থাকে। সেটি কোনওভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হলেই কিংবা তাতে টান ধরলেই তখন গোড়ালিতে ব্যথা করে। প্লান্টার ফাসিয়ায় প্রদাহ বাড়লে ব্যথার তীব্রতাও তখন বাড়ে। এই সমস্যাকে বলা হয় ‘প্লান্টার ফাসাইটিস’। একটানা বসে থাকলে কিংবা দাঁড়িয়ে থাকলে এমন সমস্যা হতেই পারে। ওজন বেশি হলেই হাঁটা কিংবা দৌডাংনোর সময় পায়ের পাতার প্লান্টার ফাসিয়ার উপর চাপও পড়ে। তখন ব্যথাও হতে পারে।
ব্যথা কমবে কীভাবে?
# সঠিক মাপের জুতো পরতে হবে। জুতোর মাপ যদি ঠিক না থাকে ও প্রায়ই হিল জুতো পরেন, তাহলে ব্যথা বাড়তেও পারে।
# ঠাণ্ডা-গরম সেঁক দিলেও অনেক সময় ব্যথা কমতে পারে। ১০ মিনিট গরম সেঁক এবং তার পরের ১০ মিনিট ঠাণ্ডা সেঁক দিয়ে দেখতে পারেন। ঠাণ্ডা সেঁক দেওয়ার সময় অবশ্যই বরফ কাপড়ে মুড়িয়ে নেবেন। সরাসরি ত্বকে কখনও বরফ লাগাবেন না।
# ঘুম থেকে উঠেই মাটিতে পা দেওয়ার পূর্বে অবশ্যই স্ট্রেচ করুন। তাতে অনেকটা আরাম পাবেন।
# দুই পায়ের মধ্যে সামান্য ব্যবধান রেখে দেওয়ালের কাছে সোজা হয়ে দাঁড়ান। আপনার দু’হাতই দেওয়ালে রাখুন। এবার পায়ের পাতার উপর ভর দিয়ে মাটি থেকে গোড়ালি তুলে ধরুন। কয়েক সেকেন্ড পর স্বাভাবিক অবস্থানে আবার ফিরে আসুন। ১০ হতে ১৫ বার এই ব্যায়ামটি করুন। এই ব্যায়াম নিয়মিত করলে ব্যথা অনেকটা কমেও যেতে পারে।
# গরম তেল মালিশ করলেও বেশ উপকার পাবেন। সারাদিনে একবার তেল মালিশ করতেই পারেন। এতে ব্যথা অনেকটা কমে যাবে।
# নারকেল তেল কিংবা অলিভ অয়েলের সঙ্গে ২ ফোঁটা ল্যাভেন্ডার তেল মিশিয়ে পায়ের পাতায় মালিশ করতে পারেন। কিংবা গরম পানিতে ২ ফোঁটা ল্যাভেন্ডার তেল মিশিয়ে তাতে আপনি পা ডুবিয়ে রাখতে পারেন। এতেও আরাম পেতে পারেন। তথ্যসূত্র: আনন্দবাজার পত্রিকা অনলাইন।
>>>>>>>>>>>>>>
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org