দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ সম্প্রতি ভারতের অভিনেত্রী দেবিনা বন্দ্যোপাধ্যায় পায়ের পাতায় বিশেষ এক ধরনের মালিশ করিয়েছেন সালোঁ হতে। যেখানে পায়ের মালিশ করা হয় গলানো গরম মোম দিয়ে!

পায়ের ব্যথা নিরাময়ে বা শীতে পায়ের খসখসে চামড়া পেলো করতে উষ্ণ তেল মালিশ করেন অনেকেই। সারা দিনের যতোসব ক্লান্তি দূর করতে, প্রদাহজনিত সমস্যা নিয়ন্ত্রণে রাখতে এই টোটকা দারুণ কাজের একটি টোটকা। তবে সম্প্রতি ভারতের অভিনেত্রী দেবিনা বন্দ্যোপাধ্যায় পায়ের পাতায় বিশেষ এক ধরনের মালিশ করিয়েছেন সালোঁ হতে, যেখানে পায়ের মালিশ করা হয় গলানো গরম মোম দিয়ে। কী উপকার হবে বিশেষ এই মালিশে?
‘হট ক্যান্ডেল মাসাজ’ প্রকৃতপক্ষে কী?
নির্দিষ্ট তাপমাত্রায় মোম গলিয়ে, তারমধ্যে পদযুগল বেশ কিছুক্ষণ ডুবিয়ে রাখতে হয়। তাতে পায়ের খসখসে ত্বক, ফাটা গোড়ালির সমস্যাও কমে। সুগন্ধি চিকিৎসার মতোই এটিকেও এক ধরনের চিকিৎসা বলা যেতেই পারে। চিকিৎসকরা বলেছেন, প্রদাহের কারণে পেশি, অস্থিসন্ধির ব্যথা কিংবা বেদনা নিয়ন্ত্রণে রাখতে, তা নমনীয় করতে ও রক্ত চলাচল উন্নত করতে এই চিকিৎসাপদ্ধতি শুরু হয় বহু আগেই।
ইতিহাস খুঁজলে দেখা যায়, ইউরোপ, মেক্সিকো, মধ্য আমেরিকার বহু জায়গাতে এই মোম চিকিৎসার রেওয়াজ রয়েছে। কোথাও কোথাও গলানো মোম ভর্তি পাত্রে হাত-পা ডুবিয়ে রেখে, আবার কোথাওবা ব্রাশ দিয়ে ত্বকের উপর মোমের প্রলেপ দিয়ে, কোনও কোনও প্রান্তে শরীরের নির্দিষ্ট অংশে উপর হতে গলানো মোম ঢেলে, তার উপর তোয়ালে জড়িয়ে- নানাভাবে এই চিকিৎসা করা হতো। আর্থ্রাইটিস, টেনডোনিটিস, রিউম্যাটিক ব্যথা-বেদনায় এই ‘ক্যান্ডেল থেরাপি’ বেশ কাজের একটি থ্যারাপি। ত্বকের আর্দ্রতা ধরে রাখতে রূপচর্চার জগতে এই থেরাপির প্রচলনও রয়েছে।
এই থেরাপি করার আগে কী কী সতর্কতা নিতে হবে?
# ‘ন্যাশনাল ওশেনিক অ্যান্ড অ্যাটমোসফেরিক অ্যাডমিনিস্ট্রেশন’ বলছে যে, মোম যেহেতু দাহ্য পদার্থ- তাই এই থেরাপি করার সময় বিশেষভাবে সতর্ক থাকা দরকার।
# মোম গলানোর সময় বিষাক্ত গ্যাস নির্গত হতে পারে। তাই জ্বলন্ত অবস্থায় কখনও মোম ব্যবহার করা উচিত নয়। ফুটন্ত পানির পাত্রের মধ্যে মোমের পাত্র বসিয়ে ‘ডবল বয়েল’ পদ্ধতিতে তা গলিয়ে নেওয়াই ভালো।
# গরম মোম ত্বকের ক্ষতিও করতে পারে। অতিরিক্ত গরম মোম লেগে ত্বক পুড়ে যেতে পারে। তাই যারা মোম থেরাপির বিষয়ে দক্ষ, তাদের হাতেই থেরাপি করানো দরকার।
# আবার যাদের ত্বক অতিরিক্ত স্পর্শকাতর, তারা কখনও এই থেরাপি করাবেন না। একান্ত যদি করাতেই হয় তাহলে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। থেরাপি করার পূর্বে অবশ্যই ‘প্যাচ টেস্ট’ করে নিতে হবে।
এই থেরাপিটি কারা করাতে পারেন?
‘ওয়াক্স থেরাপি’ এমনিতে নিরাপদ একটি থেরাপি। বিশেষ করে যাদের হাত-পায়ের ত্বক অতিরিক্ত শুষ্ক, যাদের ফাটা গোড়ালির সমস্যা রয়েছে, তাদের জন্য এই থেরাপি বিশেষভাবে কার্যকর। তবে এগ্জ়িমা, সোরাইসিস কিংবা ডায়াবেটিক নিউরোপ্যাথির মতো ত্বকের গুরুতর কোনও সমস্যা থাকলে এই থেরাপি করা যাবে না। তথ্যসূত্র: আনন্দবাজার পত্রিকা অনলাইন।
>>>>>>>>>>>>>>
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org