দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ পুষ্টিবিদরা বলেছেন, নতুন চুল গজানো ও বাড়বৃদ্ধির জন্য চুলের ফলিকলগুলোকেই সক্রিয় রাখতে হয়। তার জন্য প্রতিনিয়ত ফলিকলে প্রোটিন, ভিটামিন ও খনিজের জোগান দিয়ে যেতে হয়।

কী কী কারণে চুল পড়ে, সেটি হয়তো অনেকেই জানেন। তবে শরীরে কোনও রকম ভিটামিন কিংবা খনিজের অভাব হচ্ছে কি না, তা সেই চুলের মান দেখে আন্দাজ করা যেতে পারে, সেটি কিন্তু অনেকেই জানেন না। বিষয়টি আসলে কেমন?
পুষ্টিবিদরা বলেছেন, নতুন চুল গজানো ও বাড়বৃদ্ধির জন্য চুলের ফলিকলগুেরোকে সক্রিয় রাখতে হয়। সে জন্য প্রতিনিয়ত ফলিকলে প্রোটিন, ভিটামিন ও খনিজের জোগান দিয়ে যেতে হয়। এইগুলোর অভাব হলে তার প্রভাব পড়ে চুলে। কারও কারও আবার মুঠো মুঠো চুল উঠতে শুরু করে, কারও আবার চুল পাতলাও হয়ে যায়। চুলের মান খারাপ হয়ে যাওয়ার নেপথ্যেও রয়েছে কোনও না কোনও খনিজের অভাবের ভূমিকা। চুলের কোন লক্ষণগুলো রক্তে কী কী অভাবের ইঙ্গিত দেয়?
প্রোটিনের ঘাটতি
রুক্ষ চুল বা মাঝখান থেকে চুল ভেঙে যাওয়ার লক্ষণও হতে পারে শরীরে প্রোটিনের ঘাটতি। চুলের স্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ উপাদানই হলো কেরাটিন। প্রোটিনে সমৃদ্ধ খাবারের মধ্যে থাকে অ্যামাইনো অ্যাসিড। এই অ্যামাইনো অ্যাসিডের সাহায্যে কেরাটিন সিন্থেসিস প্রক্রিয়াটি সম্পন্ন হয়। তাই চুল ও মাথার ত্বকের স্বাস্থ্য ভালো রাখতে পুষ্টিবিদরা ডায়েটে প্রতিদিন প্রাণিজ প্রোটিন রাখতে বলেন। সেইসঙ্গে দুধ, ডাল, দানাশস্য, বাদাম বা বীজ খেলেও প্রোটিনের ঘাটতি পূরণ করা সম্ভব।
আয়রণের ঘাটতি
দামি, ঘরোয়া, আয়ুর্বেদিক টোটকা- কোনও কিছুতেই চুল ঝরার মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করাই যাচ্ছে না। চিকিৎসা বিজ্ঞানের পরিভাষায় এই ধরনের সমস্যাকে বলা হয়ে থাকে ‘টেলোজেন এফ্লুভিয়াম’। চুল পড়ার নানাবিধ কারণও থাকতে পারে। যারমধ্যে একটি হতে পারে রক্তে আয়রণের ঘাটতি। মাথার ত্বক, চুলের ফলিকলে অক্সিজেন পৌঁছে দেওয়ার মতো গুরুত্বপূর্ণ কাজও করে এই আয়রণ। অর্থাৎ এই খনিজের ঘাটতি হলে চুল পড়ার পরিমাণও বাড়বে। তাই চিকিৎসকরা ডায়েটে বেশি করে শাকসব্জি, ভিটামিন সি-সমৃদ্ধ খাবার খাওয়ার পরামর্শও দেন।
জ়িঙ্কের ঘাটতি
মাথার ত্বকের সেবাম ক্ষরণ- পিএইচের সমতা বজায় রাখতেও সাহায্য করে এই জ়িঙ্ক। সেইসঙ্গে ফলিকল মজবুত করতেও সাহায্য করে থাকে এই খনিজটি। সুতরাং মাথার ত্বক যদি খুব শুষ্ক হয়ে গিয়েই থাকে, তাহলে রক্তে জিঙ্কের মাত্রা পরীক্ষা করে দেখা যেতেই পারে। কুমড়া বীজ, বাদাম, সয়াবিন, কড়াইশুঁটি, ভুট্টা, বেদানা, সামুদ্রিক মাছের মতো খাবারে জ়িঙ্কের পরিমাণও বেশি। তাই ডায়েটে এই ধরনের খাবার ঘুরিয়ে-ফিরিয়ে রাখা যেতেই পারে।
বায়োটিনের ঘাটতি
চুল পড়ছেই, সেইসঙ্গে চুল পাতলাও হতে শুরু করেছে। চিকিৎসকরা বলেছেন, চুল পাতলা হয়ে যাওয়া, ইংরেজিতে যাকে বলে ‘হেয়ার থিনিং’, তার নেপথ্যে বায়োটিন নামক খনিজের ভূমিকাও থাকতে পারে। ডিম, কাঠবাদাম, মিষ্টি আলু ও কলার মতো খাবার নিয়মিত খেলে শরীরে বায়োটিনের ঘাটতি পূরণ হয়ে যায়। তথ্যসূত্র: আনন্দবাজার পত্রিকা অনলাইন।
>>>>>>>>>>>>>>
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org