দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ হরমোনের ক্ষরণ বেড়ে যাওয়া মানেই ‘হাইপারথাইরয়েডিজ়ম’ ও হরমোন ক্ষরণের পরিমাণ কমে গেলে তাকে ‘হাইপোথাইরয়েডিজ়ম’ বলা হয়ে থাকে। এই পরিস্থিতি সামাল দিতে ওষুধের পাশাপাশি খাবারেরও বিশেষ ভূমিকা রয়েছে।
অল্প পরিশ্রম করেই হয়তো আপনি হাঁপিয়ে উঠছেন, ওজনও বেড়ে যাচ্ছে, চুলও ঝরে যাচ্ছে, আবার মুখের জেল্লা হারিয়ে যাচ্ছে- থাইরয়েডের সমস্যা বেড়ে গেলে এমন উপসর্গ দেখা যায় রোগীর শরীরে। থাইরয়েড গ্রন্থি থেকে ক্ষরিত হরমোনের হেরফেরে এই রোগ বাসা বাঁধে শরীরে।
থাইরয়েড দু’ধরনের হয়ে থাকে। হরমোনের ক্ষরণ বেড়ে যাওয়াকে বলা হয়ে থাকে ‘হাইপারথাইরয়েডিজ়ম’ ও হরমোন ক্ষরণের পরিমাণ কমে গেলে তাকে ‘হাইপোথাইরয়েডিজ়ম’ বলা হয়ে থাকে। এই পরিস্থিতি সামাল দিতে ওষুধের পাশাপাশি খাবারেরও বিশেষ ভূমিকা রয়েছে। ডায়াবেটিস কিংবা হাইপারটেনশন থাকলে কী কী খাওয়া যায় ও কোনগুলো বাদ দিতে হয়, তা নিয়ে সাধারণ মানুষ যতোটা সচেতন, থাইরয়েডের ক্ষেত্রে তেমনটি দেখা যায় না। তাই নিয়ম করে ওষুধ খাওয়ার পরও অনেক সময় সমস্যা থেকেই যায়।
এই বিষয়ে পুষ্টিবিদরা বলেছেন, থাইরয়েড বেড়ে গেলে সয়াজাত খাবার, যেমন টোফু পনির, চিজ় ডায়েট হতে অবশ্যই বাদ দিতে হবে। বাঁধাকপি, ফুলকপি, ব্রকোলি, ছোলা জাতীয় খাবার থাইরয়েড আরও বাড়িয়ে দেয়। আবার মুলা, রাঙালু, চিনেবাদামও খাওয়া যাবে না।
তাহলে কী কী খেলে বিপদ বাড়বে?
সয়াজাত খাবার
বেশ কিছু সমীক্ষায় দেখা গেছে যে, সয়াবিন বা সয়াজাত খাবার খেলে থাইরয়েডের ওষুধ ঠিক মতো কাজ নাও করতে পারে। তাই থাইরয়েড থাকলে সয়াবিন, সয়ার দুধ, টোফুর মতো খাবার মেপে খেতে হবে।
বাঁধাকপি, ফুলকপি ও ব্রকলি
যে কোনও ধরনের কপি থেকে থাইরয়েডের সমস্যা আরও বাড়তে পারে। শীতকালে এই সব্জিগুলো বেশি খাওয়া হয়। তবে থাইরয়েড থাকলে দিনে সর্বোচ্চ কী পরিমাণ কপি খাওয়া যায়, তা পুষ্টিবিদের কাছ থেকেই জেনে নিতে হবে।
প্যাকেটজাত খাবার
প্যাকেটজাত কিংবা প্রক্রিয়াজাত খাবারে বাড়তি লবণ, চিনি ও অস্বাস্থ্যকর ফ্যাট থাকবে। তাই নিয়মিত এই ধরনের খাবার খাওয়া এড়িয়ে যাওয়ায় ভালো। তা না হলে শরীরে অন্যান্য সমস্যার পাশাপাশি থাইরয়েডের সমস্যাও বৃদ্ধি পাবে।
কফি
অতিরিক্ত ক্যাফিন শরীরের নানা রকম ক্ষতিও করে। থাইরয়েড থাকলে অত্যাধিক ক্যাফিন এড়িয়ে যেতে হবে। তবে যারা একান্তই কফি ছাড়া থাকতে পারেন না, তারা এই বিষয়ে অবশ্যই পুষ্টিবিদের পরামর্শ গ্রহণ করতে পারেন।
কী কী খাবেন
প্রতিদিন নিয়ম করে ইয়োগার্ট খেতে পরেন। আরও খেতে পারেন সহজলভ্য টক দই। সকালে নাস্তার সঙ্গে নানা ধরনের বীজ খেতে পারেন। পাউরুটিই হোক কিংবা রুটিই হোক তারমধ্যে দানাশস্য থাকলেও এই ক্ষেত্রে উপকার পাবেন। স্বাস্থ্যকর ফ্যাট, ওমেগা-৩, সেলেনিয়াম রয়েছে, এমন খাবার বেশি করে খেতেই পারেন। তথ্যসূত্র: আনন্দবাজার পত্রিকা অনলাইন।
>>>>>>>>>>>>>>
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org